একটি ফুল কুঁড়িতেই শেষ

শেখ রাসেলকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী

| সোমবার , ১৯ অক্টোবর, ২০২০ at ৫:০০ পূর্বাহ্ণ

ঘাতকের হাতে নিহত সর্বকনিষ্ঠ ভাই শেখ রাসেলের স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বুলেটের আঘাতে একটি ফুল কুঁড়িতেই শেষ হয়ে যায়। গতকাল রোববার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫৭তম জন্মদিন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে তিনি একথা বলেন। খবর বিডিনিউজের।
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ঘাতকের নির্মম বুলেটের আঘাতে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন। ভয়াল সেই রাতে জাতির পিতার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যদের সঙ্গে প্রায় ১১ বছর বয়সী শেখ রাসেলকেও প্রাণ দিতে হয়েছিল। শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৬৪ সালে রাসেলের জন্ম হয়েছিল। কিন্তু তার জীবনটা শেষ হয়ে যায়… একটি ফুল কুঁড়িতেই শেষ হয়ে যায় আর তা ফুটতে পারেনি।
শেখ রাসেলের জন্মের ক্ষণটি ঘিরে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে উত্তেজনাকর সেই মুহূর্তগুলো স্মরণ করে বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, একটা ছোট্ট শিশু আসবে আমাদের পরিবারে। আমি, কামাল, জামাল, রেহানা- আমরা সবাই খুব, খুব উৎসাহিত এবং বেশ উত্তেজিত ছিলাম যে কখন সেই শিশুর কান্নাটা আমরা শুনব,কখন তার আওয়াজটা পাব, কখন তাকে কোলে তুলে নেব। আর সেই ক্ষণটি যখন এল তা আমাদের জন্য অত্যন্ত একটা আনন্দের সময় ছিল। সেই মুহূর্তে নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যস্ততার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, তিনি ওই মুহূর্তে চট্টগ্রামে ছিলেন। সাথে সাথে আমরা টেলিফোন কল করে আব্বাকে জানালাম।
ব্রিটিশ দার্শনিক বারট্রান্ড রাসেলের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভক্তি ও তার সম্পর্কে জেনে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব এই দার্শনিকের নামে তাদের ছোট ছেলের নাম রাখেন বলেও তিনি জানান। শেখ হাসিনা বলেন, ছোট্ট শিশুটি আমাদের চোখের মনি ছিল। কিন্তু কী দুর্ভাগ্য তার, ১৯৬৪ সালের ১৮ই অক্টোবরে তার জন্ম। এরপর ১৯৬৬ সালে যখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব আমার বাবা ছয় দফা দিলেন, তিনি খুব ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। ওই ৬৬ সালেই তিনি মে মাসে বন্দি হয়ে গেলেন। ছোট্ট রাসেল তার কোনো কিছু বুঝে উঠার আগেই বাবা কারাগারে। প্রকৃতপক্ষে তার সাক্ষাৎ হলো কারাগারেই। তিনি বলেন, বাবার সঙ্গে কারাগারে দেখা করতে গেলে তাকে সেখান থেকে নিয়ে নিয়ে যাওয়া জন্য রাসেল কান্নাকাটি করতো।
১৯৬৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে যখন বাবা মুক্তি পান তখন যেই জিনিসটা সব সময় দেখতাম রাসেল সর্বক্ষণ, মনে হয় ওর ভেতরে একটা ভয় ছিল যে কোনো মুহূর্তে বুঝি বাবাকে হারাবে। তাই তিনি যেখানেই যেতেন যেই কাজই করতেন খেলা ছলে ছলে কিছুক্ষণ পরপরই একবার করে সে দেখে আসতো যে বাবা ঠিক আছে তো। ওই সময় গণভবন প্রান্তে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভাসানচরে কেন যায় না রোহিঙ্গারা
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬