ড. মইনুল ইসলামের কলাম

| বৃহস্পতিবার , ১৮ আগস্ট, ২০২২ at ৮:০৮ পূর্বাহ্ণ

সিটি কর্পোরেশনের গৃহকর পুনর্নির্ধারণের জন্য নতুন আইন প্রণয়ন অবিলম্বে প্রয়োজন

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র জনাব রেজাউল করিম চৌধুরী সিটি কর্পোরেশনের গৃহকর বাড়ানোর জন্য ১৯৮৬ সালের ‘দি সিটি কর্পোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস’ অধ্যাদেশের ২১ ও ২২ ধারার বিধি মোতাবেক বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসরণের মারাত্মক ভুল সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করেছেন। ২০২১ সালে আমি তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলাম যে ভূতপূর্ব মেয়র জনাব আ জ ম নাছির ২০১৬ সালে একই অধ্যাদেশের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণ করতে গিয়ে তাঁর জনপ্রিয়তা হারিয়ে চরম বিপদে পড়েছিলেন। ঐ ভুল অধ্যাদেশের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণ করায় বর্ধিত গৃহকর বিদ্যমান করের তুলনায় ছয়গুণ থেকে দশগুণ বেড়ে যাওয়ায় ঐ সময় ব্যাপক আন্দোলন সৃষ্টি হয়েছিল। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রয়াত জনপ্রিয় মেয়র জনাব এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীও আন্দোলনে শরীক হয়েছিলেন। এর কিছুদিনের মধ্যে একই ভুল অধ্যাদেশ অনুসরণ করতে গিয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের তদানীন্তন মেয়র জনাব সাঈদ খোকনকেও ব্যাপক আন্দোলন মোকাবেলা করতে হয়েছিল। ঢাকা ও চট্টগ্রামের আন্দোলনের তীব্রতায় তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পুরো ব্যাপারটা স্থগিত হয়ে গিয়েছিল। দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে যে জনাব মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেওয়া সত্ত্বেও জনাব রেজাউল করিম চৌধুরী ভুল অধ্যাদেশটি সংশোধনের উদ্যোগ নেয়ার পরিবর্তে আবারো ঐ অধ্যাদেশটি অনুসরণ করে গৃহকর বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। সন্দেহ করার কারণ রয়েছে যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ইংগিতেই এই পদক্ষেপটি আবার গৃহীত হয়েছে। চট্টগ্রামে পদক্ষেপটি সফল হলে ক্রমান্বয়ে অন্যান্য সিটি কর্পোরেশনেও হয়তো অধ্যাদেশটি প্রয়োগ করা হবে! ইতোমধ্যেই চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের করদাতাদের কাছে নূতনভাবে নির্ধারিত গৃহকরের চাহিদাপত্র পৌঁছে গেছে। জনাব নাছিরের মত পত্র-পত্রিকায় মেয়র মহোদয় মন্তব্য করে চলেছেন যে সংক্ষুব্ধ করদাতা সিটি কর্পোরেশনের কাছে আপিল করলে গৃহকর কমিয়ে দেওয়া হবে। এই পদক্ষেপের মাধ্যমে ঘুষ-দুর্নীতির ফ্লাডগেট যে খুলে দেওয়া হচ্ছে সেটা কি তিনি বুঝতে পারছেন না? অযৌক্তিক ভাবে গৃহকর বাড়িয়ে দিয়ে আপিলের মাধ্যমে তা কমিয়ে দিলে শুধু দুর্নীতিই বাড়বে। সরকারকেও উপলব্ধি করতে হবে যে বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণ মারাত্মক ভুল পদ্ধতি। গৃহকর যেহেতু সম্পত্তি কর (প্রোপার্টি ট্যাক্স) তাই সারা বিশ্বের সিটি গভর্ণমেন্টগুলো সম্পত্তির লোকেশন, স্থাপনার মান ও ধরণ এবং আয়তনের ভিত্তিতে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ করে থাকে। করদাতার বাড়িভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে যেহেতু এনবিআর কর্তৃক আয়কর নির্ধারিত হয় তাই আবার হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণেও যদি বাড়িভাড়ার আয়কেই নির্ধারক বিবেচনা করা হয় তাহলে ‘ডবল ট্যাক্সেশন’ সমস্যার উদ্ভব হবে, যা করনীতির চরম লঙ্ঘন বিধায় বাতিলযোগ্য। বিশ্বের সকল দেশে এই ‘ডবল ট্যাক্সেশন’ পরিহারযোগ্য করনীতি (principle of taxation) হিসেবে বিবেচিত হয়। ১৯৮৬ সালের যে অর্ডিন্যান্সের বরাত দিয়ে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন দশ মাসের বাড়ীভাড়ার ১৭ শতাংশ ভিত্তিতে চট্টগ্রাম নগরীতে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণের উদ্যোগ নিয়েছে সেটা পুরোটাই এই ‘ভুল করনীতির’ ওপর প্রতিষ্ঠিত। কারণ, কোন ব্যক্তির প্রাপ্ত বাড়ীভাড়া তাঁর অর্জিত আয়। ঐ অর্জিত আয়ের ওপর যেহেতু সরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে নির্ধারিত নিয়মে নানা হারে ব্যক্তিগত আয়কর আদায় করে থাকে তাই চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মত একটি ‘স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান’ আবার ঐ বাড়ীভাড়ার ভিত্তিতে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করলে সেটা ‘ডবল ট্যাক্সেশন অব ইনকাম’ এর মৌলিক ভ্রান্তি হিসেবে বিবেচিত হবে।
১৩ অক্টোবর ২০১৭ তারিখের দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকার লীড নিউজ হিসেবে যে চাঞ্চল্যকর খবরটা প্রকাশিত হয়েছিল তাহলো, দেশের ১১টি সিটি কর্পোরেশনে মোট ৬ ধরনের গৃহকরের হার বলবৎ রয়েছে, যেখানে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে বার্ষিক সর্বনিম্ন ১২ শতাংশ, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনেও ১২ শতাংশ, খুলনা সিটি কর্পোরেশনে ১৬ শতাংশ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে ১৭ শতাংশ, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনেও ১৭ শতাংশ, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনে ১৯ শতাংশ, সিলেট সিটি কর্পোরেশনে ২০ শতাংশ, রংপুর সিটি কর্পোরেশনেও ২০ শতাংশ এবং রাজশাহী ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে ২৭ শতাংশ হারে গৃহকর আদায় করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। কিন্তু, এই ছয় রকমের গৃহকরের হারের ফলে রাজশাহী ও বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের করদাতারা অন্য নয় নগরীর করদাতাদের চাইতে বেশি পরিমাণ গৃহকর দিচ্ছেন বলে ধারণা করলে ভুল হবে। কারণ, এই ১১টি সিটি কর্পোরেশনে বাড়ীর ভ্যালুয়েশনে কোন ইউনিফর্ম পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় না। বাংলাদেশের ১১টি সিটি কর্পোরেশনের গৃহকর নির্ধারণ ও আদায়ের পদ্ধতিগুলোতে চরম নৈরাজ্য বিরাজ করছে। অতএব, অবিলম্বে দেশের সকল সিটি কর্পোরেশনের গৃহকর নির্ধারণ পদ্ধতিকে ইউনিফর্ম করার জন্যে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিশন (বা কমিটি) গঠন করে কমিশনের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় কর্তৃক অবিলম্বে সংসদে একটি আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ এখন ফরজ হয়ে গেছে। কারণ, ১৯৮৬ সালের ‘দি সিটি কর্পোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস্‌’ অনুসরণে এগারোটি সিটি কর্পোরেশনের যেখানেই গৃহকর নির্ধারণের উদ্যোগ নেয়া হবে সেখানেই করদাতাদের তোপের মুখে পড়তে হবে কর্তৃপক্ষকে।
বাংলাদেশের বারোটি সিটি কর্পোরেশনের কোনটিতেই গৃহকরের হার নির্ধারণের ভিত্তি হিসেবে বাড়ীভাড়ার আয়কে এখনো ব্যবহার করা হয় না। অথচ, ১৯৮৬ সালের ’দি সিটি কর্পোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস’ অধ্যাদেশটি জারি করা হয়েছিল দেশের তদানীন্তন চারটি সিটি কর্পোরেশন ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের জন্যে। অধ্যাদেশ জারির ৩৬ বছর পার হয়ে গেলেও দেশের রাজধানী ঢাকাসহ কোন নগরেই বাড়ীভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণের ব্যবস্থা আজো বাস্তবায়িত হয়নি। দেখা যাচ্ছে, খোদ ঢাকা সিটি কর্পোরেশনে বাড়ীর মেঝের আয়তন বর্গফুটের ভিত্তিতে হিসাব করে প্রতি বর্গফুট চার টাকা থেকে শুরু করে ষোল টাকা ধরে সম্পত্তির ভ্যালুয়েশন নির্ধারণ করে ঐ ভ্যালুয়েশনের ওপর ১২ শতাংশ হারে গৃহকর নির্ধারণের নিয়ম অনুসরণ করা হয়েছে। ১৯৮৬ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনে তিনবার গৃহকর পুনর্মূল্যায়ন করা হয়েছে, প্রতিবারই বাড়ির মেঝের আয়তন বর্গফুটের ভিত্তিতে ভ্যালুয়েশন করে গৃহকর বর্ধিত করা হয়েছে। প্রতিবারই নব-নির্ধারিত গৃহকর পুরাতন গৃহকরের চাইতে কয়েকগুণ বেশি নির্ধারিত হলেও এগুলো নিয়ে ঐ ২৯ বছরে ব্যাপক প্রতিবাদ-প্রতিরোধ আন্দোলন পরিদৃষ্ট হয়নি, কারণ ঐ বর্ধিত গৃহকরের পরিমাণ কোনবারই করদাতাদের কাছে অস্বাভাবিক ও অসহনীয় বিবেচিত হয়নি। কিন্তু, ২০১৬ সালে জনাব নাছির ১৯৮৬ সালের ঐ অধ্যাদেশ অনুসারে বাংলাদেশের ১১টি সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে প্রথম সিটি কর্পোরেশন হিসেবে বাড়ীভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে গৃহকর পুনর্মূল্যায়ন শুরু করে দেন। ঐ সময় থেকে সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বাড়ীভাড়ার জরিপ চালাতে গিয়ে অসংখ্য জোর-জবরদস্তির ঘটনা ঘটিয়েছেন, ঘুষ-বাণিজ্যের মাধ্যমে মনগড়া ভ্যালুয়েশন নির্ধারণ করেছেন, কাউকে অন্যায় সুবিধা দিয়েছেন, কাউকে আবার গলাকাটা ভাড়া দেখিয়ে শাস্তি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। তারপর যখন নূতন হারে গৃহকর আদায়ের তোড়জোর শুরু হয়েছে তখন করদাতাদের ধূমায়িত ব্যাপক ক্ষোভ উত্তপ্ত বিক্ষোভ ও আন্দোলনে রূপান্তরিত হয়ে গিয়েছিল।
অথচ, ঐ প্রাথমিক পর্যায়েই ২০১৬ সালের ২১ অক্টোবর তারিখে দৈনিক আজাদীতে প্রকাশিত আমার কলামে আমি জনাব নাছিরকে উদ্দেশ করে জানিয়েছিলাম যে বিশ্বের কোথাও হোল্ডিং ট্যাক্স বাড়ীভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয় না। কারণ, হোল্ডিং ট্যাক্স প্রকৃতপক্ষে যেহেতু সম্পত্তি কর বা প্রোপার্টি ট্যাক্স তাই বিশ্বের সকল সিটি কর্পোরেশনে প্রোপার্টি ট্যাক্সের একই নিয়মে এই কর আদায় করা হয়। নিয়মটি হলো: সারা বিশ্বে সম্পত্তি কর বা প্রোপার্টি ট্যাক্স আরোপ করা হয় সম্পত্তির ভ্যালুয়েশনের ভিত্তিতে। আর, সম্পত্তির ভ্যালুয়েশন করা হয় ঐ সম্পত্তির অবস্থান ও আয়তনের (বর্গফুট বা বর্গমিটার) ওপর ভিত্তি করে। নগরীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে হোল্ডিং ট্যাক্সের হার প্রতি বর্গফুটে সবচেয়ে বেশি হবে, এর পরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে হোল্ডিং ট্যাক্সের হার প্রতি বর্গফুটে ক্রমেই কম নির্ধারণ করা হবে। এভাবে নগরীর কেন্দ্রে যে হারে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারিত হবে তা ক্রমশ কমতে কমতে শহরতলীগুলোতে হোল্ডিং ট্যাক্সের হার সর্বনিম্নে চলে আসবে। বাড়ীর গুণগত মানের ভিত্তিতেও ভ্যালুয়েশন বেড়ে যাবে বা কমে যাবে। যেমন, মার্বেল পাথর বা টাইলসের মেঝে হলে প্রতি বর্গফুটে যে ভ্যালুয়েশন হবে মোজাইক মেঝে হলে তার চাইতে কম ভ্যালুয়েশন হবে। শুধু সিমেন্টের মেঝে হলে ভ্যালুয়েশন আরো কমে যাবে। টিনের ছাউনী পাকাঘর হলে ভ্যালুয়েশন একবারেই কমে যাবে। বেড়ার ঘর হলে হয়তো কোন গৃহকরই ধার্য হবে না। জনাব নাছির কোনভাবেই সত্যটার মুখোমুখি হলেন না যে বাড়ীভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণ করলে ‘ডবল ট্যাক্সেশন অব ইনকাম’ হয়ে যাবে, যেটা বিশ্বের কোথাও করা হয় না। এই ব্যাপারটা নিয়ে জেদাজেদি করতে গিয়ে তাঁর জনপ্রিয়তায় ধস নেমেছিল বলা চলে। ঐ সময় আমি নিজের উদ্যোগে ভারতের কোলকাতা নগরী থেকে ওখানকার গৃহকর নির্ধারণের পদ্ধতি সম্পর্কে খবরাখবর সংগ্রহ করে এনেছিলাম। কোলকাতা সিটি কর্পোরেশনেও সম্পত্তির অবস্থান, বাড়ীর মেঝের আয়তন, বাড়ীর গুণগত মান ইত্যাদি বিবেচনা করে হোল্ডিং ট্যাক্স নির্ধারণ করা হয়। ভারতের সকল সিটি কর্পোরেশনে একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়।
মেয়র জনাব রেজাউল করিম চৌধুরী নিজের উদ্যোগে কোলকাতা, দিল্লী এবং মুম্বা্‌ইয়ের মত সিটি কর্পোরেশনের গৃহকর পদ্ধতি সম্পর্কে খবরাখবর সংগ্রহ করে এ-ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারেন। এরপর তাঁর দায়িত্ব হবে ১৯৮৬ সালের ‘দি সিটি কর্পোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস’ সংশোধনের জন্যে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নির্বাচিত পার্লামেন্টের আইন প্রণয়ন ছাড়া কোন স্বৈরাচারী সরকারের খামখেয়ালির ফসল একটি ভুল অধ্যাদেশের ভিত্তিতে সিটি কর্পোরেশনগুলোর গৃহকর আদায়ের ‘তোগলকী জবরদস্তি’ সমর্থনযোগ্য হতে পারে না। স্বৈরাচারী এরশাদ সরকারের কোন আমলার বা মন্ত্রীর উর্বর মস্তিষ্ক থেকে বাড়ীভাড়ার আয়ের ভিত্তিতে গৃহকর নির্ধারণের যে ধারণা বেরিয়ে এসেছে সেটাকে অপরিবর্তনীয় বিবেচনা করা ক্ষমতাসীন মহাজোট সরকারের জন্যেও বড়সড় ভুল হয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ ভারত, দেশটি আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী। ওখানকার সব সিটি কর্পোরেশনে যে নিয়মে হোল্ডিং ট্যাক্স আদায় করা হয় আমাদের দেশে সে নিয়ম অনুসরণ করলে অসুবিধে কোথায়? অতএব, ১৯৮৬ সালের ‘দি সিটি কর্পোরেশন ট্যাক্সেশন রুলস’ যথাযথ সংশোধন করে একটি নূতন আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেয়ার জন্যে আমি সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। এই আইন প্রণীত হওয়া পর্যন্ত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন আগের নিয়মে গৃহকর আদায় অব্যাহত রাখুক্তএটাই আমার প্রার্থনা।
লেখক : সাবেক সভাপতি, বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতি, একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ ও অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর, অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

পূর্ববর্তী নিবন্ধজন্মাষ্টমীর তত্ত্ব ও তাৎপর্য
পরবর্তী নিবন্ধবড়শি দিয়ে মাছ ধরতে গিয়ে পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু