সোমালি জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ সংযুক্ত আরব আমিরাতের মিনা সাকার বন্দর থেকে আজ রোববার দুপুরে দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হবে। ৩ হাজার ৬৫৪ নটিক্যাল মাইল সাগরপথ পাড়ি দিয়ে জাহাজটি আগামী মাসের মাঝামাঝি চট্টগ্রাম পৌঁছাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।
গতকাল শনিবার দুবাইয়ের আল–হামরিয়া বন্দরের জেটিতে কয়লা খালাস শেষ করে এমভি আবদুল্লাহ গত রাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মিনা সাকার নামে একটি বন্দরের পথে যাত্রা করেছে। গত রাত ৮টা নাগাদ জাহাজটি নতুন বন্দরের পথে নোঙর তোলে। ওই বন্দরে চট্টগ্রামের জন্য পণ্যবোঝাই সম্পন্ন এবং বন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে জাহাজটি আজ দুপুর নাগাদ যাত্রা করতে পারবে। জাহাজটি সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১২ নটিক্যাল মাইল বেগে চট্টগ্রামের পথ ধরে এগুবে।
জাহাজের মালিক প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম গতকাল আজাদীকে জানান, রোববার (আজ) দিনের বেলায় জাহাজ বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওনা হবে। এখন জাহাজে কার্গো আনলোডিং সম্পন্ন হয়েছে। জাহাজটি মিনা সাকার নামে নতুন একটি বন্দরে যাচ্ছে। ওখানে চট্টগ্রামের জন্য পণ্য বোঝাই করে জাহাজটি চট্টগ্রামের পথে যাত্রা করবে। জিম্মি দশা থেকে মুক্ত হওয়া জাহাজটির ২৩ নাবিকের সকলে ওই জাহাজেই দেশে ফিরবেন।
গত ১২ মার্চ মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরে যাওয়ার পথে সোমালিয়া উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে ভারত মহাসাগরে জাহাজটি জলদস্যুদের কবলে পড়ে। সোমালি জলদস্যুরা অস্ত্রের মুখে জাহাজের নাবিকদের জিম্মি করে সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যায়। দস্যুদের সাথে সমঝোতার মাধ্যমে ৩৩ দিন পর গত ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাত ৩টার দিকে জাহাজটি মুক্ত হয়। জলদস্যুরা জাহাজ থেকে নেমে যাওয়ার পর এটি দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। মুক্তির পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন নৌবাহিনী পাহারা দিয়ে জাহাজটিকে সোমালিয়া উপকুল থেকে প্রায় ৪৮০ নটিক্যাল মাইল উচ্চ ঝুঁকির এলাকা পার করে দেয়। এক সপ্তাহের টানা সমুদ্রযাত্রা শেষে গত ২১ এপ্রিল এমভি আবদুল্লাহ বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছায়। পরদিন ২২ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে আল হামরিয়া বন্দরের জেটিতে নোঙর করে এমভি আবদুল্লাহ। ওই বন্দরে জাহাজটি ৫৮ হাজার টন কয়লা খালাস সম্পন্ন করে।