নিজের বুদ্ধিমত্তায় অপহরণকারী চক্রের কবল থেকে রক্ষা পেল ১৩ বছরের এক শিশু। আলিফ হোসেন নামের ওই শিশু চন্দনাইশের দোহাজারী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড দেওয়ানহাট এলাকার জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে। গতকাল শনিবার সকাল ১১টার দিকে একদল অপহরণকারী তাকে শয়তানের নিঃশ্বাস নামক মেডিসিন ব্যবহার করে কৌশলে সিএনজি টেক্সিতে তুলে সাতকানিয়ার খাগরিয়া নিয়ে যায়। সেখান থেকে নিজ উপস্থিত বুদ্ধির জোরে সে পালিয়ে আসতে সক্ষম হয়।
আলিফের ভাষ্য, শনিবার সকাল ১১টার দিকে সে বাজার নিয়ে বাড়িতে যাওয়ার পথে সড়কে দাঁড়িয়ে থাকা একটি সিএনজি টেক্সি থেকে চার ব্যক্তি তাকে ডাকে। এসময় তারা তাকে ১০ টাকার নোট দিয়ে দোকান থেকে একটি দিয়াশলাই নিয়ে আসার জন্য বলে। দিয়াশলাই নিয়ে আসার পর তারা তাকে একটি কাগজ ও মোবাইল দিয়ে বলে নাম্বারটি মোবাইলে তুলে দিতে। কাগজ ও মোবাইল হাতে নেয়ার পর সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। অনেকক্ষণ পর তার জ্ঞান ফিরলে সে নিজেকে সাতকানিয়ার খাগরিয়া নিয়ে গেছে বুঝতে পারে। এ সময় অপহরণকারীরা তাকে ছুরি ধরে পিতা–মাতার নাম জানতে চায়। ছেলেটি চালাকি করে বলে তার পিতা–মাতা বেঁচে নেই। অপহরণকারীরা অনেক চেষ্টা করেও তার পিতা–মাতার নাম বের করতে পারেনি। এক পর্যায়ে অপহরণকারীরা তাকে আবার সিএনজিতে তুলে নেয়। পথে একটি নির্মাণাধীন ব্রিজে উঠার সময় সিএনজি থেকে ২ জন নেমে গেলে সে দ্রুত লাফ দিয়ে গাড়ি থেকে নেমে যায় এবং দৌড়ে পাশের একটি ফার্মেসিতে ঢুকে পড়ে। এসময় অপহরণকারীরা পালিয়ে গেলে ফার্মেসি মালিক তার মায়ের নাম্বার নিয়ে ফোন দিলে তাকে নিয়ে এসে দোহাজারী হাসপাতালে ভর্তি করে।
ইকবাল নামের ওই ফার্মেসির মালিক জানান, আলিফ নামে ওই শিশুটি দৌড়ে তার দোকানে ঢুকে কান্নাকাটি শুরু করে। এসময় সে কিছুই বলতে পারছিল না। কিছুক্ষণ পর সে তার মায়ের নাম্বার দিলে ফোনে তিনি বিষয়টি পরিবারকে অবহিত করেন। তার মা–বাবাও প্রথমে বিশ্বাস করতে পারছিল না বিষয়টি। পরে তারা গিয়ে ছেলেকে নিয়ে এসে দোহাজারী হাসপাতালে ভর্তি করে।
এদিকে চন্দনাইশের সাতঘাটিয়া পুকুর পাড় বাজার থেকে একই কায়দায় সুমন (৪৫) নামে এক ব্যবসায়ী থেকে ৫ হাজার টাকা নিয়ে যায় বলে জানা গেছে। এ নিয়ে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে চরম ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। শয়তানের নিঃশ্বাস নামক মেডিসিন ব্যবহার করে একটি চক্র চন্দনাইশ–সাতকানিয়ায় এই রকম ঘটনা ঘটাচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে চন্দনাইশ থানায় কেউ অবহিত করেননি বলে জানিয়েছেন থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম সারোয়ার। তিনি জানান, এই রকম একটি গ্রুপ সাতকানিয়ার কেরানীহাটে অবস্থান করছে। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে। ইতিমধ্যে ওই গ্রুপের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।












