মাহে রমজানের সওগাত

মুহম্মদ মাসুম চৌধুরী | রবিবার , ১৭ এপ্রিল, ২০২২ at ৪:৫৭ পূর্বাহ্ণ

পবিত্র রমজান মাসের ফজিলত ও মর্যাদা অসীম। এই মাস ক্ষমা, রহমত ও জাহান্নাম হতে মুক্তির মাস। রমজান শুধু পানাহার ও স্ত্রী সঙ্গম হতে বিরত রাখে না, সকল অন্যায় ব্যভিচার থেকেও বিরত রাখে। রোজার মাধ্যমে শরীরের রিপু দমন, প্রাণের সজীবতা সাধন এবং ইবাদতের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পায়। ধৈর্যের শিক্ষা, ক্ষুধিতের প্রতি দয়া, নৈতিক শৃঙ্খলা ও আল্লাহর উপর অটল বিশ্বাস সৃষ্টি হয় রমজানের মাধ্যমে।
আল্লাহ পাক মানুষকে মুত্তাকি, খোদাভীরু এবং সত্যিকার মুসলমান হিসেবে গড়ে তুলতে দীর্ঘ একমাস রোজা পালন করা ফরজ করেছেন। রোজা কোনো নতুন বিধান নয়, বিভিন্ন পদ্ধতিতে পূর্ববর্তী সকল নবীর সময়ও রোজা ফরজ ছিল। মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কোরআনে ঘোষণা করেছেন, হে ঈমানদারগণ! তোমাদের উপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর ফরজ করা হয়েছিল। যাতে তোমরা মুত্তাকি হতে পার। (সূরা বাকারা, আয়াত : ১৮৩)
পৃথিবীতে আগমনকারী প্রথম মানুষ ও নবী হযরত আদম (আ.) যখন নিষিদ্ধ গাছের ফল খেলেন তখন আল্লাহ পাক ওহী নাজিল করে বললেন, হে আদম! আমার নিকট হতে নেমে যাও। আমার ইজ্জতের শপথ, যে ব্যক্তি আমার অবাধ্য সে আমার নিকট অবস্থান করতে পারবে না। অতঃপর হযরত আদম (আ.) মলিন মুখে পৃথিবীতে নেমে গেলেন। তখন ফেরেস্তাগণ সেজদায় পতিত হয়ে প্রার্থনা করলেন, হে প্রভু! আপনি নিজ হাতে যাঁকে সৃষ্টি করেছেন এবং জান্নাতে স্থান দিয়েছেন, একটি মাত্র ভুলের কারণে তাঁর সকল উজ্জ্বলতা পরিবর্তন করে দিলেন?
অতঃপর আল্লাহর পক্ষ হতে ওহী নাজিল হল- হে আদম! আমার উদ্দেশ্যে (মাসের ১৩ তারিখ) রোজা রাখ। আদম (আ.) রোজা পালন করলেন। ফলে তাঁর শরীরের এক তৃতীয়াংশ সাদা হয়ে গেল। আল্লাহ পাক পুনরায় ওহী প্রেরণ করলেন- হে আদম! আমার জন্য (মাসের ১৪ তারিখ) রোজা রাখ। আদম (আ.) রোজা রাখলেন। ফলে তাঁর দেহের দুই-তৃতীয়াংশ সাদা হয়ে গেল। পুনরায় আল্লাহ পাক তাঁর নিকট ওহী প্রেরণ করলেন- হে আদম! তুমি আমার উদ্দেশ্য (মাসের ১৫ তারিখ) রোজা রাখ। আদম (আ.) রোজা রাখলেন। তারপর তাঁর সমস্ত শরীর সাদা হয়ে গেল। অতঃপর এইদিনগুলোর নাম রাখা হল আইয়ামুল বীয অর্থাৎ শ্বেত দিবস। তাই এইদিনগুলোকে পাপ হতে মুক্তির দিন বলে বর্ণনা আছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস আজ
পরবর্তী নিবন্ধকারাগারে মায়ের সঙ্গে ৬৩ নির্দোষ শিশু