শত বছরের পুরনো বহুল আলোচিত কালুরঘাট সেতু মেরামতের জন্য বন্ধ করা হবে। এজন্য উভয় পাশের মানুষের যাতায়াতের জন্য ফেরি সার্ভিস চালু হতে যাচ্ছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ফরি সার্ভিস চালু হবে বলে জানিয়েছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগ চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা।
সরেজমিনে গত বুধবার কালুরঘাট সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, উভয় পাশে ফেরি চলাচলের জন্য এপ্রোচ সড়কের কাজ শেষ হয়েছে। নদীতে চলে এসেছে তিনটি ফেরি। দুটি ফেরি দুই পাশ থেকে গাড়িসহ মানুষ পারাপার করবে। একটি ফেরি রিজার্ভ থাকবে বলে জানা গেছে। জানা গেছে, ফেরি চালু হলেই
কালুরঘাট সেতু মেরামতের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে। আগামী ডিসেম্বরে কক্সবাজার রুটে ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে ট্রেন সার্ভিসের উদ্বোধন করা হবে। এর মধ্যে সেতুটি মেরামত করা না হলে কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালানো যাবে না। তাই দ্রুত সেতুটি মেরামত করা হবে বলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা
জানিয়েছেন। এদিকে শত বছরের পুরনো জরাজীর্ণ কালুরঘাট সেতুতে প্রতিদিন শত শত যানবাহনে অসংখ্য যাত্রী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। একমুখী সেতু হওয়ায় এ পাড় থেকে ওপাড় যেতে যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে হয় যাত্রীদের। মূলত যাত্রীদের দুর্ভোগ
কমাতে এবং ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে ভারী যানবাহনের ঝুঁকি এড়াতেই সড়ক ও জনপথ বিভাগ নদীতে ফেরি সার্ভিস চালু করতে যাচ্ছে।
এই ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগ চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী পিন্টু চাকমা আজাদীকে বলেন, কালুরঘাটে ফেরি সার্ভিস চালুর জন্য নদীর উভয় পাশে এপ্রোচ সড়ক নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। ফেরির রক্ষণাবেক্ষণসহ ইজারা আদায়ের জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। প্রপ্রোজল আমরা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি।
মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন হয়ে আসলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে ইজারাদার হিসেবে নিয়োগ দেয়া হবে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ফেরি সার্ভিস চালু হবে। ফেরি সার্ভিস চালু হলে সেতুটি মেরামতের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে।
ফেরি সার্ভিস চালু হলে কালুরঘাট সেতুর উভয় পাশের যানজট স্বাভাবিক হবে বলে মনে করছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা।
পুরোনো কালুরঘাট সেতুকে সংস্কার করে কঙবাজার রুটে ট্রেন চালানোর উপযোগী করে তুলতে বুয়েটকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা কাজ শুরু করেছেন। বুয়েটের বিশেষজ্ঞ টিম সমীক্ষা চালিয়ে প্রাথমিক একটি রিপোর্ট দিয়েছে। বুয়েট ফাইনাল রিপোর্ট দেয়ার পর এই রিপোর্টের উপর রেল কর্তৃপক্ষ সেতুটি
মেরামতের উপযোগী করতে টেন্ডার আহ্বান করবে। নতুন ভাবে মেরামতের পর এই সেতু দিয়ে কঙবাজার রুটে ট্রেন চালানো যাবে বলে জানান চট্টগ্রাম–কঙবাজার রেল লাইন প্রকেল্পর অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আবুল কালাম চৌধুরী। তিনি জানান, দোহাজারী–কঙবাজার ১০০ কিলোমিটার পথের
মধ্যে ৬০ কিলোমিটারে বেশি রেললাইন বসে গেছে। কঙবাজার সাইটে কাজ এগিয়ে গেছে বেশ। প্রকল্পের বেশির ভাগ ব্রিজ–কালভার্ট নির্মাণ শেষ হয়েছে। যেগুলো বাকি আছে সেগুলোও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।