সিএমপির কোতোয়ালী থানার সাবেক ওসি মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন ব্যক্তিগত কাজে পাঁচলাইশ এলাকায় গিয়ে জনতার রোষের মুখে পড়েছেন। গতকাল সোমবার দুপুরে পাঁচলাইশ পাসপোর্ট অফিসের সামনে এ ঘটনা ঘটে। পাঁচলাইশ থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। ওই সময় বিক্ষুব্ধ লোকজন থানা ঘেরাও করে নেজাম উদ্দীনকে গ্রেপ্তার এবং শাস্তির দাবি করে। পুলিশ বলেছে, বিক্ষোভকারীরা বিএনপি এবং এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মী।
পুলিশ এবং প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, কোতোয়ালী ও বাকলিয়া থানার সাবেক ওসি মোহাম্মদ নেজাম উদ্দীন বর্তমানে কুমিল্লা সিআইডিতে ইন্সপেক্টর পদে কর্মরত। গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে তিনি ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে ছেলের পাসপোর্ট আনতে পাঁচলাইশ পাসপোর্ট অফিসে যান। এ সময় তার শিশুপুত্রও সাথে ছিল।
ওই সময় নেজামকে পাসপোর্ট অফিসের সামনে দেখতে পেয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের কয়েকজন নেতাকর্মী দৌড়ে আসেন। আশেপাশে থাকা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরাও তাকে দেখে ছুটে আসেন। তখন তার সঙ্গে তাদের হাতাহাতি হয়। দেখা যায়, একজন নেতা তাকে ধমকানোর পাশাপাশি শারীরিকভাবে নির্যাতন করছেন। মারধরের কারণে নেজাম উদ্দীনের শার্ট ছিঁড়ে যায়।
খবর পেয়ে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নেজাম উদ্দীনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ সময় বিপুল সংখ্যক বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মী থানা ঘেরাও করে স্লোগান দিতে থাকে। তারা নেজাম উদ্দীনকে সিটি মেয়র এবং বিএনপি নেতা ডা. শাহাদাত হোসেনের ওপর নির্যাতনকারী হিসেবে উল্লেখ করেন এবং শাসাতে থাকেন। নেজাম তাকে বেইজ্জত না করার জন্য আকুতি জানান। প্রতিউত্তরে এক নেতাকে বলেন, আমি হাতজোড় করে ওইদিন অনুরোধ করেছিলাম। তোর জন্য আমার বাচ্চার মুখ দেখতে পাইনি।
পাঁচলাইশ থানার সামনে একাধিক নেতাকর্মী আজাদীকে বলেন, নেজাম উদ্দীন আওয়ামী লীগ আমলে কোতোয়ালী ও বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ছিলেন। ওই সময় ফ্যাসিস্ট সরকারের লাঠিয়াল বাহিনীর সর্দার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। হেন কোনো নির্যাতন নেই যা তিনি বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর করেননি। মিথ্যা মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের হয়রানি করেছেন, নিপীড়ন করেছেন। বিনা কারণে গ্রেপ্তার করেছেন। চাঁদাবাজি করেছেন। অনুমতি থাকা সত্ত্বেও বিএনপিকে কর্মসূচি পালন করতে দেননি। তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে উল্লেখ করে তাকে গ্রেপ্তার করার দাবি জানাতে থাকেন তারা।
পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলাইমান জানান, কোতোয়ালী থানার সাবেক ওসিকে আমাদের হেফাজতে নিয়ে আসা হয়। পরে চিকিৎসার জন্য তাকে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। নেজাম উদ্দীন কোতোয়ালী, বাকলিয়া ও সদরঘাট থানায় ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ছাত্র গণঅভ্যুত্থানের সময় তিনি পটিয়া থানার ওসি ছিলেন। বতর্মানে তিনি কুমিল্লায় সিআইডিতে ইন্সপেক্টর পদে কর্মরত রয়েছেন।