চট্টগ্রাম জিপিও’র দুই কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ২২ অক্টোবর, ২০২০ at ৮:৫৫ পূর্বাহ্ণ

তিন গ্রাহকের ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে চট্টগ্রাম জেনারেল পোস্ট অফিসের (জিপিও) দুই কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল বুধবার দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেন ওই কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শহিদুল ইসলাম মোড়ল। আসামীরা হলো, চট্টগ্রাম জিপিও’র সহকারী পোস্ট মাস্টার নুর মোহাম্মদ (৫৪) ও পোস্টাল অপারেটর সরওয়ার আলম খান (৫২)। নুর মোহাম্মদ বোয়ালখালীর খরণদ্বীপ গ্রামের মৃত দলিলুর রহমানের ছেলে ও সরওয়ার আলম লোহাগাড়ার বড়হাতিয়া গ্রামের আইয়ুব খানের ছেলে। আসামীরা অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গ, জাল জালিয়াতি ও প্রতারণার আশ্রয়ে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক পরস্পর যোগসাজশে ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। মামলায় তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯. ৪২০, ১০৯ ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারার অভিযোগ করা হয়েছে। বর্তমানে দুই আসামী কারাগারে রয়েছেন বলে সূত্রে জানা গেছে। মামলায় এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ১নং আসামি নুর মোহাম্মদ ২০১৭ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে চট্টগ্রাম জিপিও’র সঞ্চয় শাখায় সহকারী পোস্টমাস্টার হিসেবে এবং ২নং আসামি সরওয়ার আলম খান চলতি বছরের ১ মার্চ হতে সঞ্চয় কাউন্টার-১ এ পোস্টাল অপারেটর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। গত ২৬ আগস্ট বিকেলে চট্টগ্রাম জিপিও-র উর্ধ্বতন পোস্টমাস্টার ড. মো. নিজাম উদ্দিন সঞ্চয় শাখা আকস্মিক পরিদর্শন করে রায়ফা হোসেন, লাকী আক্তার ও সাকি আক্তার নামের তিন আমানতকারীর হিসাবের লেজারে জমা দেখালেও ওই টাকা সরকারিখাতে জমা না করে ৪৫ লাখ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাতের প্রমাণ পান। তিন গ্রাহকের মধ্যে রায়ফা হোসেনের ১৬ লক্ষ, লাকী আক্তারের ১৪ লক্ষ এবং সাকি আক্তারের ১৫ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন দুই কর্মকর্তা-কর্মচারী। ওই রাতেই ঘটনার জড়িত সহকারী পোস্টমাস্টার নুর মোহাম্মদ ও পোস্টাল অপারেটর সরওয়ার আলম খানকে কোতোয়ালী থানায় সোপর্দ করা হয়। থানায় তাদের বিরুদ্ধে লিখিত এজাহার দেয়া হলেও ঘটনার অপরাধ দুদক আইনের সিডিউলভুক্ত হওয়ার কারণে থানা পুলিশ অভিযোগটি সাধারণ ডায়েরি হিসেবে এন্ট্রি করে এজাহারটি দুদকে প্রেরণ করেন। পরের দিন দুই আসামিকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
অভ্যন্তরীণ অডিটে মোট ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া যায়। এরপর তাদের থানায় সোপর্দ করা হলে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি স্বীকার করে। এরপর তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আসামি নূর মোহাম্মদের টেবিলের পুরাতন ড্রয়ার থেকে নগদ ২০ লাখ ৯৩ হাজার টাকা এবং বাথরুমের পার্শ্ববর্তী সানসেটের উপর হতে নগদ ৫৬ হাজার টাকাসহ মোট ২১ লাখ ৪৯ হাজার টাকা উদ্ধার করে জিপিও-র ট্রেজারিতে জমা করা হয়। অবশিষ্ট ২৩ লাখ ৫১ হাজার টাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়। ২০১৭ সালের ১৫ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ২৬ আগস্ট পর্যন্ত সময়ের মধ্যে আত্মসাতের ঘটনা ঘটে বলেও উল্লেখ করা হয়।
দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক লুৎফুল কবির চন্দন বলেন, ‘চট্টগ্রাম জিপিওতে তিন গ্রাহকের ৪৫ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনার বিষয়ে কোতোয়ালী থানা থেকে লিখিত অভিযোগটি পাই। এরপর মামলাটি অনুমোদনের জন্য প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হয়। ২১ অক্টোবর প্রধান কার্যালয় হতে অনুমোদনের চিঠি পাওয়ার পর পরই চট্টগ্রাম জিপিও’র দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধধস ও পিকআপ চাপায় দুই শ্রমিক নিহত
পরবর্তী নিবন্ধরোহিঙ্গাদের জন্য অনুদান চাহিদায় ঘাটতি ৪২০০ কোটি টাকা