পৃথিবীর যাবতীয় জ্ঞানের সংরক্ষক বই। মানুষের উৎপত্তি থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত অর্জিত সভ্যতার যাবতীয় জ্ঞান সম্পর্কে জানতে হলে বই পড়ার বিকল্প নেই। প্রতিদিন বদলে যাওয়া বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে বইয়ের সাথে গড়ে তুলতে হয় নিবিড় সম্পর্ক। সত্য, সুন্দর ও কল্যাণের পথে ধাবমান মানুষের নিত্যসঙ্গী বই। বিজ্ঞানের বিস্ময়কর আবিষ্কার সম্পর্কে বই পড়ে মানুষ জানতে পারে। আর এই জানায় জীবনকে করে তোলে আনন্দময়। বই মানুষকে কর্মচঞ্চল করে জীবনযুদ্ধে প্রেরণা জোগায়। দুঃখ-বেদনায়, জর্জরিত জীবনে বই পড়ার মাধ্যমে আসে আনন্দ। হাতাশার মাঝে জাগায় নতুন করে আশার আলো। নিঃসঙ্গ মুহূর্তে বই মানুষকে একান্ত বন্ধুর সাহায্য দেয়। মানুষের সমস্ত অর্জন শেষ হয়ে গেলেও বই থেকে পাওয়া জ্ঞান থাকে চির অম্লান। ফারসি সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি ওমর খৈয়ামের কবিতায় আমরা বইয়ের চিরযৌবনা রূপটি পাই ‘রুটি, মদ ফুরিয়ে যাবে/ প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে যাবে।/ কিন্তু বইখানা অনন্ত যৌবনা,/ যদি তেমন বই হয়’। সব বই-ই যে মানুষের জীবনকে আনন্দময়, কল্যাণময় করে তোলে- তা নয়। বই নির্বাচন করাটাও খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ একজন পাঠক কোন ধরনের বই পড়বে, এটা পাঠকের রুচির প্রধান বিবেচ্য। বই পড়ে যদি মানসিক পরিতৃপ্তি লাভ করা যায় সেই বই নির্বাচন করতে হবে নিজের জানা-বোঝার আগ্রহের উপর। সত্য, সুন্দর, কল্যাণ সম্পর্কে জ্ঞান দান করতে পারে সেই ধরনের বই পড়ায় গুরুত্ব দেওয়া উচিত। একটি ভালো বই মানুষের সবচেয়ে অন্তরঙ্গ বন্ধু হয়ে উঠতে পারে। কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, জীবনানন্দ দাস, সুকান্ত ভট্টাচার্য, জসীমউদ্দিন, শামসুর রাহমান, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়, সৈয়দ ওয়ালী উল্লাহ, তাঁদের বই পড়ে বাংলা সাহিত্যের বহুমুখী রস আস্বাদন করা যায়। তাই প্রতিটি মানুষেরই বইয়ের সাথে সখ্যতা গড়ে তোলা উচিত।