এবার ইলিশ উৎপাদন ৬ লাখ টন ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা

দুই মাস পর ২৩ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে মাছ শিকার।। মাছ ধরা বন্ধ রাখার সুফল মিলবে

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১৯ জুলাই, ২০২১ at ৬:২৭ পূর্বাহ্ণ

সাগরে মাছ শিকারের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন জেলেরা। দুই মাসেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর আগামী ২৩ জুলাই মধ্যরাত থেকে শুরু হচ্ছে ইলিশ মাছ শিকার। তবে কোরবানির কারণে মাছ শিকার করলেও এক দুই সপ্তাহ দাম পাওয়া নিয়ে শংকা প্রকাশ করেছেন তাঁরা। অবশ্য, দুই মাসেরও বেশি সময় সাগরে মাছ শিকার নিষিদ্ধ থাকার সুফল বেশ ভালোভাবে মিলবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন জেলেরা। তাঁরা বলেছেন, মাছ বড় হওয়ার সুযোগ দেয়ায় দেশে ইলিশ শিকারের পরিমাণ অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করবে। চলতি বছর ইলিশের উৎপাদন ৬ লাখ টন ছাড়িয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা। মৎস্য অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, গত ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সাগরে মাছ শিকার পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এর আগে ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন অর্থাৎ ৮ মাস জাটকা (৯ ইঞ্চির কম সাইজের ইলিশ) নিধনে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। এতে বছরে অন্তত দশ মাস মাছ শিকার বন্ধ থাকায় সাগরে মাছ বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। শুধু ইলিশই নয়, সব ধরনের মাছই বড় হয়েছে। বছরের বেশির ভাগ সময় মাছ শিকার বন্ধ রাখা এবং বিপুল সংখ্যক জেলেকে নানা সহায়তা দিয়ে টিকিয়ে রেখেছে সরকার। এর সুফল ঘরে তোলার প্রস্তুতি শুরু করেছেন জেলেরা। জেলেদের পক্ষ থেকে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয় যে, ইতোমধ্যে পদ্মা ও মেঘনায় বড় বড় ইলিশ ধরা পড়বে। সাগরে মাছ শিকার বন্ধ থাকলেও দেশের নদীগুলোতে মাছ শিকার অব্যাহত ছিল। এরমধ্যে মেঘনা ও পদ্মায় অভয়ারণ্যে মাছ বেশ বড় হয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামালউদ্দিন চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, আগামী ২৩ জুলাই পর্যন্ত সাগরে মাছ শিকার বন্ধ রয়েছে। এতে সব ধরনের মাছ বড় হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। যার সুফল মিলবে দেশের মৎস্য খাতে। তিনি বলেন, দেশের মৎস্য খাতে নীরবে বিপ্লব ঘটেছে। মৎস্য অধিদপ্তর, র‌্যাব, জেলা প্রশাসন, কোস্টগার্ডসহ সরকারি সংস্থাগুলো নিরলসভাবে কাজ করেছে। তিনি বলেন, ২৩ জুলাই মধ্যরাত থেকে জেলেরা সাগরে যাবেন। এবার বড় বড় ইলিশ ধরা পড়বে বলেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা জানান, ২০০৭-০৮ অর্থবছরে দেশে ইলিশের উৎপাদন ছিল ২ লাখ ৯০ হাজার টন। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে তা বৃদ্ধি পেয়ে হয় ৫ লাখ ১৭ হাজার টন। ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ইলিশ শিকার করা হয় ৫ লাখ ৩৩ হাজার টন। অর্থাৎ গত ১১ বছরের ব্যবধানে দেশে ইলিশ উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৮৪ শতাংশ। দেশে বছর তিনেক আগেও বিশ্বের ৬৫ শতাংশ ইলিশ ধরা পড়তো বাংলাদেশে। গত বছর থেকে তা ৮৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
ওই কর্মকর্তা বলেন, ১০ বছর আগে দেশের ২১টি উপজেলার নদ-নদীতে ইলিশ পাওয়া যেত। বর্তমানে ১২৫ থেকে ১৩০টি উপজেলার নদ-নদীতে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। দেশে প্রায় ৭ হাজার বর্গকিলোমিটার জুড়ে রয়েছে ইলিশের অভয়াশ্রম।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামের চার বেসরকারি ল্যাবে হবে অ্যান্টিজেন টেস্ট
পরবর্তী নিবন্ধহার্ডওয়্যার দোকানে মিলল টিসিবির বিপুল পরিমাণ পণ্য