মহামারীকালে রপ্তানিতে বাড়ছে পাট ও ওষুধের অবদান

| বৃহস্পতিবার , ৫ নভেম্বর, ২০২০ at ৬:০০ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশের রপ্তানিতে তৈরি পোশাকের অবদান কমে আসার বিপরীতে বাড়ছে ওষুধ এবং পাট রপ্তানি। মহামারীকালে তা আরও বেড়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ চার হাজার ৫৩ কোটি ৫০ লাখ (৪০.৫৩ বিলিয়ন) ডলার আয় করেছিল। এর মধ্যে তৈরি পোশাক থেকে আয় হয়েছিল তিন হাজার ৪১৩ কোটি ৩২ লাখ (৩৪.১৩ বিলিয়ন) ডলার। অর্থাৎ ওই অর্থবছরে মোট রপ্তানির ৮৪ দশমিক ২০ শতাংশ এসেছিল পোশাক থেকে। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে তা কমে ৮৩ শতাংশে নেমে আসে। আর চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) তা আরও কমে ৮১ দশমিক ৩৫ শতাংশে নেমে এসেছে।
অন্যদিকে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশের মোট রপ্তানি আয়ে পাট ও পাটজাত পণ্যের অংশ ছিল ছিল ২ শতাংশ। ২০১৯-২০ অর্থবছরে তা বেড়ে ২ দশমিক ৬২ শতাংশ হয়। আর চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে তা আরও বেড়ে ৩ দশমিক ৪২ শতাংশ হয়েছে। এই চার মাসে মোট রপ্তানিতে ওষুধ খাতের অংশ হচ্ছে শূন্য দশমিক ৪৩ শতাংশ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে যা ছিল শূন্য দশমিক ৩২ শতাংশ। খবর বিডিনিউজের।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশের রপ্তানিতে তৈরি পোশাকের অবদান কমছে। এ প্রসঙ্গে অর্থনীতির গবেষক পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, এক সময় সময় পাট ছিল আমাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য। কিন্তু তৈরি পোশাক রপ্তানি শুরু হওয়ার পর থেকেই সেই স্থানটি দখল করে নিয়েছে পোশাক খাত। দিন যত গড়িয়েছে, পোশাক রপ্তানি বেড়েই চলেছে। বরাবরই মোট রপ্তানির ৮০ শতাংশের বেশি এসেছে এই খাত থেকে। এক পর্যায়ে এই অংশ প্রায় ৮৫ শতাংশে পৌঁছেছিল। গত কয়েক বছর সেটা খানিকটা কমেছে। এতে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। বিশ্ব বাণিজ্যে এখনও শক্ত অবস্থান দখল করে আছে বাংলাদেশের আরএমজি। ভবিষ্যতে এটা হাতছাড়া হওয়ার ও কোনো আশঙ্কা নেই। উল্টো খুশির খবর যে, ওষুধ ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি আশার আলো জাগাচ্ছে।
পাট রপ্তানির পালে হাওয়া : পোশাক শিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, ধারাবাহিকভাবে বাড়তে বাড়তে মোট রপ্তানিতে আরএমজির অবদান কমেছে। এর প্রধান কারণ হচ্ছে, গত অর্থবছরে সার্বিক রপ্তানি খাতে ধস নেমেছিল। পোশাক রপ্তানি কমেছিল ১৮ শতাংশের বেশি। সে কারণে মোট রপ্তানিও কমেছিল ১৭ শতাংশের মতো।
জুলাই-অক্টোবর সময়ে তৈরি পোশাক রপ্তানি কমেছে ১ দশমিক ২ শতাংশ। অর্থাৎ গত বছরের এই চার মাসের চেয়ে চলতি বছরের চার মাসে ১ দশমিক ২ শতাংশ রপ্তানি আয় কম এসেছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় কমেছে দশমিক ৮৯ শতাংশ।
জুলাই-অক্টোবর সময়ে ৪৩ কোটি ৮৮ লাখ ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ৩৯ দশমিক ৫২ শতাংশ বেশি। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেড়েছে ২০ দশমিক ৪৭ শতাংশ। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ ৮৮ কোটি ২৩ লাখ ডলার আয় করেছে, যা ছিল আগের ২০১৮-১৯ অর্থবছরের চেয়ে ৮ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসিএসইতে লেনদেন ৪২.৮৮ কোটি টাকা
পরবর্তী নিবন্ধশেখ কামাল স্মৃতি সংসদের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত