উচ্চ শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

হাবীবুর রহমান | মঙ্গলবার , ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ at ৬:৪৯ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রামের পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি যাত্রা শুরু করে ২০১৩ সালে। তখন শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল মাত্র ৬৯ জন। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে দেশি বিদেশী মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত রয়েছে। গুণগত শিক্ষাদানে গুরুত্ব দিয়ে আসা পোর্ট সিটি মাত্র এক দশকেই উচ্চ শিক্ষার অন্যতম প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। এর নেপথ্যে কাজ করেছে শিক্ষার্থীদের নানামুখী আধুনিক শিক্ষা সুবিধা প্রদান করা। বর্তমানে চারটি অনুষদের অধীনে ১০টিরও বেশি বিষয়ে পাঠদান চলমান রয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে। এর মাঝে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং, কম্পিউটার সায়েন্স, ন্যাচারাল সায়েন্স, জার্নালিজম এ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ, আইন, ইংরেজি, ফ্যাশন ডিজাইন ও ব্যবসায় প্রশাসন উল্লেখযোগ্য।

শিক্ষাদানে নিয়োজিত রয়েছেন পূর্ণকালীন ও খণ্ডকালীন মিলিয়ে ১৫০ জনের বেশি শিক্ষক। নগরীর কল্পলোক এলাকায় শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির স্থায়ী ক্যাম্পাসের অবকাঠামো উন্নয়নের কাজ। বিশ্ববিদ্যালয়টি জানিয়েছে, ইতিমধ্যে দুইটি সমাবর্তনের মাধ্যমে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী সনদ লাভ করেছেন। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জনের মুকুটে যুক্ত করেছে সোনালী পালক। বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্য হচ্ছে, উচ্চ শিক্ষায় উৎকর্ষ অর্জন স্লোগান নিয়ে শিক্ষার্থীদের দেশ ও জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধ সম্পন্ন সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা। বিশ্ববিদ্যালয়ে বিতর্ক ক্লাব, স্পোর্টস্‌ ক্লাব, সাংস্কৃতিক ফোরাম, রোবটিক্স ক্লাবসহ আরও অন্যান্য ক্লাব ও ফোরামের কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। এছাড়া বিভিন্ন দিবস উদযাপন উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতা যেমন রচনা প্রতিযোগিতা, উপস্থিত বক্তৃতা, আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন প্রভৃতির আয়োজনও হচ্ছে নিয়মিত। শিক্ষার্থীদের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা সুযোগসুবিধার মধ্যে রয়েছে ইলাইব্রেরী, আধুনিক ক্লাসরুম ও গবেষণাগারসহ নানান সুযোগ সুবিধা। প্রতি ট্রাইমেস্টারে আয়োজন করা হয় সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, ওয়ার্কশপ ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল ভিজিট। পাশাপাশি আয়োজন করা হয় মাঠপর্যায়ের নানামুখী ব্যবহারিক প্রশিক্ষণেরও। আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সাফল্যের সাক্ষর রাখছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। ইতোমধ্যে কানাডার দ্য নোবেল ইনস্টিটিউট অব এনভায়রনমেন্টাল পিস, ফিলিপাইনের প্যানপ্যাসিফিক ইউনিভার্সিটি ও লাইসিয়াম অব দ্য ফিলিপাইনস ইউনিভার্সিটি, চীনের নানস্যাং ইউনিভার্সিটি, ভারতের কলিঙ্গ ইনস্টিটিউট অব ইনডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজি, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি, রোমানিয়ার দানুবিয়াস ইউনিভার্সিটি অব গালাটি, অস্ট্রেলিয়ার ক্রাউন ইনস্টিটিউট অব হাইয়ার এডুকেশনসহ বিদেশি স্বনামধন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে রয়েছে সমঝোতা স্মারক। এছাড়া এই বিশ্ববিদ্যালয় অর্জন করেছে অস্ট্রেলিয়ার একাডেমি অব বিজনেস লিডারশিপের আজীবন সদস্যের সম্মান। একাডেমিক এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামের ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয় এসব সমাঝোতা স্মারকের মাধ্যমে।

বিশ্ববিদ্যালয়সূত্র জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীমের দূরদর্শী ও উদ্ভাবনী চিন্তাভাবনার প্রয়োগক্ষেত্র ও ফলাফল এ বিশ্ববিদ্যালয়। তাঁর ভাবনার সাথে মিল রেখে শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য পূরণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককর্মকর্তাকর্মচারী সবাই মিলে নিশ্চিত করে যাচ্ছে গুণগত শিক্ষা ও মানসমপন্ন শিক্ষাদানের পরিবেশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী, গরীব, পার্বত্য অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত এবং মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও একই পরিবারের শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে বৃত্তির ব্যবস্থা। লেখাপড়ার পাশাপাশি অনেক গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীর জন্য খণ্ডকালীন ‘ক্যাম্পাস জবের‘ ব্যবস্থাও রয়েছে এখানে। বৈশ্বিক জ্ঞানের সাথে সংযোগ তৈরির জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয় ৩০ জন শিক্ষককে যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উ”চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে।

এই ধারা ভবিষ্যতেও চলমান রাখার জন্য নেয়া হচ্ছে নানান পদক্ষেপ। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো থেকে শুরু করে সুযোগসুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে অনেক গুণ। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত অত্যাধুনিক ক্লাসরুম, ডিজিটাল লাইব্রেরি, অত্যাধুনিক গবেষণাগার, কমনরুম ও খেলাধুলায় সুযোগসহ শিক্ষাবান্ধব বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রত্নগর্ভা বেগম আশ্রাফুন্নেসা লাইব্রেরিতে রয়েছে ১৩ হাজারেরও বেশি বইয়ের সংগ্রহ। প্রতিষ্ঠার মাত্র তিন বছরেই আয়োজন করে টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক দুইটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন। করোনাকালে দেশের লাখো শিক্ষার্থী যখন শিক্ষাজীবন নিয়ে শঙ্কায় ছিল তখন আধুনিক শিক্ষাপ্রযুক্তি ব্যবহার করে অনলাইনভিত্তিক একাডেমিক কার্যক্রম চালু করেছিল পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। সেশন জটে থেকে রক্ষা পেয়েছিল হাজারো শিক্ষার্থীর জীবন। ফলে যেকোনো সংকটকালেও শিক্ষার্থীঅভিভাবকদের কাছে দায়িত্বশীলতা আর আস্থার প্রতীকে পরিণত হয়ে উঠেছে চট্টগ্রামের জনপ্রিয় এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। অনলাইন শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনার সাফল্যে বিশ্ববিদ্যালয়টি সারা দেশে ষষ্ঠ স্থান অর্জন করে বলে উঠে আসে তখনকার গবেষণায়। লেখক : স্টাফ রিপোর্টার, দৈনিক আজাদী

পূর্ববর্তী নিবন্ধআমাদের উদ্দেশ্য জ্ঞান ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামের সিনেমা হল ও সিনেমার সেকাল-একাল