পূর্ব শত্রুতার জের ধরে সাতকানিয়ার এওচিয়া ইউনিয়নে প্রতিপক্ষের হামলায় মো. দিদারুল আলম (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। গত ৭জুন রাতে উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের দেওদীঘি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত মো. দিদারুল আলম দেওদীঘির ফয়েজুর রহমান সওদাগর বাড়ির মৃত এজাহার মিয়ার ছেলে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে রোববার ভোরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে চার সহোদরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হলেন দেওদীঘির ফয়েজুর রহমান সওদাগর বাড়ির মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে মো. সরওয়ার আজম (৫০), মো. সাইফুল আজম (৪১), মো. নাজিম উদ্দীন (৩৪) ও মো. নুরুল ইসলাম আজিম (৩০)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মসজিদ কমিটি নিয়ে মো. সরওয়ার আজমদের সাথে বেশ কিছুদিন ধরে দিদারুল আলমদের বিরোধ চলে আসছিল। সামপ্রতিক সময়ে স্থানীয় কোরবানির পশুর হাট নিয়েও দুই পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। ঘটনারদিন গত শনিবার রাতে দিদারুল আলমদের এক স্বজনের বিয়ে সংক্রান্ত বিষয়ে বাড়ির পাশে বৈঠক চলছিল। রাত ১২ টার দিকে প্রতিপক্ষের লোকজন দেশিয় অস্ত্র নিয়ে হঠাৎ দিদারুল আলমদের ওপর হামলা করে। প্রতিপক্ষের হামলায় দিদারুল আলম বুকে আঘাত পেয়ে নিহত হন।
নিহতের ছোট ভাই মো. শহিদুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, স্থানীয় মসজিদ কমিটি নিয়ে তাঁদের সঙ্গে আমাদের বিরোধ ছিল। শনিবার রাতে আমার এক ভাতিজার বিয়ে নিয়ে পারিবারিক বৈঠক চলাকালে সরওয়ার আজমসহ ২০–৩০ জন বৈঠকে এসে হামলা করেন। তাঁদের হাতে থাকা শাবলের আঘাতে আমার বড় ভাই দিদারুল আলম নিহত হয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃত মো. সরওয়ার আজমের ভাগিনা জিল্লুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, মামাদের সঙ্গে মসজিদ কমিটি ও কোরবানির পশুর হাটে চাঁদা তোলা নিয়ে কিছু মানুষের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল সত্য। তবে দিদারুল আলমের সঙ্গে কোনো দ্বন্দ্ব ছিল না। তাঁরা ভাইদের মধ্যেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ ছিল বলে শুনেছি। ওই বিরোধের জের ধরে তাঁদের ভাইদের মধ্যেই ঝগড়া করতে গিয়ে দিদারুল আলম হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহেদুল ইসলাম জানান, মসজিদ কমিটি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ঘটনার খবর শোনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়। নিহত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান, এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে যৌথ বাহিনীর অভিযানে চার সহোদরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিহত দিদারুল আলমের ছোট ভাই বাদী হয়ে ঘটনার পরদিন গত রোববার সকালে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। ময়না তদন্তের পর মৃত্যুর আসল কারণ জানা যাবে বলেও জানান তিনি।