ছাত্র–জনতার গণআন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিচার ও ক্ষমা চাওয়ার আগ পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে দেশে কোনো প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি বলেছেন, এতবড় একটা হত্যাকাণ্ড হল বাংলাদেশের ইতিহাসে। আপনার আমার চোখের সামনে বাচ্চাবাচ্চা ছেলেমেয়েদের খুন করা হল। শত শত ছেলে অন্ধ হয়ে গেছে। অনেকে সারা জীবনের জন্য পঙ্গু হয়ে গেছে। তারা (আওয়ামী লীগ) আবার বলছে, ৩ হাজার পুলিশ মারা গেছে। কত বড় জালিয়াতি, মিথ্যা কথা। বাংলাদেশে যতদিন না তারা ক্ষমা চাচ্ছে, যতদিন না তাদের লিডারশিপকে ট্রায়ালের মধ্যে আনা হচ্ছে, যতদিন না তারা সাবমিটেড টু জাস্টিস, যতদিন না তারা অ্যাকাউন্টেবিলিটির মধ্যে আসছে, ততদিন তাদের প্রটেস্ট করতে দেওয়া হবে না। তাদের আগে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। খবর বিডিনিউজের।
গতকাল বুধবার বিকালে ঢাকার ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নে কথা বলছিলেন শফিকুল আলম। সেখানে আওয়ামী লীগের ফেসবুক পেইজে ঘোষিত হরতালসহ বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণার বিষয়টি দৃষ্টি আকর্ষণ করে সরকারের অবস্থান জানতে চান এক সাংবাদিক। জবাবে প্রেস সচিব বলেন, সরকারের অবস্থান খুবই স্পষ্ট। আওয়ামী লীগের টপ লিডারশিপ জুলাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) রিপোর্টের ১৭তম পাতায় আছে, শেখ হাসিনা নিজেই ডাইরেক্টলি অর্ডার দিয়েছে গুম ও কিলিংয়ের। তারা (এইচআরডব্লিউ) অফিসারদের সঙ্গে কথা বলেছে এবং অফিসাররা হিউম্যান রাইটস ওয়াচকে জানিয়েছে। ভোট কবে হবে এমন প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব তা অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কারের ওপর নির্ভর করছে জানিয়ে বলেন, আমরা আমাদের অবস্থান বারবার স্পষ্ট করেছি। যদি কম রিফর্ম হয় তাহলে এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনটা হবে। যদি পার্টিগুলো মনে করে আরও রিফর্ম চাই এ সরকারের কাছে। সেক্ষেত্রে আরও ছয় মাস এটা এঙটেন্ড (বাড়ানো) করা যেতে পারে। মানে আগামী বছরের জুনের মধ্যে হতে পারে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সরকারের উপদেষ্টারা এবং প্রধান উপদেষ্টা বারবার এটা বলেছেন।
দ্রুত সংস্কার শেষ করে সরকারকে নির্বাচনের পথে যেতে বলছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। বিএনপি নেতাকর্মীদের বক্তব্যেও নির্বাচনের দাবি এখন জোরালো। বিষয়টি নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, নির্বাচন কমিশন একটা ইন্ডিপেন্ডেন্ট বডি। তারা তাদের কথা বলছে। এটা নিয়ে সামনে আরও কথা হবে। কিন্তু তার আগে যেটা খুব প্রয়োজন, যেটা নিয়ে কাজ হচ্ছে তা হল রিফর্ম।
ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝিতে সংস্কার কমিশনগুলো তাদের প্রতিবেদন দেবে জানিয়ে শফিকুল আলম বলেন, রিফর্মের রিপোর্টগুলো পাওয়ার পর কনসেন্সাস (ঐকমত্য) কমিশন কাজ করবে। রিফর্মের ওপর নির্ভর করবে এঙ্যাক্টলি কবে ভোটটা হবে।