তামিম মানেই উইকেটে নানা বাহারী শটের ফুলঝুড়ি। তামিম মানেই ব্যাটিংয়ে বিনোদনের ছড়াছড়ি। কিন্তু সে ব্যাটিং এখন আর দেখছেনা দর্শকরা। কারণ তামিম লম্বা সময় ধরে নেই ক্রিকেটে। এই যেমন গতকাল সিলেটে এনসিএল টি–টোয়েন্টিতে অফ স্টাম্পের বেশ বাইরের ডেলিভারিতে দুর্দান্ত টাইমিং, দাপট–কর্তৃত্ব–সৌন্দর্য সবই মিশে থাকল সেই কাভার ড্রাইভে। ইনিংসের শুরুতে নান্দনিক সেই শটেই যেন আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠলেন তামিম ইকবাল। পরের ১০ ওভারে তিনি দেখালেন নিজের সেরা সময়ের ঝলক। অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান উপহার দিলেন আগ্রাসী এক হাফ সেঞ্চুরি। সিলেটে জাতীয় ক্রিকেট লিগ টি–টোয়েন্টিতে বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম বিভাগের হয়ে সিলেট বিভাগের বিপক্ষে ৩৩ বলে ৬৫ রানের ইনিংস খেলেন তামিম। তার ইনিংসে চার ছিল ৮টি, ছক্কা ৩টি। টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে তার পঞ্চাশতম ফিফটি এটি। ফিফটির ফিফটির সঙ্গে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ চারটি সেঞ্চুরি তো আছেই। এই টুর্নামেন্ট দিয়েই সাত মাস পর মাঠের ক্রিকেটে ফিরেছেন তামিম। প্রথম ম্যাচে বুধবার রংপুর বিভাগের বিপক্ষে একটি ছক্কা ও চারে ১০ বলে ১৩ রান করে বোল্ড হয়ে যান তিনি। তবে জ্বলে উঠলেন দ্বিতীয় ম্যাচেই। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের আউটার মাঠে এই ম্যাচে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে চট্টগ্রাম। কুয়াশার কারণে দেরিতে শুরু হওয়া ম্যাচ নেমে আসে ১৫ ওভারে। দলকে উড়ন্ত শুরু এনে দেন তামিম ও মাহমুদুল হাসান জয়। দুজনের উদ্বোধনী জুটিতে ৮০ রান আসে ৬.৫ ওভারেই। শুরুটা করেন জয়। প্রথম ওভারেই অফ স্পিনার নাঈম আহমেদের বলে ছক্কা ও চার মারেন তিনি। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে সৈয়দ খালেদ আহমেদের বলে ওই কাভার ড্রাইভে তামিম পান প্রথম বাউন্ডারির দেখা। শুরুতে কিছুটা এগিয়ে যান জয়। তৃতীয় ওভারে অভিজ্ঞ পেসার আবু জায়েদ চৌধুরীকে এক ছক্কা ও দুই চার মারেন তিনি। তবে তামিমও পিছিয়ে থাকেননি খুব বেশি সময়। চতুর্থ ওভারে তিনি তিনটি বাউন্ডারি মারেন ইবাদত হোসেন চৌধুরীর বলে। প্রথম দুটি স্ট্রেট ড্রাইভে, পরেরটি কাভার ড্রাইভে। এরপর জয়কে একরকম দর্শক বানিয়ে তামিম ছুটতে থাকেন দারুণ গতিতে। আবু জায়েদের পরের ওভারে মারেন টানা দুটি চার। পাওয়ার প্লের ৫ ওভারে ৬১ রান তোলে চট্টগ্রাম। অষ্টম ওভারে বাঁহাতি স্পিনার মাহফিজুর রহমান রাব্বির বলে পুল করে চার মেরে তামিম পঞ্চাশে পা রাখন ২৭ বলে। মাইলফলক উদযাপন করেন তিনি পরের দুই বলেই ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে টানা দুটি ছক্কা মেরে। একটু পর থেমে যায় তামিমের ঝড়। আউট হয়ে যান তিনি পেসার তোফায়েল আহমেদকে ছক্কায় ওড়ানোর চেষ্টায়। লং অফ থেকে বাঁদিকে সরে দারুণ ক্যাচ নেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ। তামিমের গতকালের ব্যাটিং যেন আশার সঞ্চার করেছে তামিম ভক্তদের মাঝে। কারন এমন তামিমকেইতো দেখতে চায় তার ভক্তরা। আশা করা হচ্ছে বিপিএলের আগে নিজেকে আরো প্রস্তুত করে নেবেন তামিম।