দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া কেটে যাওয়ায় কক্সবাজারে জেলেরা এক সপ্তাহ পর ফের মাছ ধরতে সাগরে রওয়ানা দিয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সতর্ক সংকেত প্রত্যাহারের পর অনুকূল আবহাওয়ায় জেলেরা ট্রলার নিয়ে সাগরে রওয়ানা দিতে শুরু করে। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কঙবাজারের ৯০% ট্রলারই সাগরে রওয়ানা দিয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা ফিশিং বোট মালিক সমিতি।
ফিশিং বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন জানান, কঙবাজারে ছোটবড় প্রায় ৮ হাজার মাছধরার বোট রয়েছে। এতে নিয়োজিত রয়েছে প্রায় ১ লাখ জেলে। বৃহস্পতিবার অনুকূল আবহাওয়ায় কঙবাজারের ৯০% ট্রলারই সাগরে রওয়ানা দিয়েছে। বাকি ট্রলারগুলোও শুক্রবারের (আজ) মধ্যে রওয়ানা দেবে।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপের কারণে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া তৈরি হওয়ায় গত ৯ সেপ্টেম্বর শুক্রবার সাগরে ট্রলার চলাচলের ওপর ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত জারি করে আবহাওয়া বিভাগ। দুর্যোগের আশংকায় আবহাওয়া বিভাগের জারি করা এ সতর্কতা সংকেতের খবর পেয়ে জেলেরা সাগরে মাছ ধরা বন্ধ করে ঘাটে ফিরে আসে। এক সপ্তাহ পর গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে সতর্ক সংকেত প্রত্যাহারের পর অনুকূল আবহাওয়ায় জেলেরা ট্রলার নিয়ে সাগরে রওয়ানা দিতে শুরু করে।
ট্রলার মালিকরা জানান, এর আগে গত ১৮ আগস্ট একই কারণে সাগরে সতর্কতা সংকেত জারি করে আবহাওয়া বিভাগ। এসময় সাগর থেকে ফেরার পথে অন্তত দুটি বোটডুবির ঘটনা ঘটে এবং এতে ৮ জন জেলে মারা যায়। এর প্রায় এক সপ্তাহ পর আবহাওয়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে সাগরে পুনরায় মাছ ধরা শুরু হলেও দুই সপ্তাহ পর পুনরায় হোচট খায় জেলেরা।
জেলেরা জানান, গত এক মাসে সাগরে তিনটি লঘুচাপ তৈরি হয়। লঘুচাপের কারণে গত ৬ আগস্ট থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত একইভাবে সাগরে মাছধরা বন্ধ ছিল। আবহাওয়া দপ্তর সতর্কতা সংকেত প্রত্যাহার করায় গত ১৬ আগস্ট থেকে ট্রলারগুলো ফের মাছ ধরতে সাগরে গিয়েছিল। কিন্তু মাত্র দুইদিন পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে ১৮ আগস্ট থেকে আবহাওয়া দপ্তর ফের ৩ নম্বর সতর্কতা সংকেত জারি করলে মাছ না ধরেই ঘাটে ফিরে ট্রলারগুলো।
বঙ্গোপসাগরে বারবার দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া তৈরি হওয়ার কারণে গত এক মাসের অধিকাংশ সময়ই সাগরে মাছ ধরা বন্ধ ছিল এবং এ কারণে সাগর থেকে মাছ ধরাও কম পড়েছে বলে জানান শহরের প্রধান মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ফিশারিঘাটস্থ মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির পরিচালক জুলফিকার আলী।
