চট্টগ্রামে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ খুনের মামলার প্রধান আসামিসহ ১০ আসামিকে হামলা, ভাঙচুরের অপর একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো (শোন এরেস্ট) হয়েছে। তারা হলেন চন্দন দাশ (প্রধান আসামি), আমান দাশ, রুমিত দাশ, নয়ন দাশ, গগন দাশ, বিশাল দাস, রাজীব ভট্টাচার্য্য, দুর্লভ দাশ, সুমিত দাশ ও সনু মেথর। গতকাল চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলাম শুনানি শেষে এ আদেশ দিয়েছেন।
এর আগে পুলিশের পক্ষ থেকে এ ১০ জনকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ চেয়ে আবেদন করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, আইনজীবী আলিফ খুনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে থাকা ১০ আসামিকে আদালত পাড়া এলাকায় হামলা, ভাঙচুরের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেয়ে আবেদন করেছিল পুলিশ। আদালত তা মঞ্জুর করেছেন। হামলা, ভাঙচুরের মামলাটি দায়ের করেছিলেন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের ভাই খানে আলম।
নগরীর নিউমার্কেট মোড়ে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গত ২৫ আগস্ট ঢাকা থেকে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন তথা ২৬ নভেম্বর তাকে চট্টগ্রামের আদালতে হাজির করা হয়। তার পক্ষের আইনজীবীরা তার জামিন চেয়ে সেদিন একটি আবেদন করেন। শুনানি শেষে চট্টগ্রামের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলাম জামিন নামঞ্জুর করে চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। পুলিশ যখন চিন্ময়কে প্রিজন ভ্যানে করে কারাগারে নিয়ে যাবে তখন আগে থেকে জড়ো হওয়া তার অনুসারীরা প্রিজন ভ্যানের গতিরোধ করেন এবং প্রিজন ভ্যানের সামনে পিছে শুয়ে পড়েন। একপর্যায়ে দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা পর লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে পুলিশ এবং চিন্ময় কৃষ্ণ দাশকে বহনকারী প্রিজন ভ্যানকে কারাগারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা আদালত পাড়ায় ব্যাপক হামলা, ভাঙচুর করে। শুরু হয় সংঘাত। এক পর্যায়ে আদালতের প্রবেশ গেটের অদূরে খুন হন আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত সাতটি মামলা দায়ের হয়েছে। এরমধ্যে কোতোয়ালী থানায় ৬টি ও আদালতে একটি মামলা দায়ের হয়।
পুলিশ জানায়, কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে ৭৯ জনের নামে তিনটি, আলিফের বাবা বাদী হয়ে ৩১ জনের নামে একটি (হত্যা মামলা) ও তার ভাই বাদী হয়ে ১১৬ জনের নামে একটি ও মোহাম্মদ উল্লাহ নামের এক ব্যবসায়ী ২৯ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন। এছাড়া সর্বশেষ মো. এনামুল হক নামের একজন বাদী হয়ে ১৬৪ জনের নামে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন। আদালত সেটি কোতোয়ালী থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেন।