এমিলি ডিকিনসন: নির্জনতার কবি

| রবিবার , ১৫ মে, ২০২২ at ৫:২৫ পূর্বাহ্ণ

এমিলি ডিকিনসন। তার পুরো নাম এমিলি এলিজাবেথ ডিকিনসন। একজন বিখ্যাত মার্কিন কবি। তাকে আমেরিকান কবিতার ইতিহাসে একজন উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্ব হিসেবে স্মরণ করা হয়। ১৮৩০ সালের ১০ ডিসেম্বর আমেরিকার ম্যাসাচুসেটেসরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা এডওয়ার্ড ডিকিনসন ছিলেন অ্যামহার্স্ট শহরের একজন খ্যাতিমান আইনজীবী। ছোট্ট এমিলি ছিলেন খুবই শান্ত স্বভাবের মেয়ে। সঙ্গীতের প্রতি তার ছিল আসক্তি। শুনতে ভালোবাসতেন খুব। প্লিজ্যান্ট স্ট্রিটের দোতলা প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি করা হয়েছিল তাকে। অল্প বয়সেই এমিলি বিভিন্ন বিষয় শেখার সুযোগ পেয়েছিলেন। যেমন ক্লাসিক সাহিত্য, ভারগিল ও লাতিন, গণিত, ইতিহাস ও উদ্ভিদবিজ্ঞান। ১৮৪০ সালে এমিলি ও তার বোন লাভিনিয়াকে ভর্তি করা হয় অ্যামহার্স্ট একাডেমিতে- তারা ছিলেন বিজ্ঞানী ও থিওলজিয়ান এডওয়ার্ড হিচককের তত্ত্বাবধানে। এর মধ্যেই প্রতিশ্রুতিশীল শিক্ষার্থী এমিলি প্রমাণ করেছেন নিজের মেধা ও অধ্যবসায়। উনিশ শতকের আমেরিকার কবিদের মধ্যে দু’জনকে প্রকৃতই কবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। একজন ওয়াল্ট হুইটম্যান, অন্যজন এমিলি ডিকিনসন। এমিলি ডিকিনসন তার কবিতায় ভাঙা ছন্দ, ড্যাশ চিহ্ন, যত্রতত্র বড় হাতের অক্ষর ব্যবহারের মাধ্যমে নিজস্ব প্রকাশরীতির জন্য আজও বিশ্বব্যাপী খ্যাত। আমেরিকার স্কুলে অহরহ এমিলির কবিতা পড়ানো হয়। স্কুলের ছোট ছোট ছেলেমেয়ে থেকে শুরু করে সে দেশের সব ধরনের মানুষ এমিলি ডিকিনসনের নাম ও লেখার সঙ্গে পরিচিত। আমেরিকার যে কোনো লাইব্রেরিতে গেলে এমিলি ডিকিনসনের ওপর শ’খানেক বই পাওয়া যাবে। তারপরও তার ওপর অনুসন্ধান করে চলেছেন পণ্ডিতরা। এমিলি ডিকিনসন প্রায় ১ হাজার ৮০০ কবিতা লিখেছেন। তার মধ্যে ১০-১২টি কবিতা তার জীবদ্দশায় ছাপা হয়েছিল। তাঁর মৃত্যুর পরে ছোট বোন লাভিনিয়া তাঁর কাজগুলো খুঁজে পান। তাঁর প্রথম কবিতা ১৮৯০ সালে টমাস ওয়েটভর্থ হগিনসন এবং মেবেল লুমিস টডদের দ্বারা ছাপা হয়। টমাস এইচ জনসন কোন ধরনের সম্পাদন ছাড়া তাঁর কবিতাগুলো ১৯৫৫ সালে ‘দ্য পয়েমস অফ এমিলি ডিকিনসন’ প্রকাশ করেন। উনিশ শতক এবং বিংশ শতাব্দীর আগেও তারা প্রতিভা যত্ন না করা হলেও, তিনি এখন সারা বিশ্বে অন্যতম একজন কবি হিসেবে স্বীকৃত। তাঁর কবিতার ধরণ ছিল ব্যতিক্রম। সেগুলো ছোট ছোট বাক্যের মধ্যে থাকতো। যেখানে না থাকতো টাইটেল, এমনকি কবিতার মধ্যে কিছু যতিচিহ্ন বা বর্ণ ব্যবহার করা হতো। তাঁর কবিতার মধ্যে মৃত্যু এবং অমরত্ব এই দুইটি ভাবের প্রকাশ ঘটতো। এমনকি বন্ধুদেরকে চিঠি লেখার সময়ও এই দুইটি ভাব লক্ষণীয় ছিল। ১৮৮৬ সালের ১৫ মে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধতাৎপর্যময় মহান বুদ্ধ পূর্ণিমা
পরবর্তী নিবন্ধদেশ হতে দেশান্তরে