শ্বশুর-শাশুড়ি-শ্যালক ও স্ত্রী গ্রেপ্তার

বায়েজিদে যুবক খুনের ঘটনা

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১৯ জুন, ২০২৫ at ১০:৪১ পূর্বাহ্ণ

নগরীর বায়েজিদের মাঝের ঘোনা গলাচিপা এলাকায় হানিফ নামের এক যুবককে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে খুনের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় হানিফের স্ত্রী, শ্বশুর, শাশুড়ি এবং শ্যালক ও তার এক বন্ধুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পারিবারিক কলহের জেরে হানিফ ও তার স্ত্রী নুরজাহান আক্তার আঁখি আলাদাভাবে বসবাস করতেন। নুরজাহান থাকতেন তার বাবার বাড়িতে। তিন বছরের শিশু সন্তানকে দেখতে মাঝেমধ্যে সেখানে যেতেন হানিফ। বিষয়টি মেনে নিতে পারতেন না নুরজাহানের পরিবার।

সর্বশেষ গত ১৫ জুন ভোরে শিশু সন্তানের অসুস্থতার কথা জানতে পেরে বায়েজিদের মাঝের ঘোনা গলাচিপা কাঁচা রাস্তার মোড় এলাকায় থাকা নুরজাহানদের সেই বাড়িতে গেলে হানিফের সাথে তর্কাতর্কির ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে শ্বশুর, শ্যালক ও শ্যালকের বন্ধু মিলে হানিফকে ছুরিকাঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এতে সহযোগিতা করেন হানিফের স্ত্রী ও শাশুড়ি। পুলিশ জানায়, জাতীয় জরুরি সেবার হটলাইন নম্বর ৯৯৯ এ সংবাদ পেয়ে হানিফের লাশ উদ্ধার করা হয় এবং প্রথমে তার স্ত্রী ও শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে হানিফের শ্বশুর, শ্যালক ও শ্যালকের বন্ধুকেও গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত ৫ জন হলেন, হানিফের শ্বশুর খোরশেদ মোল্লা, শ্যালক আরিফ মোল্লা, তার বন্ধু দেলোয়ার হোসেন বাবু, হানিফের স্ত্রী নুরজাহার আক্তার আঁখি ও শাশুড়ি রহিমা বেগম। এদের মধ্যে নুরজাহান ও তার মাকে ঘটনাস্থল থেকে, খোরশেদকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গেইট থেকে এবং আরিফ ও বাবুকে নগরীর প্রবর্তক মোড় এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পুলিশ আরো জানায়, হানিফ হত্যার ঘটনার তার বাবা জামাল মিয়া বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি তদন্ত করছেন বায়েজিদ থানার এসআই কাজী আবিদ হোসেন।

তিনি জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, নুরজাহান তার বাবার বাড়িতে থাকতেন। তিন বছর বয়সী সন্তানকে দেখতে সেখানে মাঝেমধ্যে যেতেন হানিফ। এ বিষয়টি মানতে পারতেন না শ্বশুর পক্ষের লোকজন।

এ নিয়ে তাদের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ঝগড়া বিবাদ হতো। তবুও হানিফ শ্বশুর বাসায় যাওয়া বন্ধ করেননি। সর্বশেষ গত ১৫ জুন ভোর রাতে শিশু সন্তান অসুস্থ, এমনটা জানতে পেরে সে মাঝের ঘোনা এলাকায় তার শ্বশুর বাড়িতে যান। একপর্যায়ে সেখানে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সাথে তার তর্কাতর্কি হয়। এক পর্যায়ে শ্বশুর খোরশেদ মোল্লা ছুরি দিয়ে হানিফকে আঘাত করে। পরে হানিফ সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করলে আরিফ ও বাবুসহ তিন জনে মিলে তাকে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে। এতে মৃত্যু হয় হানিফের। সবমিলে ১৭ বার ছুরিকাঘাত করা হয়েছে হানিফের শরীরে উল্লেখ করে পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডের পর খোরশেদ মোল্লা ও তার ছেলে আরিফ ঘটনায় বৃবহৃত দুটি ছুরি ঘরে নিয়ে গিয়ে পরিষ্কার করে ডাইনিং টেবিলের নিচে ও ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারে রেখে দেন। পরে সেখান থেকে ছুরিগুলো উদ্ধার করা হয়।

বায়েজিদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান দৈনিক আজাদীকে বলেন, গ্রেপ্তার খোরশেদ মোল্লা ও তার ছেলে আরিফ মোল্লা গত মঙ্গলবার আদালতে ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবয়কট থেকে ঐকমত্যের বৈঠকে ফিরে জামায়াত পেল উষ্ণ অভ্যর্থনা
পরবর্তী নিবন্ধস্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে খালেদা জিয়া