কারাগারে স্বজনলিংক বুথ স্থাপনের উদ্যোগ

বন্দিরা ভিডিও কনফারেন্স বা টেলিফোনে কথা বলতে পারবেন

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৯:৩২ পূর্বাহ্ণ

উদ্বোধনের পাঁচ বছর পরেও দেশের কারাগারগুলোতে চালু হয়নি ‘স্বজনলিংক’। কারাগারকে সংশোধনাগারে রূপান্তরের অংশ হিসেবে ২০১৮ সালের ২৮ মার্চ পরীক্ষামূলকভাবে চালু করা হয়েছিল ‘স্বজনলিংক’। প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সেইসময় বলেছিলেন, পর্যায়ক্রমে প্রকল্পটি দেশের সব কারাগারে সম্প্রসারণ করা হবে। কিন্তু তা আর দেশব্যাপী কারাগারগুলোতে চালু করা যায়নি। বর্তমানে তাই অস্থায়ী ভাবে মোবাইল সেটে সিম ঢুকিয়ে সপ্তাহে একদিন বন্দিদের কথা বলার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। তবে আশার কথা হলো সম্প্রতি এই পদ্ধতি স্থায়ীভাবে করতে কারা অধিদফতরের উন্নয়ন বিভাগ থেকে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের কাছে।

দেশের সব কারাগারে আলাদাভাবে বুথ স্থাপন করে ‘স্বজনলিংক’ চালু হলে বন্দিরা চাইলে ভিডিও কনফারেন্স বা টেলিফোনের মাধ্যমে কথা বলতে পারবেন। দূরের স্বজনদের কারাগারে গিয়ে বন্দির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে হবে না। ‘স্বজনলিংক’ হচ্ছে কারাগারে আলাদা বুথ স্থাপন করে সেখান থেকে টিঅ্যান্ডটি লাইন কিংবা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বন্দিদের সঙ্গে স্বজনদের কথা বলার স্থায়ী প্রক্রিয়া। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একসেস টু ইনফরমেশনের (এটুআই) আওতায় ‘স্বজনলিংক’ প্রকল্পটি নেওয়া হয়। এর আওতায় বন্দিরা পরিবারের দুই সদস্যের মোবাইল নম্বরে মাসে দুবার সর্বোচ্চ ১০ মিনিট কথা বলতে পারবেন। এতে মিনিট প্রতি এক টাকা করে খরচ হবে বন্দিদের।

সাধারণ বন্দিরাই এই সুবিধা পাবেন। জঙ্গি ও শীর্ষ সন্ত্রাসীদের এ সুযোগ এখনও দেওয়া হচ্ছে না, ভবিষ্যতেও তারা সুবিধার আওতায় আসার সম্ভাবনা কম। তবে কারাবিধি অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ে তাদের সঙ্গে স্বজনরা দেখা করতে পারবেন। নিরাপত্তার খাতিরে সব ফোনালাপের সময়েই কারা কর্মচারীরা ছাড়াও গোয়েন্দা সংস্থার একজন সদস্য সেখানে উপস্থিত থাকবেন এবং তাদের ফোনালাপ রেকর্ড করবেন।

কারা অধিদফতরের পক্ষে এআইজি প্রিজন্স (প্রশাসন) মো. মাঈন উদ্দিন ভুঁইয়া ক’দিন আগে সুরক্ষা সেবা বিভাগের কাছে বেশ কিছু প্রস্তাব দেন। এর মধ্যে বন্দিদের সঙ্গে নিজ পরিবারের সদস্যদের কথা বলার জন্য নেওয়া স্বজনলিংক কার্যক্রমের বিষয়টিও তুলে ধরেন। সেখানে তিনি উল্ল্লেখ করেন, কারাগারে ফোনবুথ ‘স্বজন’ স্থাপন কার্যক্রম প্রাতিষ্ঠানিক করা গেলে কারাবন্দিরা স্বজনদের সঙ্গে নিয়মিত পারিবারিক ও আইনি সহায়তার বিষয়ে কথা বলার সুযোগ পাবে। স্বজনলিংক কার্যক্রমের অগ্রগতি নিয়ে জানতে চাইলে এআইজি প্রিজন্স (প্রশাসন) মো. মাঈন উদ্দিন ভুঁইয়া বলেন, ‘স্বজনলিংক’ কার্যক্রম প্রাথমিকভাবে পরীক্ষামূলক চালু করা হয়েছিল টাঙ্গাইলে। সেটার আদলে সারা দেশের কারাগারগুলোতে বুথের মাধ্যমে এই কার্যক্রম স্থায়ীভাবে চালু করতে চাই।

বর্তমানে দেশে ১৩টি কেন্দ্রীয় কারাগার ও ৫৫টি জেলা কারাগার রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা নাম গোপন রাখার শর্তে বলেন, কারা কর্তৃপক্ষ প্রতি সপ্তাহে একবার স্বজনদের সঙ্গে বন্দিদের কথা বলার সুযোগ দেয়। প্রতিবার ১০ মিনিট করে বন্দিরা কথা বলতে পারেন। তবে কিছু কারা কর্মকর্তাকর্মচারী অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে বন্দিদের বিভিন্ন সময় কথা বলার সুযোগ করে দেন। এ জন্য এ প্রক্রিয়াটি যত দ্রুত সম্ভব প্রাতিষ্ঠানিক করা প্রয়োজন। এতে কারা কর্তৃপক্ষেরও আন্তরিকতা রয়েছে। মন্ত্রণালয় এ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশাহজালালে ইউএস বাংলার বাসে ১৪ কেজি সোনা, চালক আটক
পরবর্তী নিবন্ধকুতুবদিয়ায় দুই সহযোগীসহ ইউপি মেম্বার আটক