রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কীভাবে

ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় বর্তমান বিধান পরিবর্তনে একমত সব দল

| শুক্রবার , ২০ জুন, ২০২৫ at ৬:৪৯ পূর্বাহ্ণ

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কিভাবে হবে তা চূড়ান্ত না হলেও বর্তমান বিধান পরিবর্তনে সবাই একমত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। এছাড়া দ্বিকক্ষ আইনসভা নিয়ে অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। ১০০ সদস্য বিশিষ্ট হওয়ার ক্ষেত্রেও একমত হয়েছে। তার মানে এই নয় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে আরও সংশ্লিষ্ট বিষয় রয়েছে, যেগুলো ঐকমত্য হলে পরে জানানো হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপ শেষে বিকেলে তিনি এ কথা জানান।

টানা তৃতীয় দিনের বৈঠকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, আমাদের হাতে সময় এত স্বল্প, খুবই স্বল্প সময়। জুলাই মাসের মধ্যেই এটার একটা চূড়ান্ত পরিণতি জাতীয় সনদ তৈরি করতে হবে। বৈঠক শেষে তিনি জানান, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্বের আলোচনায় বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল জানিয়েছে, আপাতত তিন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে যার সব কটিই ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতির অন্তর্ভুক্ত। অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনায় সুস্পষ্ট হয়ে ওঠে প্রত্যেক রাজনৈতিক দল স্মরণ করিয়ে দেয় এর সঙ্গে পার্লামেন্টের দ্বিকক্ষ জড়িত। রাষ্ট্রপতি কীভাবে নির্বাচিত হবেন, সেক্ষেত্রে উচ্চকক্ষ কীভাবে হবে তার পেছনে আমরা দ্বিকক্ষ পার্লামেন্ট নিয়ে আলোচনা করেছি। তিনি বলেন, আমাদের আলোচনায় বিভিন্ন রকম মত থাকলেও আলোচনাটি অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণভাবে হচ্ছে। প্রত্যেকেই মতামত দিচ্ছে। আজকে আমরা সবাই একমত হয়েছি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের যে পদ্ধতি রয়েছে তা পরিবর্তন হওয়া দরকার।

বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন বলেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে ইলেক্টোরোল পদ্ধতির বিষয়ের রাজনৈতিক দলগুলো বিভিন্ন মতামত দিয়েছেন, এর মধ্যে বেশি মতামত এসেছে উচ্চকক্ষনিম্ন কক্ষের সদস্যদের গোপন ব্যালাটের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করার। এখনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যায়নি। তবে সবগুলো রাজনৈতিক দল গোপন ভোটের পক্ষে একমত হলে তাতে একমত বিএনপি।

জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের নায়েবে আমির আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের সাংবাদিকদের বলেন, সংসদ দ্বিকক্ষবিশিষ্ট হলে এবং নারী আসন ১০০ হলে উচ্চকক্ষ এবং নিম্নকক্ষ মিলিয়ে ৫০০ ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। অনেকে আবার জেলা পরিষদ এবং সিটি কর্পোরেশন মিলিয়ে আরও অতিরিক্ত ৭৬ ভোট অন্তর্ভুক্ত করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেন, প্রক্রিয়া যাই হোক, আমরা এঙটেন্ডেড ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতিকে সমর্থন করি। পাশাপাশি গোপন ব্যালটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য সুপারিশ করেছি। জামায়াতের সব অভ্যন্তরীণ নির্বাচন গোপন ব্যালটে হয়; দেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনও সেভাবেই হওয়া উচিত।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রসঙ্গে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা চলছে। অনেকে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ইউনিয়ন পরিষদকেও অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলেছেন। এতে করে ৫৭৬ ভোটের বাইরে আরো ৭০ হাজার অতিরিক্ত ভোট যুক্ত হবে।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন বিষয়ে আমরা একমত এবং এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে ছাড় দিতে পর্যন্ত রাজি আছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধজবাব দিচ্ছে শ্রীলঙ্কা, তৃতীয় দিন শেষে সংগ্রহ ৩৬৮/৪
পরবর্তী নিবন্ধআমদানি করা ফলের চেয়ে দেশীয় ফলের পুষ্টিগুণ অনেক বেশি