এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন : সময়ের চাহিদা পূরণে লিবারেল আর্টস এন্ড সায়েন্সেস

জেমিমা হক শুচি | সোমবার , ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৬:৪৬ পূর্বাহ্ণ

সুপ্রিয় এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা, জীবনের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায় তোমরা পার করছো। ১২ বছরের সাধনার পর নতুন দিগন্তে পা দেয় প্রতিটি শিক্ষার্থী। এ যেনো স্বল্পপরিসর হতে কোনও মহামঞ্চে পদার্পণ। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে মহাবিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বুক স্বপ্ন নিয়ে সবার পথ চলা

 

শুরু হয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে গতানুগতিক পড়ালেখার বাইরে অনেকেই হয়তো জানে না লিবারেল আর্টস এন্ড সায়েন্সের শিক্ষাপদ্ধতি নিয়ে। আজ আমরা আলোচনা করবো ‘আউট অফ দ্য বঙ’ এর এই লিবারেল আর্টস এন্ড সায়েন্সেস শিক্ষাপদ্ধতি নিয়ে। আধুনিক যুগে লিবারেল আর্টস শিক্ষাব্যবস্থায় যেসকল

বিষয় সাধারণত অন্তর্ভুক্ত করা হয় তা হলো আর্টস (ফাইন আর্টস, মিউজিক, লিটারেচার), গণিত, সাইন্স, ফিলোসফি, রিলিজিয়াস স্টাডি এবং সোশ্যাল সাইন্স।

অর্থাৎ শুধুমাত্র গতানুগতিক পড়ালেখা নয়, পুরো বিশ্বকে জানার জন্য, তাল মিলিয়ে চলার জন্য, সাথে নিজেকে সংস্কৃতিমনা ও উদারপন্থী চিন্তাধারার মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য যে শিক্ষার মনোভাব একজন শিক্ষার্থীর দরকার তাই দিয়ে থাকে লিবারেল আর্টস শিক্ষা পদ্ধতি। এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায়

উত্তীর্ণ পরীক্ষার্থীরা জেনে খুশি হবেন যে, বাংলাদেশেই বিশ্বমানের ‘লিবারেল আর্টস এন্ড সায়েন্স শিক্ষাপদ্ধতিতে’ শিক্ষা প্রদান করছে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন। যেখানে নারীদের লিবারেল আর্টস এন্ড সায়েন্সেস শিক্ষা পদ্ধতির মাধ্যমে গড়ে তোলা হয় স্বাধীনচেতা, মননশীল ব্যক্তিত্বে। এর ফলে গ্র্যাজুয়েশনের

পর শিক্ষার্থীরা তাদের চাহিদা অনুসারে চাকরিক্ষেত্র এবং উচ্চশিক্ষার পথ বেছে নিতে পারে। এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন এর লিবারেল আর্টস সিস্টেম সম্পর্কে বলতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের কোঅর্ডিনেটর প্রফেসর সেলিম রেজা বলেন ‘শিক্ষা আসলে শক্তির আরেকরূপ। এই শক্তি

সমাজকে বদলে দেওয়ার শক্তি, এই শক্তি জ্ঞানকে মশাল হিসেবে জ্বালিয়ে পৃথিবীকে আলোকিত করার শক্তি। ২০টি দেশ থেকে সমাজের নানা স্তরের মেয়েরা নানা প্রতিকূল অবস্থা থেকে যখন মেয়েরা উঠে এসে স্নাতকোত্তর শেষে পৃথিবীর নানা প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়, প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়ে নিজেদের জ্ঞানরূপী শক্তির

জানান দেয়, তখন মনের কোণে এ প্রশ্ন উঠেই আসেকোন যাদুমন্ত্রবলে তারা নিজেদের তৈরি করেছে! এই জাদুটি ছড়িয়ে যাচ্ছে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন ‘লিবারেল আর্টস এন্ড সায়েন্সের সিস্টেমের মাধ্যমে’। অপরদিকে, লিবারেল আর্টস এডুকেশনে এইউডব্লিউর কার্যক্রম সম্পর্কে বর্ণনা করতে যেয়ে

প্রফেসর শারিন শাহাজাহান নাওমি বলেন ‘শিক্ষা আমাদের ক্রিটিকালি কনশাস হতে সাহায্য করে। কোয়ালিটি এডুকেশন বলতে যা বোঝায় এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন সেটিই এই লিবারেল আর্টস শিক্ষাপদ্ধতির দ্বারা দিয়ে থাকে। যার কারণে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি শেষ করে আমরা এমন সব নারীদের

পেয়ে থাকি যারা সমাজে এক একজন দলনেতা হয়, বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকে, সমাজের জন্য কাজ করে’। প্রতিবছরই এখান থেকে অসংখ্য মেয়েরা হাভার্ড, ক্যামব্রিজ, অক্সফোর্ডসহ বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যায়, সেই সাথে কাজ করে জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের ও পৃথিবীবিখ্যাত সংগঠনের

সাথে। এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন থেকে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে বর্তমানে নিজের ইউনিভার্সিটিতেই টিচিং ফেলো হিসেবে কর্মরত নিশাত তাসনিম আঁখি এবং ফিরোজা স্বপ্নীলকে লিবারেল আর্টস থেকে তারা কী পেয়েছেন এটি জিজ্ঞেস করা হলে বলেন, ‘লিবারেল এডুকেশনের জন্য এইউডব্লিউ এমন একটি

প্লাটফর্ম যেখানে সায়েন্স, আর্টস বা কমার্সের কোনও বৈষম্য নেই। একজন আর্টসের শিক্ষার্থী চাইলে এখানে পাবলিক হেলথে পড়তে পারেন। লিবারেল আর্টস একটি মুক্ত আকাশের মতো। যেখানে শিক্ষার্থীরা বিচরণ করতে পারে তাদের খেয়াল খুশিমতো’।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের দক্ষতার দৃষ্টিভঙ্গি বলে যে সমালোচনামূলক চিন্তাভাবনা, সমস্যা সমাধান, নেতৃত্বের মতো দক্ষতার চাহিদা ভবিষ্যতে বেশি হবে এবং এসবই লিবারেল আর্টস পাঠ্যক্রমের অধীনে প্রশিক্ষিত করা হবে। সুতরাং, এটি বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সময়ের চাহিদা এবং যুগের সাথে তাল

মিলিয়ে চলতে লিবারেল আর্টস এন্ড সায়েন্সেস শিক্ষাপদ্ধতির বিকল্প নেই, যা নারীদেরকে নিরলসভাবে শিখিয়ে যাচ্ছে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভাষার দাবিতে
পরবর্তী নিবন্ধবিদায় প্রিয় নেতা