মাহে রমজানের সওগাত

মুহম্মদ মাসুম চৌধুরী | রবিবার , ২৪ এপ্রিল, ২০২২ at ৫:৩১ পূর্বাহ্ণ

প্রত্যেক ধনবান প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমানের যাকাত আদায় করা ফরজ। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক ৮২ বার নামাজ ও যাকাতের কথা যুক্তভাবে বলেছেন। যাকাতের কারণে মানুষের সম্পদ ত্রুটিমুক্ত হয়। মানুষের নিকট আল্লাহ প্রদত্ত ধনের ৪০ ভাগের ১ ভাগ বণ্টন করে অবশিষ্টাংশ সম্পদ ভোগ করার অনুমতি দিয়েছেন। মুফতি আহমদ এয়ার খান নাঈমী (রহ.) তাঁর রচিত গ্রন্থ ‘আছরারুল আহকামে’ বর্ণনা করেছেন, বনী ইজরাঈলের উপর সম্পদের এক চতুর্থাংশ যাকাত ফরজ ছিল। হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর উম্মতরা নেকির দশগুণ সওয়াব পান বলে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সম্পদের এক চল্লিশাংশ ফরজ করেছেন, যাতে তা দশগুন হয়ে চতুর্থাংশের সওয়াব পাওয়ার উপযোগী হয়।

পৃথিবীর মানুষের কাছে প্রিয়বস্তুর মধ্যে ধন-সম্পদ অন্যতম। বহু কষ্টে অর্জিত ধন-সম্পদ অন্যকে বণ্টন করে দেয়া কঠিন ও ত্যাগের কাজ। মহান আল্লাহকে ভালবেসে এই কঠিন কাজটি সম্পাদন করছে কিনা পরীক্ষা করতে বান্দার উপর যাকাত ফরজ করেছেন। কৃপণতা মানুষের মনে মলিনতা সৃষ্টি করে। কৃপণতার মলিনতা থেকে স্বীয় মনকে পবিত্র করার একমাত্র উপায় হল যাকাত প্রদান। তাই যাকাত প্রদানকারী আল্লাহ রাব্বল আলামীনের প্রিয় পাত্র। যাকাত প্রদান না করলে মানুষের হৃদয় পাষাণ হয়ে যায়। সম্পদশালীদের এই মন্দ স্বভাব থেকে মুক্ত করার শিক্ষা যাকাতই দিয়ে থাকে। যাকাত প্রদানের মাধ্যমেই মানুষে মানুষে সৌহার্দ্য সম্প্রীতি সৃষ্টি হয়, সহানুভূতি সহনশীলতার মতো সৎগুণের চর্চা হয়।

যাকাতের গুরুত্ব সম্পর্কে বর্ণনা করতে গিয়ে হযরত ওমর বিন আবদুল আজিজ (র.) বলেছেন, নামাজ আমাদেরকে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট অর্ধপথ নিয়ে যায়, রোজা দরজা পর্যন্ত পৌঁছে দেয়, আর যাকাত প্রবেশের অধিকার প্রদান করে।

লেখক মুহাম্মদ আবুদল হাই নদভীর ভাষায় বলতে চাই, ‘যাকাত ভ্রাতৃত্বের পরোক্ষ সাক্ষী, সাম্যের আর্থিক ভিত্তি, সামাজিক কল্যাণের রক্ষক এবং রাষ্ট্রীয় উন্নতির পরিপোষক। যাকাত অর্থনৈতিক বৈষম্যর পথকে রোধ করে, অর্থনৈতিক সাম্যের পথকে উন্মুক্ত করে এবং দেশে শৃক্সখলার পথকে সুগম করে দেয়।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধজব্বারের বলী খেলা কাল
পরবর্তী নিবন্ধকালুরঘাট সেতু মেরামতে চুক্তি শীঘ্রই