চন্দনাইশে দুই সহোদর হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিল

চন্দনাইশ প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ৮ অক্টোবর, ২০২০ at ৫:৩২ পূর্বাহ্ণ

৮ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে ‘ক্রসফায়ারে’ চন্দনাইশের দুই সহোদর হত্যা মামলার চার্জশিট দিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তা। গতকাল বুধবার এডিশনাল চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চন্দনাইশের আদালতে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এর আগে গত ২০ সেপ্টেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় ধার্য করা ছিল। কিন্তু কাজ সমাপ্ত করতে না পারায় তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার (আনোয়ারা সার্কেল) মো. মফিজ উদ্দিন আদালতে বর্ধিত সময় চান।
উল্লেখ্য, গত ২ সেপ্টেম্বর নিহত দুই সহোদরের বোন রিনাত সুলতানা শাহীন টেকনাফ থানা পুলিশের ৫ জন, চন্দনাইশ থানা পুলিশের সোর্সসহ ৭ জন ও সংশ্লিষ্টদের আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন। এরপর আদালতের নির্দেশে তদন্ত কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সিসিটিভি ফুটেজসহ গুরুত্বপূর্ণ আলামত সংগ্রহ করেন। গতকাল আদালতে দাখিলকৃত তদন্ত প্রতিবেদনে মো. মফিজ উদ্দিন উল্লেখ করেন, মামলার বাদী বা বাদীর পরিবারের সদস্যরা ভিকটিম আজাদুল ইসলাম আজাদ ও আমানুল ইসলাম ফারুককে অপহরণ ও চাঁদা দাবির বিষয়ে চন্দনাইশ থানায় কোনো মামলা বা জিডি করেননি।
এদিকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. শহীদুল্লাহ কাইসারের আদালতে মামলাটি শুনানির জন্য উত্থাপিত হলে আসামিদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগটি সরাসরি এজাহার হিসাবে গণ্য করে তা র‌্যাব-৭ এর মাধ্যমে তদন্তের নির্দেশ দিতে মানবাধিকার আইনজীবীগণ একটি আবেদন দাখিল করেন। আবেদনে বলা হয়, তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ আছে, ইতোপূর্বে নিহত দুই ভাইয়ের অপহরণ ও হত্যার বিষয়ে কোনো মামলা দায়ের হয়নি, সেহেতু সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আনীত অপরাধ আমলে নিতে আর কোনো আইনি বাধা রইল না। এদিন মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের প্রস্তুতকৃত একটি সরেজমিন প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হয়। প্রতিবেদনে চন্দনাইশ থানার দালাল ও সোর্সসহ ৭ জন আর টেকনাফ থানার তৎকালীন ওসি প্রদীপসহ ৫ জন আসামি ও সংশ্লিষ্ট আরো কয়েকজন পুলিশ সদস্যের সম্পৃক্ততার সাক্ষ্য প্রমাণ দাখিল করা হয়। এরপর আদালত আগামী ১২ অক্টোবর প্রতিবেদন এবং আবেদনের শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন।
মামলায় বাদীর পক্ষে মামলার শুনানিতে অংশ নেন মানবাধিকার আইনজীবী এএম জিয়া হাবীব আহসান, সৈয়দ আবুল কাশেম, সৈয়দ মোহাম্মদ হারুন, এএইচএম জসীম উদ্দিন, দেওয়ান ফিরোজ আহমদ, মো. সাইফুদ্দিন খালেদ, হাসান আলী, বদরুল হাসান প্রমুখ।
আইনজীবী এএম জিয়া হাবীব আহসান বলেন, আদালত জানতে চেয়েছেন, দুই ভাইকে হত্যার ব্যাপারে চাঁদা দাবি ও অপহরণের ব্যাপারে নিয়মিত মামলা হয়েছে কিনা। পরবর্তীতে আমরা টেকনাফ থানার বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশসহ দুই ভাইকে হত্যার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে অপরাধ আমলে নেয়ার জন্য র‌্যাব ৭ এর মাধ্যমে একটি পিটিশন দাখিল করেছি। আদালত শুনানি শেষে আগামী সোমবার দিন ধার্য্য করেছেন। আমরা আশা করি ন্যায় বিচার পাবো।
মামলার বাদী রিনাত সুলতানা শাহীন বলেন, আমার দুই ভাই ইয়াবা ব্যবসায়ী ছিল না। ৮ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে ওসি প্রদীপসহ অন্যান্যদের যোগসাজসে আমার নিরপরাধ দুই ভাইকে অপহরণ করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এ হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচার প্রার্থনা করছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধকিট দিল বেসরকারি বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট ৫০ লাখ টাকা বিল দিচ্ছে বিপিসি!