বন্যায় চট্টগ্রাম নগরী ও উপজেলাগুলোতে কৃষিখাতে ৩৯৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের করা সাম্প্রতিক সময়ের বন্যায় জেলার ১৫ উপজেলা ও নগরীর আংশিক অংশে আমন–আউশ ও গ্রীষ্মকালীন সবজিক্ষেতের ক্ষতির তালিকা থেকে এই তথ্য জানা গেছে।
ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এখনো অনেক জায়গায় পানি জমে আছে। অনেক উপজেলায় আউশ–আমন ও আমনের বীজতলা ডুবে আছে। এসব এলাকা থেকে পানি সরে গেলে মাঠ পর্যায়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করবেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম সূত্রে জানা গেছে, বন্যায় চট্টগ্রামে শুধুমাত্র রোপা আমনের ক্ষতি হয়েছে ২৫১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। ১৩ হাজার ৮৩১ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন সম্পূর্ণ ক্ষতি হয়েছে। বন্যায় মোট ১ লাখ ৬১ হাজার ৩৭১ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এবারের বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে ওঠা অনেক কষ্ট হবে বলে জানান বিভিন্ন উপজেলার কৃষকরা। মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা জানান, সামনে আউশ ধান কাটার জন্য কৃষকরা প্রস্তুতি নিলেও বন্যায় আউশের সব ফসলই নষ্ট হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের উপপরিচালক কৃষিবিদ ওমর ফারুক আজাদীকে বলেন, চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক সময়ের ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সৃষ্ট বন্যায় ১৫ উপজেলা ও মহানগরীতে কৃষিখাতে ৩৯৪ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। নগরীর পাঁচলাইশ এবং ডবলমুরিং এলাকায় আমনের চাষ হয়। তবে ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে। এটি সম্ভাব্য আজকের (গতকাল) পর্যন্ত। কারণ অনেক উপজেলায় এখনো পানি জমা আছে। ফটিকছড়ি উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফটিকছড়িতে ক্ষতির পরিমাণ ৯৯ কোটি টাকার মতো। ফটিকছড়ির পাশাপাশি মীরসরাই উপজেলায় ৪৮ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। হাটহাজারী উপজেলায় ক্ষতি হয়েছে ২২ কোটি টাকা। লোহাগাড়া উপজেলায় ক্ষতি হয়েছে ২ দশমিক ৫২ কোটি টাকা। সাতকানিয়া উপজেলায় ক্ষতি হয়েছে ২ দশমিক ৯ কোটি টাকা। সীতাকুণ্ডে ক্ষতি হয়েছে ১ দশমিক ৭ কোটি টাকা। অন্যান্য সব উপজেলায় ক্ষতি হয়েছে।
জেলার পাশাপাশি নগরীর কিছু অংশে আমন চাষ হয়। পাঁচলাইশ এলাকায় ৩৯৫ হেক্টর আমন ও আমনের বীজতলা নষ্ট হয়েছে। এছাড়া ডবলমুরিং এলাকায় ৯৫ হেক্টরের মতো আমন ও আমনের বীজতলা ক্ষতি হয়েছে।