সাতকানিয়ায় বাড়ির পাশের চলাচলের রাস্তা নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের দায়ের কোপে মোক্তার আহমদ সিকদার (৫৭) নামের একজন নিহত হয়েছেন। গত সোমবার দুপুরে উপজেলার পুরানগড়ের জানে আলম সিকদার বাড়ি এলাকায় গুরুতর আহত হওয়ার পর রাত ২টার দিকে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যায়। নিহত মোক্তার আহমদ সিকদার পুরানগড় ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জানে আলম সিকদার বাড়ির মৃত আহমদ হোসেনের ছেলে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাতকানিয়া থানা পুলিশ দুই নারীকে গ্রেপ্তার করেছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুরানগড়ের জানে আলম সিকদার বাড়ির কালু মিয়ার ছেলে সিরাজুল ইসলাম ও মৃত মকবুল আহমদের ছেলে কাজী জিয়াবুল হোসেনের মধ্যে চলাচলের রাস্তা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছিল। সেই বিরোধের জের ধরে উভয় পক্ষের মধ্যে ইতিপূর্বে একাধিকবার মারামারির ঘটনা ঘটেছে এবং একাধিক মামলা চলামান রয়েছে।
এদিকে ঘটনার দিন দুপুরে কাজী জিয়াবুল হোসেন সিকদার, তার ছেলে মুমিন, মশিউর, ভাতিজা রকিব ও চাচাতো ভাই মোক্তার আহমদ বিরোধীয় চলাচলের রাস্তা পরিষ্কার করছিল। এসময় সিরাজুল ইসলাম, তার ছেলে মোরশেদ, তৌহিদ, জাহিদ, ফরিদ ও তাদের স্ত্রীরা মিলে দা ও লাঠিসোটা নিয়ে এসে হামলা চালায়। এতে প্রতিপক্ষের দায়ের এলোপাতাড়ি কোপে মোক্তার আহমদ গুরুতর আহত হন। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কেরানীহাটের একটি বেসরকারি হাসপাতাল ও পরে চমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ২টার দিকে মোক্তার আহমদ মারা যান। খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে উম্মে জান্নাত লাকী (৩৫) ও জয়নাব বেগম (৩০) নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে।
ঘটনায় আহত ও নিহতের জেঠাতো ভাই কাজী জিয়াবুল হোসেন সিকদার জানান, বিরোধীয় চলাচলের রাস্তায় সম্প্রতি সিরাজুল ইসলাম ও তার ছেলেরা বরই কাঁটা দিয়ে রাখে। ঘটনার দিন দুপুরে মোক্তার আহমদসহ আমরা কাঁটাগুলো সরিয়ে নিচ্ছিলাম। এসময় সিরাজ, তার ছেলে মোরশেদ, তৌহিদ, ফরিদ ও তাদের স্ত্রীরা অতর্কিতভাবে দা ও লাঠিসোটা নিয়ে এসে আমাদের উপর হামলা চালায়। তাদের এলোপাতাড়ি দায়ের কোপে আমার চাচাতো ভাই প্রাণ হারায়।
পুরানগড় ইউপি চেয়ারম্যান আ ফ ম মাহাবুবুল হক সিকদার জানান, কাজী জিয়াবুল হোসেন সিকদার ও সিরাজুল ইসলামের মধ্যে চলাচলের রাস্তা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছিল। সেই বিরোধ মীমাংসার জন্য আমিও অনেকবার চেষ্টা করেছি। কিন্তু সিরাজুল ইসলাম ও তার ছেলেরা অত্যন্ত উগ্র প্রকৃতির লোক। তারা কেউ কারো কথা শুনতে চায় না। বিরোধীয় চলাচলের রাস্তায় দেয়া কাঁটা সরিয়ে নেয়ার অপরাধে কাউকে কুপিয়ে হত্যা করা যায় না। এটা খুবই দুঃখজনক।
সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ প্রিটন সরকার জানান, নিহতের স্ত্রী সাহেরা বেগম বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে এরই মধ্যে পুলিশ দুই নারীকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্য আসামিদেরকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।