কর্ণফুলী সেতুর টোল প্লাজায় দুই লেইন বর্ধিতকরণের কাজ শুরু

বুথের সংখ্যা বাড়বে, যানজট কমার আশা ট্রাফিক ও সড়ক বিভাগের

আজাদী প্রতিবেদন | শনিবার , ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ at ৮:৫৬ পূর্বাহ্ণ

কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর টোল প্লাজায় যানজট নিরসন এবং যাতায়াত সহজীকরণের লক্ষ্যে ৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে দুইপাশে দুই লেইনের বর্ধিতকরণের কাজ শুরু হয়েছে।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) এই প্রকল্পের অধীনে কর্ণফুলীর মইজ্জ্যারটেক টোল প্লাজা সংলগ্ন মহাসড়কের অ্যাপ্রোচ রোডে নতুন আরসিসি পেভমেন্ট রোড এবং ফ্লেক্সিবল পেভমেন্ট নির্মাণের কাজ শুরু করতে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেয়ার পর গত সপ্তাহ থেকে কাজ শুরু হয় বলে জানিয়েছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা।

গতকাল বিকেলে সেতু এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, টোল প্লাজা এলাকায় দুই পাশে ৪টি করে ৮টি বুথ (চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের দিকে যেতে ৪টি বুথ এবং চট্টগ্রাম শহরে আসার দিকে ৪টি বুথ) রয়েছে। এই দুই পাশে আরও ১টি করে করে দুটি লাইন বাড়ানোর কাজ চলছে। এসময় কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর টোল প্লাজার ইজারাদার প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশভারত যৌথ কোম্পানি সেলভ্যান জেভির প্রকল্প ব্যবস্থাপক সুমন ঘোষ বলেন, বর্তমানে শাহ আমানত সেতু দিয়ে প্রতিদিন গড়ে ২৭ হাজারেরও বেশি গাড়ি চলাচল করছে। ৮টি লেন দিয়ে টোল আদায় করা হচ্ছে, কিন্তু বিশেষ ছুটির দিনে (বৃহস্পতিবার, শুক্রবার ও শনিবার) চাপ বেড়ে যায়। তখন যানজটের সৃষ্টি হয়। আমরা বিষয়টি সড়ক ও জনপথ বিভাগকে বলেছি। তারা দুই পাশে আরও দুটি লেইন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। ইতোমধ্যে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে। টোল আদায়ে বুথের সংখ্যা দুইপাশে দুটি বেড়ে ১০টি হলে তখন যানজট তেমন থাকবে না বলে জানান তিনি। সড়ক ও জনপথ বিভাগ চট্টগ্রামের উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. নিজাম বলেন, কর্ণফুলী শাহ আমানত সেতুর টোল প্লাজা এলাকায় যানজট নিরসনে বিদ্যমান টোল প্লাজার দুইপাশে আরও দুই লেইন বাড়ানো হচ্ছে।

কাজটি দুটি ধাপে সম্পন্ন হবে বেস টাইপ, ডেন্স বিটুমিনাস সার্ফেসিংবেস কোর্স এবং ডেন্স বিটুমিনাস সার্ফেসিংওয়্যারিং কোর্স। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করেছে। এ প্রকল্পে ব্যয় হবে ৪ কোটি ৯০ লাখ ৫৯ হাজার ২৫৯ টাকা ৫৬ পয়সা।

চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, কাজটি সম্পন্ন করতে ১৮০ দিনের সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। নোটিশ জারির তারিখ থেকে সময় কার্যকর হবে।

মইজ্জ্যারটেক এলাকার ট্রাফিক ইনচার্জ (টিআই) আবু সাঈদ বাকার বলেন, এই রুটে যানবাহনের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। আমাদের ট্রাফিক পুলিশ সদস্যরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন যানজট নিয়ন্ত্রণ রাখতে। নতুন করে ট্রাফিক পুলিশ বক্স নির্মাণের কাজ চলছে। তবুও গাড়ির চাপ সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

প্রতি বৃহস্পতিবার বিকেলে অফিস ছুটির পর থেকে রাত পর্যন্ত শাহ আমানত সেতু এলাকায় ভয়াবহ যানজটের কবলে পড়ে দক্ষিণ চট্টগ্রামবাসী। বৃহস্পতিবার ছাড়াও শুক্রবারশনিবার শাহ আমানত সেতু থেকে টোল প্লাজা হয়ে মইজ্জ্যারটেক এলাকা পর্যন্ত দীর্ঘ ভয়াবহ যানজটের কারণে যাত্রী, অ্যাম্বুলেন্সের রোগী, শিক্ষার্থী, চাকুরিজীবীসহ সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েন। সাধারণ যাত্রী থেকে ব্যবসায়ী সবারই অভিযোগ, টোল আদায়ে ধীরগতি, অব্যবস্থাপনা এবং কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার কারণেই যানজট সমস্যার সমাধান হচ্ছে না।

তবে টোল আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বলছেন ভিন্ন কথা। টোল প্লাজার ইজারাদার প্রতিষ্ঠান সেলভ্যান জেভির প্রকল্প ব্যবস্থাপক সুমন ঘোষ বলেন, অটোরিকশার আধিক্য, চালকদের শৃঙ্খলা না মানা, অতিরিক্ত গাড়ির চাপের কারণে সপ্তাহে তিনদিন যানজট দেখা দেয়। অনেক গাড়ির নম্বর প্লেট ঢেকে রাখা হয়। বিভিন্ন পরিচয়ে টোল দিতে না চাওয়া, বড় টাকার নোট দেওয়া, ছোট গাড়ি বেশি, সন্ধ্যা হলে কারখানার ছুটি; এসব কারণে এই তিনদিন যানজট বেড়ে যায়।

স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল টোল প্লাজায় যানজট কমাতে অন্তত আরও চারটি লেন বাড়ানো দরকার। সেই সঙ্গে ফিটনেসবিহীন গাড়ির চলাচল বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধন্যায্য দাম মিলছে না লবণের
পরবর্তী নিবন্ধরেডিসন ব্লুতে প্রি রামাদান এক্সিবিশনের বর্ণাঢ্য উদ্বোধন