চড়াদামে কেনা ধানের বীজে অঙ্কুরোদগম না হওয়ায় চিন্তা

| শনিবার , ২৮ নভেম্বর, ২০২০ at ১০:৫২ পূর্বাহ্ণ

বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকায় বোরো মৌসুমে হাইব্রিড বীজ ধানে অঙ্কুরোদগম হয়নি। অধিক ফলনের আশায় চড়াদামে বীজ কিনে অঙ্কুরোদগম না হওয়ায় চিন্তিত হয়ে পড়েছেন চাষিরা। ধানের চারা উৎপাদনের জন্য বীজতলা তৈরি করে বীজ বুনতে না পেরে হতাশা বিরাজ করছে প্রান্তিক চাষিদের মধ্যে। তবে বিভিন্ন কোম্পানির চমকপ্রদ বিজ্ঞাপনে আকৃষ্ট না হয়ে সরকারি বীজ ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর। খবর বাংলানিউজের।
বাগেরহাট কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, বাগেরহাটের ৯ উপজেলায় এ বছর প্রায় ৫৫ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হবে। এর মধ্যে ৪২ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ও অবশিষ্ট জমিতে চাষ হবে উচ্চ ফলনশীল উপষী ধান। এজন্য প্রায় ৬০০ টন হাইব্রিড ও ২৫০ টন উফষী ধান বীজের চাহিদা রয়েছে। এই মৌসুমে কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তর বিভিন্ন প্রকল্প ও রাজস্ব খাত থেকে ৩০ টন হাইব্রিড ধানের বীজ ও ১০ টন উফষী ধানের বীজ বিতরণ করবে প্রান্তিক চাষিদের মধ্যে। বিভিন্ন কোম্পানির প্যাকেট জাত বীজ দিয়ে অবশিষ্ট চাহিদা মেটাবেন চাষিরা।
ব্র্যাক, সিনজেনটা, পার্টেঙ, এসিআইসহ বিভিন্ন নামে ১০টির উপরে কোম্পানি হাইব্রিড ধান বীজ বিক্রয় করেন। এসব বীজ কোম্পানি ভেদে ২৫০-৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে। কিন্তু গত দুই বছর ধরে বাজারের বিভিন্ন হাইব্রিড ধানের বীজে অঙ্কুরোধ গম না হওয়ায় ফলন ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে বীজ উৎপাদন, সংরক্ষণ ও বিপণনকারী সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি-বীজ) বীজের দাম অপেক্ষাকৃত কম ও মান ভালো হওয়া সত্বেও শুধু প্রচারণার অভাবে চাষিরা বেসরকারি বাণিজ্যিক কোম্পানির বীজের ওপর নির্ভর করছেন চাষিরা। ৫০০ টনের উপরে হাইব্রিড বীজের চাহিদার বিপরীতে বিএডিসি-বীজ, বাগেরহাট কার্যালয় মাত্র ১০০ কেজি হাইব্রিড ও ১ হাজার ৫০০ কেজি উফষী ধানের বীজ বিক্রয় করতে পেরেছেন। সরকারি বীজের মান ও দাম সম্পর্কে ব্যাপক প্রচারণা চালালে প্রান্তিক চাষিরা উপকৃত হতো বলে দাবি সচেতন মহলের।
হাইব্রিড ধানের বীজে অঙ্কুরোদগম না হওয়া কুচয়া উপজেলার চাষি শেখ রুস্তম আলী বলেন, জমির জন্য বিভিন্ন কোম্পানির ১৫ কেজি ধান কিনেছিলাম। এর মধ্যে ১২ কেজি ধানে অঙ্কুরোদগম হলেও ২৯০ টাকা করে কেনা সিনজেটা কোম্পানির ৩ কেজি ধান একদম নষ্ট হয়ে গেছে। কোনো অঙ্কুরোদগম হয়নি। রুস্তমের প্রতিবেশী আবুল হোসেন বলেন, রাজলক্ষী ব্র্যান্ডের ধান কিনেছিলাম, অঙ্কুরোদগম হয়নি। আবার নতুন করে ধান কিনেছি। আসলে কি করবো, এতো দামের ধান যখন নষ্ট হয়, তখন আমাদের কিছু করার থাকে না।
এসিআই কোম্পানির (এসিআই-১) ধান কিনেছিলেন মোজাফফর মোল্লা নামে এক চাষি। তার ধানেও অঙ্কুরোদগম হয়নি। এখন নতুন করে কি ধান কিনবেন এ নিয়ে শঙ্কায় আছেন তিনি। শুধু এরা নয় বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন উপজেলার চাষিদের কাছ থেকে হাইব্রিড বীজ ধানে অঙ্কুরোদগম না হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বাগেরহাট কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) সঞ্জয় কুমার দাস বলেন, সিনজেনটা কোম্পানির একটি ব্র্যান্ডের বীজে অঙ্কুরোদগম না হওয়ার খবর আমরা পেয়েছি। বিষয়টি ওই প্রতিষ্ঠানকে জানালে তারা ওই ব্র্যান্ডের বীজ বাজার থেকে তুলে নিয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমুনীর চৌধুরীর জন্মবার্ষিকীতে গুগলের ডুডল
পরবর্তী নিবন্ধসীতাকুণ্ডে বদিউল আলম স্মৃতি গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট সম্পন্ন