জানুয়ারির শুরুতেই দেশে আসতে পারে টিকা

আজাদী ডেস্ক | শুক্রবার , ১১ ডিসেম্বর, ২০২০ at ৫:৩৭ পূর্বাহ্ণ

আসছে জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকেই ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনাভাইরাসের টিকার প্রথম চালান বাংলাদেশে আসবে বলে আশা করছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীতে হাম-রুবেলা টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ কথা জানান। মন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করি, আগামী মাসের প্রথম কোয়ার্টারেই আমরা টিকা পেয়ে যাব। অঙফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে বাংলাদেশে আনার ব্যবস্থা করেছি। তিন কোটি ডোজ টিকা সরকার নিয়ে আসছে সরাসরি। খবর বিডিনিউজ ও বাংলানিউজের।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ টিকার এই ব্যবস্থা করতে পেরেছে মন্তব্য করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ডব্লিউএইচও আমাদের টিকা দেবে আমাদের জনসংখ্যার ২০ শতাংশ হারে। সেটা আসতে হয়ত কিছুটা সময় লাগবে। কিন্তু আমরা টিকা পাব। অনেক দেশ আছে, যারা এখনও টিকার ব্যবস্থা করতে পারেনি। অঙফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকা করোনাভাইরাসের যে টিকা তৈরি করছে, তার তিন কোটি ডোজ কিনতে সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি করেছে সরকার। মহামারী মোকাবেলায় যারা সামনে থেকে কাজ করছেন, শুরুতে তাদের বিনামূল্যে এই টিকা দেওয়া হবে বলে ইতোমধ্যে সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। এছাড়া গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস-গ্যাভি বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ২০ শতাংশের জন্য ৬ কোটি ৮০ লাখ ডোজ টিকা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে।
করোনাভাইরাসের কার্যকর টিকা পাওয়া গেলে তা যাতে সারা বিশ্বের মানুষ পায়, তা নিশ্চিত করতে কয়েক মাস ধরে কাজ করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও গ্যাভি। গতবছরের শেষে চীন থেকে পুরো বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া নতুন ধরনের এ করোনাভাইরাস ইতোমধ্যে পৌনে সাত কোটির বেশি মানুষকে আক্রান্ত করেছে, কেড়ে নিয়েছে ১৫ লাখ ৭০ হাজার মানুষের প্রাণ। বাংলাদেশে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ৪ লাখ ৮৫ হাজার পেরিয়ে গেছে, ছয় হাজার ৯৬৭ জনের মৃত্যু ঘটিয়েছে এ ভাইরাস।
এদিকে অঙফোর্ডের তৈরি করোনা ভ্যাকসিনের ৩ কোটি ডোজ কিনতে মোট খরচের অর্ধেক ৭৩৫ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে অর্থ বিভাগ। যার মধ্যে ভ্যাকসিন কিনতে ৬৩৫ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং আনুষঙ্গিক খরচ হিসাবে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে সরকারিভাবে এই ভ্যাকসিন ক্রয়, পরিবহনসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় হিসাবে ১ হাজার ৫৮৯ কোটি ৪৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ চেয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। গতকাল বুধবার অর্থমন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ (বাজেট অনুবিভাগ-১) থেকে অর্থ বরাদ্দের মঞ্জুরি আদেশ জারি করা হয়। অর্থ বরাদ্দের মঞ্জুরি আদেশে বলা হয়, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে কোভিড-১৯ প্রতিরোধক ভ্যাকসিন ক্রয়ের লক্ষ্যে পরিবহন খরচসহ কোল্ড চেইনে পৌঁছানো পর্যন্ত ৩ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন ক্রয়ের জন্য ১ হাজার ২৭১ কোটি ৫৫ লাখ টাকার ৫০ শতাংশ অর্থাৎ ৬৩৫ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং কোল্ড চেইন ইক্যুইপমেন্ট, এডি সাইরিংগস বঙেস ক্রয়, ভ্যাকসিন কেন্দ্র পর্যন্ত পরিবহন, জনবল, মাইক্রোপ্লানিং ও তালিকা প্রণয়ন, সুপারিশ ও মনিটরিং, প্রশিক্ষণ, প্রচার-প্রচারণাসহ মানুষের শরীরে ভ্যাকসিন দেওয়া পর্যন্ত ৩ কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের জন্য ১০০ কোটি টাকাসহ মোটি ৭৩৫ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা চলতি ২০২০-২১ অর্থ বছরে অর্থ বিভাগের বাজেট ‘করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় তহবিল’ থেকে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অনুকূলে প্রদানের মঞ্জুরি আদেশ নির্দেশক্রমে জারি করা হলো।
তবে অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে কয়েকটি শর্ত দেওয়া হয়েছে। শর্তগুলো হলো: ভ্যাকসিন ক্রয়ের ক্ষেত্রে সরকারি অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন নিতে হবে। সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির অনুমোদন গ্রহণ করতে হবে। অর্থ বিভাগের মতামত গ্রহণপূর্বক ব্যাংক গ্যারান্টি চূড়ান্ত করতে হবে। অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে দ্য পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অ্যাক্ট-২০০৬ এবং দ্য পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস-২০০৮ অনুসরণসহ যাবতীয় আর্থিক বিধি-বিধান যথাযথভাবে পালন করতে হবে এবং ভ্যাকসিন ক্রয় ও কোল্ড চেইন ইক্যুইপমেন্ট, এডি সাইরিংগস বঙেস ক্রয় বাবদ ব্যয় সম্পাদনের এক মাসের মধ্যে ব্যয় করা অর্থের সাপেক্ষে যথাযথ কর্তৃপক্ষের প্রত্যয়নসহ বিল-ভাউচার ও ব্যয় প্রতিবেদন অর্থ বিভাগে পাঠাতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধধর্মঘট স্থগিত ৫ দিন পর সাগরে ফিশিং জাহাজ
পরবর্তী নিবন্ধনিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু শেখ হাসিনার সাহসী উদ্যোগ : নগর আওয়ামী লীগ