ঘরে বসেই ভ্রমণ বুকিং এর নতুন পন্থা

| বৃহস্পতিবার , ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ১:০৫ পূর্বাহ্ণ

রহমান সাহেব দীর্ঘ ২০ বছর যাবৎ চট্টগ্রাম শহরে ব্যবসা করছেন। সৌভাগ্যক্রমে ব্যবসার সম্প্রসারণ হয়েছে অনেক দূর। কাজের সুবাদে সিলেট, খুলনা, ঢাকা প্রায়ই যাতায়াত করা লাগে তার। তবে এই মাসে নতুন দিগন্ত উঁকিঝুঁকি মারছে কাজের আড়াল দিয়ে। সুদূর কাতারে সন্ধান পেয়েছেন নতুন সম্ভাবনার। দেশের বিভিন্ন বিভাগের মাঝে প্রতি মাসে কয়েকবার যাতায়াত করা হলেও, কাজের জন্য বিদেশ যাওয়ার সুযোগ রহমান সাহেবের এই প্রথম।

কাতার যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে যতটা উত্তেজনা, তার থেকে বেশি দুশ্চিন্তা আসে রহমান সাহেবের মাথায়। কিভাবে যাবেন? আর কোথায়ই বা থাকবেন? সেই ২০১৪ সালে একবার পরিবার নিয়ে মালয়েশিয়া গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু যাওয়ার পর বুঝতে পারেন ফ্লাইট আর হোটেল দুইটার জন্যই ন্যায্যমূল্যের চেয়ে অনেক বেশি খরচ করেছেন তারা। তাছাড়া হোটেলে সুইমিং পুল, শহরের দৃশ্য ইত্যাদির আশ্বাস নিয়ে বুকিং দিয়েছিলেন এক পরিচিত লোকের মাধ্যমে। কিন্তু যাওয়ার পর দেখতে পারেন এগুলোর কিছুই নেই। এরপর থেকে স্বভাবতই বিদেশ ঘুরা নিয়ে কিছুটা অবিশ্বাস কাজ করা শুরু করেছে তার মধ্যে।

পূর্বপরিচিত কিছু মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে বিভিন্ন রকমের ফ্লাইটের ব্যাপারে শুনতে পান। কিন্তু ফ্লাইটের নানা বিষয়ে আলাদাভাবে খোঁজ নিতে নিতে রহমান সাহেব বিরক্ত। লে ওভার কোথায় এবং কতক্ষণ, লাগেজের সীমা কত কেজি ইত্যাদি তথ্য পেতে সারাদিন সময় লেগে যাচ্ছে তার। আবার দামের মাঝেও কোন সামঞ্জ্যস্যতা খুঁজে পাচ্ছেন না। হোটেল বুকিং এর ব্যাপারটা আরও বিভ্রান্তিকর। ইন্টারনেটের যুগে তিনি নিজেও কিছু ঘাটাঘাটি করে দেখেছেন। কিন্তু যেই হোটেলগুলো অনলাইনে পছন্দ হয় সেগুলো কোনটাই তাই পরিচিত মানুষের কাছে পান না।

বিরক্তির চূড়ান্তে এসে প্রায় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন বিদেশ যাওয়াই বাদ দেওয়ার। এমন সময়ই রহমান সাহেবের ছেলে মেহেদি জানতে পারে বাবার বিভ্রান্তির কথা। ছেলে বাবার গল্প শুনে হেসে দেয়। “দাড়াও, তোমার সব সমস্যার সমাধান আমার ফোনের মধ্যেই আছে।”, বলল মেহেদি। রহমান সাহেব ভাবলেন নতুন কোন এজেন্টের নাম্বার হয়তো। কিন্তু তাকে অবাক করে দিয়ে মেহেদি ফোনে একটা অ্যাপ চালু করলো। অ্যাপটির নাম গোযায়ান। রহমান সাহেব অবাক হয়ে দেখেন যে, সেখানে ফ্লাইট, হোটেল, ট্যুর সব এক জায়গায়ই বুক করার ব্যবস্থা আছে।

মেহেদি বাবাকে দেখালো, কিভাবে চট্টগ্রাম থেকে যেকোন গন্তব্যে পছন্দমত তারিখে ফ্লাইট সিলেক্ট করা যায়। রহমান সাহেব বিস্ময়ের সাথে দেখলেন, যেই কাজের জন্য তিনি ২-৩ দিন ধরে দৌড়াদৌড়ি করে অধৈর্য হয়ে গিয়েছেন, সেই কাজ মুহূর্তের মধ্যে হয়ে গেল ফোনের স্ক্রিনে। হোটেল অপশনে গিয়ে তিনি আরও খুশি। যেই হোটেলগুলো এতদিন শুধু ছবি দেখে পছন্দ করেছেন কিন্তু বুক করে পারেননি, সেগুলোই এখানে আছে। শুধু তাই না, সুইমিং পুল, জিম, বিজনেস সেন্টার ইত্যাদি সবধরনের চাহিদা সার্চ বাটনে ক্লিক করা আগেই সিলেক্ট করা যায়। সাথে আছে রুমের সাম্প্রতিক ছবি, যাতে পর্যটকরা কোনভাবেই প্রতারিত না হন।

“এটা নতুন কোন বিদেশী ওয়েবসাইট নাকি?”, জিজ্ঞাসা করলেন রহমান সাহেব। মেহেদি তাকে জানালো এটা সম্পূর্ণ বাংলাদেশে তৈরি একটি অ্যাপ। তাই বিকাশ, নগদ, উপায় ইত্যাদি এবং সব ধরনের দেশি ব্যাঙ্কের কার্ড ব্যবহার করে পেমেন্ট করা যায়। রহমান সাহেব প্রথমবারের মত নিজেই নিজের পছন্দমত ফ্লাইট আর হোটেল ঠিক করলেন। মনের মাঝে কিছুটা ভয় আর অনিশ্চয়তা নিয়েই পেমেন্ট নিশ্চিত করলেন। কিন্তু পেমেন্ট করার সাথে সাথে গোযায়ান থেকে পেয়ে গেলেন ই মেইল। সেখানে তার বুকিং এর নিশ্চয়তাসহ ফ্লাইট সম্পর্কিত সব ধরনের বাড়তি তথ্য আলাদা ভাবে দেওয়া ছিল, এখন শুধুমাত্র উড়াল দেওয়ার অপেক্ষা।

কাতার থেকে আসার পর থেকে রহমান সাহেবের মেজাজ বেশ ফুরফুরে। প্রায়ই এখানে সেখানে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেন পরিবারবর্গের সাথে। নিজে নিজে বুকিং করতে তার বেশ আনন্দই লাগে। “গোযায়ান ব্যবহারের পর আমি বুঝেছি, ভ্রমণ নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তার কোন কারণই নেই। নতুন করে চিনতে পেরেছি অনেক ভ্রমণের জায়গাও। ছকে বাধা কয়েকটি অ্যাক্টিভিটির বাইরে আগে কিছুই করা হতোনা। কিন্তু গোযায়ান ভ্রমণ নিয়ে আমার ধারণা বদলে দিয়েছে”, জানান রহমান সাহেব।

রহমান সাহেব বর্তমানে কাশ্মীরে কয়েকদিন ঘুরে আসার পরিকল্পনা করছেন। নিজের ভ্রমণের নিয়ন্ত্রণ নিজের হাতে নিতে পারলে, বেশ ভালোই লাগে। সুখবর হলো, গোযায়ান-এর সেবা আপনারাও নিতে পারেন। এখনই এই লিঙ্কে ক্লিক করে ডাউনলোড করে নিতে পারেন তাদের অ্যাপ। ভ্রমণ চলুক সীমাহীন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাঁশখালীতে বন্যহাতির আক্রমণে মহিলার মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা