ছাত্রলীগের মারামারির ঘটনায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা

একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি বৈঠক আজ কলেজ খোলার সিদ্ধান্ত আসতে পারে

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৩ নভেম্বর, ২০২১ at ৫:৫৮ পূর্বাহ্ণ

আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত ২৯ ও ৩০ অক্টোবর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মারামারির ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সার্জারি বিভাগের প্রফেসর ডা. মতিউর রহমান এ তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক। অন্য সদস্যরা হলেন- কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মুখেশ কুমার দত্ত, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. আরিফুর রহমান, হোস্টেল কমিটির চেয়ারম্যান ডা. মিজানুর রহমান চৌধুরী ও ছাত্রবাসের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রিজোয়ান রেহান।
গতকাল সোমবার সকালে চমেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. সাহেনা আক্তারের কাছে সিলগালাকৃত প্রতিবেদনটি হস্তান্তর করেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা। তদন্ত প্রতিবেদন হতে পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছেন চমেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. সাহেনা আক্তার। তবে প্রতিবেদনের বিষয়বস্তু সম্পর্কে কিছুই বলতে চাননি চমেক অধ্যক্ষ।
এদিকে, গতকাল সোমবার তদন্ত প্রতিবেদন পেয়েই মঙ্গলবার (আজ) একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক আহ্বান করেছে চমেক প্রশাসন। বৈঠকে তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি শিক্ষা কার্যক্রম চালু ও পরবর্তী করণীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা রয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করে চমেক অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. সাহেনা আক্তার আজাদীকে বলেন, আমরা তদন্ত প্রতিবেদনটি হাতে পেয়েছি। তদন্ত কমিটি সিলগালা করে প্রতিবেদনটি জমা দিয়েছে, আমরা সেটি খুলিনি। মঙ্গলবার একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠক হবে। বৈঠকে সেটি (প্রতিবেদন) খোলা হবে। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই আলোচনার মাধ্যমে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া শিক্ষা কার্যক্রম বা কলেজ খোলার বিষয়ে একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকেই আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান চমেক অধ্যক্ষ।
প্রসঙ্গত, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ২৯ অক্টোবর রাতে চমেক প্রধান ছাত্রাবাসে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মারামারির ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে জড়ানো দুই গ্রুপের এক পক্ষ সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও অপর পক্ষ শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। ওই ঘটনায় নাছির অনুসারী দুজন আহত হয়। এর জের ধরে পরদিন সকালে চমেক হাসপাতাল প্রধান ফটক সংলগ্ন ফুটপাতে মাহাদি জে আকিব নামে এমবিবিএস ২য় বর্ষের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করে নাছির অনুসারীরা। মাহাদি জে আকিব নওফেল অনুসারী হিসেবে পরিচিত। মারধরে মাথায় গুরুতর আঘাত পান মাহাদি।
অন্যদিকে, ৩০ অক্টোবর সকালে ২য় দফা মারামারির ঘটনার পরপরই একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি বৈঠক আহবান করে চমেক প্রশাসন। বৈঠক থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য চমেক বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। একই সাথে ওইদিন (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যার মধ্যেই শিক্ষার্থীদের হল (হোস্টেল) ছাড়ার নির্দেশ দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। শিক্ষার্থীরা হল ছাড়লে সন্ধ্যা ৭টার দিকে সবকয়টি হল তালাবদ্ধ করে দেয়া হয়। কলেজ বন্ধ ঘোষণার পাশাপাশি ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করে চমেক কতৃপক্ষ। প্রতিবেদন জমাদানে কমিটিকে সাত কর্মদিবস সময় দেয়া হয়। তবে পরবর্তীতে সময় বাড়িয়ে নেয় কমিটি। অবশেষে গতকাল (২২ নভেম্বর) প্রতিবেদন জমা দিল গঠিত তদন্ত কমিটি।
উল্লেখ্য, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এর আগেও কয়েক দফায় সংঘর্ষে জড়ায় নাছির ও নওফেলের অনুসারী ছাত্রলীগের বিবদমান দুই গ্রুপ। সংঘর্ষের জের ধরে এর আগেও কলেজ এবং হোস্টেল বন্ধ ঘোষণা করতে হয়। এছাড়াও সংঘর্ষের ঘটনায় পাঁচলাইশ থানায় পাল্টাপাল্টি বেশ কয়েকটি মামলাও হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধসেরা ৪২ করদাতা সম্মাননা পাচ্ছেন কাল