ওসি প্রদীপ ও স্ত্রীর সম্পত্তি দেখভালের দায়িত্বে ডিসি

আজাদী প্রতিবেদন | বুধবার , ৩০ জুন, ২০২১ at ৬:২৫ পূর্বাহ্ণ

দুর্নীতির মামলায় টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি দেখভালের জন্য কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসককে রিসিভার নিয়োগ করেছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত এ আদেশ দেন। এর আগে গত সোমবার দুদকের পক্ষ থেকে রিসিভার নিয়োগ করতে আদালতের কাছে আবেদন করা হয়। প্রদীপ ও তার স্ত্রীর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তিগুলো হলো কক্সবাজারের একটি ফ্ল্যাট, নগরীর পাথরঘাটার একটি বাড়ি, পাঁচলাইশের একটি জায়গা, একটি প্রাইভেটকার ও একটি মাইক্রোবাস। দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক আজাদীকে বলেন, প্রদীপ ও চুমকির বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলাটির তদন্ত শেষ পর্যায়ে। এ অবস্থায় তাদের সম্পত্তিগুলো অক্ষত রাখতে রিসিভার প্রয়োজন। তাই আমরা আদালতের কাছে আবেদন করেছি। আদালতও বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন। আদালত কক্সবাজারে থাকা তাদের একটি ফ্ল্যাট দেখভাল করতে কক্সবাজারের ডিসিকে এবং নগরীর পাথরঘাটা, পাঁচলাইশে থাকা একটি বাড়ি ও একটি জায়গা এবং একটি প্রাইভেটকার ও একটি মাইক্রোবাস চট্টগ্রামের ডিসিকে রিসিভার নিয়োগ করেছেন।
গত বছরের ২৩ আগস্ট দুর্নীতি দমন কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজউদদ্দিন বাদী হয়ে প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকি কারণের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন-২০০৪ এর ২৬ (২) ধারা, ২৭ (১) ধারা, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর ৪ (২) ধারা, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারাসহ দণ্ডবিধির ১০৯ ধারায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে একে অপরের সহযোগিতায় অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতি দমন কমিশনে দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ১৩,১৩,১৭৫ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপনপূর্বক মিথ্যা তথ্য প্রদান এবং ৩,৯৫,০৫,৬৩৫ টাকার সম্পদ জ্ঞাতসারে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ এর সম্পৃক্ত অপরাধ ‘ঘুষ ও দুর্নীতির’ মাধ্যমে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে অর্জনপূর্বক উক্ত অবৈধ সম্পদ স্থানান্তর, হস্তান্তর ও রূপান্তর করে ভোগ দখলে রেখেছেন।
আদালত সূত্র জানায়, দুদকের এ মামলায় প্রদীপ গ্রেপ্তার আছেন। তবে তার স্ত্রী পলাতক। মামলা পরবর্তী দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের সম্পত্তিও ক্রোক করা হয়েছিল। এতদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তাই কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে থাকা তাদের সম্পত্তি দেখভাল করে আসছিলেন।
গত বছরের ৩১ জুলাই টেকনাফের বাহারছড়া তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় নিহতের বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজারের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ওসি প্রদীপসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। ৬ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে আত্মসমর্পণ করা প্রদীপ বর্তমানে কারাগারে আছেন। ২৭ জুন এ মামলায় প্রদীপসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধ১৭ বছরের সোয়া ১১ কোটি টাকা বকেয়ায় চোখ বিপিসির
পরবর্তী নিবন্ধনগরে বসবে ছয়টি পশুর হাট