প্রকাশনা, মোড়কজাত ও ওষুধ শিল্পের প্রধান কাঁচামাল পেপার ও পেপার বোর্ড আমদানিতে প্লাস্টিক শিল্পের অনুরূপ শুল্ক কর (সিডি) ৫ শতাংশ বা তারও কম করার দাবি জানিয়েছে কাগজ উৎপাদনকারী ব্যবসায়ীদের বিভিন্ন সংগঠন।
গতকাল রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের আবদুস সালাম হলে আসন্ন প্রাক–বাজেট উপলক্ষে বাংলাদেশ পেপার ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পেপার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, মেট্রোপলিটন প্রেস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ এবং চট্টগ্রাম কাগজ ও সেলোফিন ব্যবসায়ী গ্রুপ কর্তৃক আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ব্যক্তিগত, কোম্পানি আয়করের ওপর অডিট আপত্তির বিপরীতে আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল দায়ের করতে হলে আপত্তিকৃত মোট টাকার ওপর ১০ শতাংশ সরকারি কোষাগারে জমা করার বিধান রয়েছে এবং উচ্চ আদালতে আপিল দায়ের করার ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ জমা করার বিধান রয়েছে। এমতাবস্থায় সরকারের কাছে উভয়ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ করার দাবি জানাচ্ছি। কিছু অসাধু কর্মকর্তা অনৈতিক সুবিধা আদায়ের উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যক্তিগত, কোম্পানি আয়করের ওপর অযাচিত অডিট আপত্তি দিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে ৫ শতাংশ করা হলে অসাধু কর্মকর্তাদের দৌরাত্ম্যও কিছুটা কমে আসবে। এতে আরও বলা হয়, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ গত ২০ ফেব্রুয়ারি একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দরের অভ্যন্তরে এবং কমলাপুর আইসিডিতে আমদানিকৃত এফসিএল কন্টেনারের কমন ল্যান্ডিং ডেটের অষ্টম দিন থেকে প্রযোজ্য স্ল্যাবের চার গুণ হারে স্টোর রেন্ট আরোপ করেছে। ঈদের ছুটির ১–২ দিন আগে থেকে আসা কন্টেনারসহ ছুটির মধ্যে বন্দরে আসা কন্টেনার নির্ধারিত চারদিনের মধ্যে খালাস করা সম্ভব ছিল না।
এছাড়াও বন্দর বা আইসিডি থেকে মালামাল খালাসে বন্দর কর্তৃপক্ষ ছাড়াও অন্যান্য এজেন্সি, ব্যক্তির সম্পৃক্ততা থাকে এবং এসব ডকুমেন্টেশন প্রসেসিংয়ে অনেক সময় লেগে যায়।
আমদানিকারকদের ওপর এরূপ অযৌক্তিক উচ্চহারে স্টোর রেন্ট আরোপের ফলে শিল্প উৎপাদন বা অভ্যন্তরীণ ব্যবহার উভয় ক্ষেত্রে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাবে এবং ব্যবসায়ীরা অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। এমতাবস্থায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃক স্টোর রেন্ট আরোপের সিদ্ধান্ত বাতিলেরও দাবি জানায় সংগঠনগুলো।
বাংলাদেশ পেপার ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. শফিকুল ইসলাম ভরসা বলেন, বন্ড ব্যবসায়ীরা খোলা বাজারে পণ্য ছেড়ে দেন। এতে তাদের সঙ্গে বাজারে পেরে ওঠা যায় না। যদি শুল্ক কর ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়, তাহলে দেশের রাজস্বে হাজার কোটি টাকা যুক্ত হবে। অন্য ব্যবসায়ীদের আঘাত দিয়ে ব্যবসা করতে চান না জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা কাউকে ব্যবসায়িক কথাবার্তায় আঘাত দিতে চাই না। তাই আমরা নীতিমালাগত সহায়তা চাই। প্লাস্টিক সেক্টরের এখন প্রায় সবাই বৈধভাবে ব্যবসা করছে ৫ শতাংশ শুল্ক কর নামিয়ে আনার জন্য।
চট্টগ্রাম কাগজ ও সেলোফিন ব্যবসায়ী গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বেলাল বলেন, কিছু অসাধু কর্মকর্তা অনৈতিক সুবিধা আদায়ের উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে আয়করের উপর অযাচিত অডিট আপত্তি দিয়ে থাকেন। মূলত ব্যবসায়ীদের হয়রানি করতে এটাকে মূল অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেন এনবিআরের কর্মকর্তারা।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পেপার ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ–সভাপতি খোরশেদ আলমসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কাগজ আমদানিকারকগণ।