মামলা দিয়ে যাদের হয়রানি করা হচ্ছে তথ্যপ্রমাণ না থাকলে দ্রুত তাদের নাম বাদ দিতে সরকারের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়ার কথা তুলে ধরেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। গতকাল সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কোনো ভুক্তভোগী যদি মামলা দেয়, তাকে তো আমরা বলতে পারি না, আপনি মামলা দিয়েন না। তবে পুলিশকে সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে দ্রুত তদন্ত করে মামলার নামে যাদের হয়রানি করা হচ্ছে তাদের বাদ দেওয়ার জন্য। যাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রমাণ নেই, তাদের যেন দ্রুত বাদ দেওয়া হয়।’ খবর বিডিনিউজের।
মেয়াদ নিয়ে আল জাজিরা টেলিভিশনকে দেওয়া প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎকারের বিষয়ে জানতে চাইলে শফিকুল আলম বলেন, ‘তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) বলেছেন, সংবিধানের বিষয়ে অনেক কথাবার্তা হচ্ছে, সেখানে বলা হচ্ছে সংসদের মেয়াদ চার বছরে আনা হোক। এটা কিন্তু অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিষয়ে না। তখন ওনাকে জিজ্ঞেস করা হল আপনার ক্ষেত্রেও চার বছর কি না? তারপর বলেছেন চার বছরের কম। এখানে পরিষ্কার করা হয়েছে, চার বছরের কথা বলা হয়নি। আপনারা ভালোমত শোনেন। আমরা দেখতে পাচ্ছি অনেকেই ভালোমত না শুনে একটা হেডলাইন দিয়ে দিচ্ছেন।’
সরকারের ১০০ দিন পূর্তিতে টিআইবির দেওয়া প্রতিবেদনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য মানুষের নাগালে রাখার জন্য আমরা চেষ্টা করছি। সরকারের উদ্যোগের কারণে ডিমের দাম কমেছে। অন্যান্য দ্রব্যের দামও নিম্নমুখী। গত বছর কাঁচা মরিচের দাম ১২শ টাকা পর্যন্ত হয়েছিল। আমাদের চেষ্টার অন্ত নেই। আমরা দেখলাম দুটো পত্রিকায় আলুর দাম চারশ টাকা। এমন একটা তথ্য দিচ্ছে মনে হচ্ছে মূল আলুর দামই চারশ টাকা। এটা খণ্ডিত চিত্র। মিসলিডিং প্রতিবেদন।’
সংখ্যালঘুদের অধিকারের বিষয়ে সরকার সচেতন জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, ‘পুলিশের দেওয়া অপরাধ পরিসংখ্যান দেখাচ্ছে আইনশৃঙ্খলার ভালো উন্নতি হয়েছে। গত বছরের মত। আমরা মনে করি বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা ভালোর দিকে যাচ্ছে।’
সাংবাদিকের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিলের কারণে নানান আলোচনা–সমালোচনা চলছে, এ নিয়ে সরকারের ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, ‘পিআইডি অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল হওয়ায় যেসব সাংবাদিক মনে করছেন তাদের প্রতি অবিচার হয়েছে, তাদের আবার আবেদন করার সুযোগ রয়েছে। তারা যদি আবেদন করে এবং সরকার যদি মনে তাদের যৌক্তিকভাবে অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড দেওয়া যেতে পারে, সেক্ষেত্রে বিবেচনা করা হবে।’
বিগত সরকারের বিভিন্ন সময়ে প্রায় ৫ হাজার অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড দেওয়ার তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘সেখান থেকে ১৬৭ জন সাংবাদিকের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল করা হয়েছে। আমরা মনে করি না সংখ্যাটা খুব বেশি। গত সরকারের সময় অনেক দলীয় পরিচয়ে সাংবাদিক অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড দেওয়া হয়েছে। তারা এ কার্ডের অপব্যবহার করে সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তদবিরসহ নানান কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল।’