কাপ্তাইয়ে হাতির আক্রমণে অজ্ঞাত নারীর মৃত্যু

৬ বছরে মৃতের সংখ্যা ১৭, বাড়ছে আতংক

কাপ্তাই প্রতিনিধি | শুক্রবার , ২২ এপ্রিল, ২০২২ at ৫:৩৪ পূর্বাহ্ণ

কাপ্তাইয়ে বন্য হাতির আক্রমণে নাম পরিচয়হীন এক মানসিক প্রতিবন্ধী নারীর মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার গভীর রাতে কাপ্তাই নৌবাহিনী সড়কে। ঐ নারীর বয়স আনুমানিক ৪০ বছর হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর পেয়ে বন বিভাগ, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, পুলিশ এবং দমকল বাহিনীর লোকজন ঘটনাস্থলে ছুটে যান। এ সময় সড়কের বিভিন্ন স্থানে ঐ নারীর শরীরের ছিন্নভিন্ন অংশ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মানসিক প্রতিবন্ধী ঐ নারী বুধবার রাতে কাপ্তাই নৌবাহিনী সড়কে একা হাঁটছিলেন। এ সময় সড়কের উপর ১৫ থেকে ২০টি বন্য হাতি অবস্থান করছিল। হঠাৎ ঐ নারী বন্য হাতির মুখোমুখী পড়ে যায়। এ সময় একটি হাতি ঐ নারীকে সুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে ধরে আছাড় মারে এবং হাত পা মাথা ছিন্নভিন্ন করে ফেলে।
কাপ্তাই রেঞ্জ কর্মকর্তা খন্দকার মাহামুদুল হক মুরাদ জানান, বুধবার সারাদিন বৃষ্টি হয়। বৃষ্টির কারণে বন্য হাতির দল রাস্তার উপর উঠে আসে। ঐ নারী হাঁটার সময় হঠাৎ বন্য হাতির সামনে পড়লে ঐ দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কাপ্তাই নৌবাহিনী সড়কে এর আগেও আরো তিনজন বন্য হাতির আক্রমণের শিকার হয়ে মৃত্যু বরণ করে। এছাড়াও গত ৬ বছরে কাপ্তাইয়ে বন্য হাতির আক্রমণের কবলে পড়ে ১৭ জন মৃত্যু বরণ করেন।
এদিকে বন্য হাতির কবল থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষা করার জন্য স্থানীয় জনগণ বন বিভাগের কাছে বার বার অনুরোধ করে বলে জানা গেছে। কিন্তু বন বিভাগ কার্যকর কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় এভাবে হাতির পায়ে পৃষ্ঠ হয়ে একের পর এক মানুষের মৃত্যু ঘটছে বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ডিএফও ছালেহ মো. শোয়াইব খান বলেন, মূলত খাদ্যের সন্ধ্যানে বন্য হাতি লোকালয়ে উঠে আসছে। আর যে সড়কে বন্য হাতির আনাগোনা বেশি সেখানে জনগণের সুরক্ষা হিসেবে আমরা ‘সোলার ফেঞ্চিং’ বসানোর কাজ শুরু করেছি। সোলার ফেঞ্চিং বসানোর কাজ সম্পন্ন হলে বন্য হাতি আর রাস্তার উপর আসতে পারবে না বলে তিনি জানান। কেননা সোলার ফেঞ্চিং এর সংস্পর্শে আসলেই বন্য হাতি বৈদ্যুতিক শক্‌ অনুভব করবে। এতে হাতির শারীরিক ক্ষতি হবে না কিন্তু ভয় পাবে। ভয়ে হাতি আর ঐ এলাকায় আসতে চাইবে না। আগামী ৬ মাসের মধ্যে সোলার ফেঞ্চিং বসানোর কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্য নিয়ে বন বিভাগ কাজ করছে বলেও তিনি জানান।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসব মার্কেটে উপচে পড়া ভিড় জমজমাট বেচাকেনা
পরবর্তী নিবন্ধকাপ্তাই হ্রদে তিন মাস মাছ ধরা বন্ধ