অবশেষে ফিরছে প্রাণ

বিসিক মীরসরাই

মীরসরাই প্রতিনিধি | শনিবার , ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ at ৪:০৩ পূর্বাহ্ণ

দীর্ঘ এক যুগের সরকারি রুটিন কার্যক্রমের দীর্ঘসূত্রতার বেড়াজাল অতিক্রম করে অবশেষে জমে উঠতে বসেছে ক্ষুদ্র ও কুঠির শিল্প কর্পোরেশনের অন্তর্ভূক্ত মীরসরাই উপজেলা সদরস্থ বিসিক এলাকাটি। করোনার করাল ঘ্রাসের ধকল পেরিয়ে নানা প্রতিকূলতায় যখন পুরো পৃথিবী হতাশার কবলে, ঠিক তখনি মীরসরাই উপজেলার কিছু প্রান্তিক ও মধ্যবিত্ত মানুষের মনে আশা আর স্বপ্ন নিয়ে এগুতে শুরু করলো সদর এলাকার এই বিসিক এলাকাটি। ইতিমধ্যে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান দৃশ্যমান হয়ে উঠায় প্রত্যাশা উজ্জ্বিবিত হচ্ছে স্বপ্ন প্রিয় মানুষগুলোর। কর্তৃপক্ষ জানায় এই বিসিককে পুরোদমে প্রাণ সঞ্চারের আরো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে শীঘ্রই।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে ২০১০-২০১১ অর্থ বছরে উক্ত প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। ১৫.৩২ একর জমির অধিগ্রহণ করে প্রায় ২৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা ব্যয় করে প্রকল্পের প্রাথমিক অবকাঠামো চূড়ান্ত করা হয়েছিল। ২০২১-২২ অর্থবছর নাগাদ প্রকল্প এলাকায় বিসিকের নিজস্ব প্রশাসনিক ভবনসহ পর্যায়ক্রমে ৮৮টি ক্ষুদ্র শিল্প বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। প্রকল্পে প্রবেশের মুখে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সম্মুখভাগে একটি ও প্রকল্পের উত্তর পাশে স্টেশন সড়কে একটি গেইট করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান অবকাঠামো নির্মাণসহ নির্ধারিত প্রকল্প বাস্তবায়ন করে উৎপাদমুখি কার্যক্রম শুরু ও করেছে।
বিসিক সূত্রে জানা গেছে, ৪টি প্রতিষ্ঠান বর্তমানে উৎপাদন শুরু করলেও আরো ৫টি প্রতিষ্ঠান শীঘ্রই স্থাপনা নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। আবার পর্যায়ক্রমে সকল প্লট মালিককেই শিল্প উদ্যোগের জন্য তাগাদা দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। উক্ত প্রকল্প বিষয়ে জানতে চাইলে উক্ত বিসিকের তদারকি কর্তৃপক্ষ বিসিক চট্টগ্রামের উপ মহা-ব্যবস্থাপক নিজাম উদ্দিন বলেন, মীরসরাই সদরস্থ উক্ত বিসিক এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ শিল্প উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতকল্পে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বর্তমান বরাদ্ধকৃত প্লট ছাড়াও আরো অনেক প্লটের আগ্রহী আবেদনকারী রয়েছে। সম্ভাবনা ও উদ্যোক্তাগণের আগ্রহের দরুণ আমরা ইতিমধ্যে উক্ত বিসিক এলাকাকে আরো সম্প্রসারিত করতে সংযুক্ত পূর্বদিকে আরো ১৫ একর জমি অধিগ্রহণের প্রস্তাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রদান করেছি। প্রকল্প শুরু হওয়ার প্রায় এক দশক হয়ে গেল, সবেমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক প্রাণ ফিরে পাচ্ছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে এমন ধীরগতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আরো আগেই এই বিসিকটি অনেক সরগরম হয়ে উঠতো। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক অর্থনীতির মন্দাভাবসহ কিছু প্রতিকূলতা এর গতির ব্যাঘাত করেছে। তবে সকল প্রতিকূলতা কাটিয়ে এই প্রকল্পটি শীঘ্রই বেশ প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

এই বিষয়ে মীরসরাইয়ের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমান বলেন, মীরসরাই উপজেলা এলাকায় কিছু কুঠির শিল্প তথা এই অঞ্চলের ঐতিহ্যমন্ডিত পাটিপাতা, বেত, বাঁশ ও করেরহাটের উপজাতীয় তাঁত শিল্প সহ এই অঞ্চলের সকল প্রাচীণতম লোক ঐতিহ্য সংরক্ষণে একটি প্রাতিষ্ঠানিক লক্ষ বিসিক কর্তৃপক্ষ বা বিকল্প উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। সরকারি হোক বেসরকারি ব্যবস্থাপনা হোক এই বিষয়টি প্রধান্য দেয়ার জন্য তিনি বিসিক কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষন করেন।
উল্লেখিত বিষয়ে বিসিক উপ মহা-ব্যবস্থাপক নিজাম উদ্দিন বলেন, এই বিষয়েও আমি আমাদের সভায় আলোচনা রাখবো, কীভাবে এই বিষয়ে প্রতিষ্ঠানিক উদ্যোগ নেয়া যায় আমরা তার প্রস্তাবনা ও পেশ করবো।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএমন আয়োজন পথ দেখাবে নারীদের
পরবর্তী নিবন্ধআগামী বছর মন্দার ঝুঁকি দেখছে বিশ্ব ব্যাংক