দাওয়াত খেয়ে ফেরার পথে সড়কে প্রাণ হারাল দুই বন্ধু

সিএনজি টেক্সিকে ট্রলির ধাক্কা, নিহত মানিক ছিলেন চার বোনের একমাত্র ভাই

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ৪ জুন, ২০২৩ at ৬:০০ পূর্বাহ্ণ

রাতে আত্মীয়ের বাসায় দাওয়াত খেয়ে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় ঝরে গেল দুটি তরতাজা প্রাণ। দুজনই ২০/২২ বছরের টগবগে যুবক এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধু। এদের একজন মো. সজিব আলম মানিক এবং অপরজন মো. সুমন। শুক্রবার মধ্যরাতে নগরীর হালিশহর আর্টিলারি টুল রোড এলাকায় তাদের বহনকারী সিএনজি অটোরিক্সাকে একটি ট্রলি ধাক্কা দিলে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় মানিক ও সুমনের মৃত্যু ছাড়াও সিএনজি অটোরিক্সায় থাকা আরো তিনজন আহত হন। আহতরা হলেন জাহাঙ্গীর আলম, আবিদ ও সাবিদ। আহত জাহাঙ্গীর আলম বেসরকারি একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকি দুজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন।

নিহত সজিব আলম মানিক দক্ষিণ পতেঙ্গা নাজির পাড়ার মৃত বদিউল আলমের ছেলে। তারা চার বোন এক ভাই। সবার ছোট মানিক। বোনদের তিনজনেরই বিয়ে হয়ে গেছে। মা ও এক বোনসহ নিজেদের বাড়িতে থাকতেন মানিক। পড়তেন চৌমুহনী এলাকার একটি বেসরকারি পলিটেকনিকে। আর সুমন ছিলেন মানিকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সুমনের বাসা পূর্ব কাটগড়ের মাইজপাড়া এলাকায়। তারা একই সাথে এসএসসি পাস করেন।

মানিকের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সাগরিকা স্টেডিয়ামের পার্শ্ববর্তী এলাকায় মানিকের এক মামাতো বোনের (মামা জাহাঙ্গীর আলমের মেয়ের) বাসায় শুক্রবার দাওয়াত ছিল। অপর এক মামাতো বোনের স্বামী কাতার থেকে দেশে ফেরায় এই দাওয়াতের আয়োজন ছিল। শুক্রবার রাতে এই দাওয়াতে প্রায় ২০/২৫ জন যান। দাওয়াত খাওয়া শেষে একটি মাইক্রোযোগে মহিলাসহ অন্যরা চলে আসেন। আর মামা জাহাঙ্গীর আলম, দুই মামাতো ভাই ও বন্ধু সুমনকে নিয়ে সিএনজি অটোরিক্সায় রওয়ানা দেন মানিক। সুমন ও এক মামাতো ভাই সিএনজির সামনে বসেন। আর মামা ও অপর এক মামাতো ভাইকে নিয়ে সিএনজির ভিতরে বসেন মানিক। হালিশহর আর্টিলারি টুল রোড এলাকায় আসলে একটি ট্রলির পেছনের অংশ তাদের বহনকারী সিএনজিকে ধাক্কা দেয়। এতে সিএনজি অটোরিক্সাটি উল্টে যায়। এতে মানিক ও সুমন গুরুতর আহত হন। বাকিরাও আহত হন।

হাসপাতালে নিয়ে গেলে মানিক ও সুমনকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। জাহাঙ্গীর আলমকে বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাকি দুজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরেছেন বলে জানিয়েছেন নিহত মানিকের চাচাত ভাই মো. নাসির উদ্দিন।

শোকার্ত কন্ঠে নাসির উদ্দিন বলেন, চাচার পরিবারে চারটি মেয়ে থাকলেও ছেলে ছিল মানিক একজন। প্রায় সাত বছর আগে মানিকের বাবা মারা যায়। এরপর একমাত্র ছেলে মানিক ও মেয়েদের নিয়ে মানিকের মা থাকতেন। এখন একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে তিনি পাগল প্রায়। এ শোক সইবার মতো নয়।

এদিকে, দুর্ঘটনার বিষয়ে নিশ্চিত হতে হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) মোবাইলে একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেন নি। ফলে এ ঘটনায় পুলিশের বক্তব্য পাওয়া যায়নি। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই নুরুল আলম আশেকও এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেন নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাবা-মার কবরের পাশে শেষ শয্যায় আফছারুল আমীন
পরবর্তী নিবন্ধআমেরিকায় না গেলে কিচ্ছু আসে যায় না : শেখ হাসিনা