এগিয়ে যাব সৃষ্টির উল্লাসে

রূপম চক্রবর্ত্তী | শুক্রবার , ৫ আগস্ট, ২০২২ at ৭:১০ পূর্বাহ্ণ

দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় স্বাধীনতা পরিপূর্ণভাবে সুরক্ষিত থাকুক শালীনতা ফিরে আসুক মানুষের শব্দচয়নে। অশালীন আর কুরুচিপূর্ণ বাক্য বিনিময় চিরতরে বিদায় হয়ে যাক। সাম্য, মানবিক মর্যাদা আর ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বাঙালি জাতির জীবনে ফিরে আসুক হারানো আত্মবিশ্বাস, আত্মনির্ভরশীলতা, মর্যাদাবোধ, জাতীয়তাবোধ, বলিষ্ঠ জীবন আর মানবতাবোধ। কিছু মানুষের মধ্যে বৈষম্যমূলক যে চিন্তার উদয় হয়েছে তার নিপাত হোক। সবার জন্য কাজ, শিক্ষা, মাথা গোঁজার ঠাঁই, চিকিৎসা সেবার সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। উগ্রতা পরিহার করে উদারতার চর্চা বাড়াতে হবে।

জাতীয় সব ইস্যুতে বাঙালি জাতি ঐক্যবদ্ধ হোক। স্বাধীনতার সুফল জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সবাই সমানভাবে ভোগ করুক। কোন নির্দিষ্ট গোষ্ঠী ও ব্যক্তির মাঝে তা কুক্ষিগত না থাকুক। যখন মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল তখন কিন্তু অসামপ্রদায়িক চিন্তা চেতনায় লালিত হয়েই এদেশের দামাল ছেলেরা যুদ্ধ করেছিল। অথচ বিগত পঞ্চাশ বছরের ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে সেই চেতনা এখন দেশ থেকে বিতাড়িত হতে চলেছে। কয়েক বছর ধরে মানুষ ভাইরাসের সাথে যুদ্ধ করছেন। যে কোনো বড়ো ঘটনাই মানুষের চিন্তার মধ্যে প্রভাব বিস্তার করে। যেমন করোনা ভাইরাস মানুষকে এটা দেখালো যে, তারা এখনো কতো অসহায়। করোনা থেকে যে শিক্ষা নেওয়া দরকার ছিল সে শিক্ষা আমরা নিতে পারিনি। সভ্যতা নিয়ে অহংকার করার মতো অবস্থানে মানব জাতি এখনও পৌঁছতে পারেনি।

এতো আবিষ্কার, এতো উন্নতি, এতো শক্তির দম্ভ, হাতের মুঠোয় দুনিয়া অথচ একটি ভাইরাসের কাছে কিছুই কিছু না। মানুষকে এখন নিজের সঙ্গেই আরেক দফা বোঝাপড়া দেখতে হবে। যারা দেশে আছেন অথচ দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের সাথে লিপ্ত আছেন তাদের সকল কালিমা ধুয়ে মুছে যাক। নব সৃষ্টির উল্লাসে এগিয়ে যাক দেশের জনসাধারণ। মানুষের হাহাকার ধ্বনি আর শুনতে চাইনা। করোনার আতংক, সামপ্রদায়িক শক্তির উত্থান আমাদেরকে অনেক ক্ষেত্রে আশাহত করেছে।

ভেজাল আছে বলেই আসল জিনিসের কদর আছে। সব কিছু নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। সকল অশুভ শক্তিকে পরাজিত করে বাসযোগ্য পৃথিবী নির্মাণের তাগিদে কাজ করার জন্য সংকল্প নেওয়ার সময় এসেছে। স্বপ্ন দেখুন আগামীর দিন হবে মানবতার দিন। যেখানে থাকবে না হিংসা, বিদ্বেষ, হানাহানি অথবা আত্মপ্রতিষ্ঠার অহংকার। সমপ্রীতি নষ্টকারীদের বিরুদ্ধে মানবতা জেগে উঠবে। দুঃখী মানুষ আর পীড়িত জনের পাশে আমাদের মানবতা থাকবে। সবাই নিজ নিজ ধর্মকে ভালোবাসবে। কিন্তু ধর্মকে ব্যবহার করে যারা উগ্রতা, হানাহানি সৃষ্টি করবে তাদেরকে ঘৃণা করব। শিশুদের উপর নির্যাতন, নারী ধর্ষণ, মাদক দ্রব্যের ব্যবহার কমে যাওয়ার প্রত্যাশায় আসবে স্বাধীনতার সফলতা।

ব্যবসায় অধিক লাভের আশায় ব্যবসায়ীরা তাদের মনুষ্যত্ব নষ্ট করে ফেলছেন। খাদ্যশস্য, ফলমূল, সবজি ইত্যাদি উৎপাদনে রাসায়নিকের ব্যবহার, মাঠ থেকে উত্তোলন, প্রক্রিয়াজাতকরণ, আবার খাবার তৈরির সময়ও তাতে থাকছে ভেজালের স্পর্শ। ভেজালের এই মহোৎসবের পেছনে রয়েছে একশ্রেণীর অসাধু মুনাফা লোভী ব্যবসায়ী গোষ্ঠী যারা সাধারণ মানুষকে বলি করে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। এরা ভেজাল মিশিয়ে দেশের মানুষের মেধা নষ্ট করতে চাই। নীরব মানব হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। শুরু করতে হবে নতুন করেই যেন সুন্দর একটা সমাজ রচনা করতে পারি। যে সমাজে ঘুষ থাকবেনা, দুর্নীতি থাকবেনা,সামপ্রদায়িকতা থাকবে না, নারী নির্যাতন থাকবে না। প্রত্যাশা করছি সোনার বাংলার সোনার ছেলেরা সোনার ফসল ফলাবেই।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপিতামাতার দুর্দিন : আইনের প্রয়োগ
পরবর্তী নিবন্ধরেলক্রসিং এখন মৃত্যুফাঁদ! আড়াই বছরে ২১৯ মৃত্যু!