অশান্ত হয়ে উঠেছে বৈদেশিক মুদ্রার যোগানদাতা কক্সবাজারের চকরিয়ার চিংড়িজোন। গত তিন দিন ধরে এই চিংড়িজোনে শুরু হয়েছে ঘের দখল, ডাকাতির মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড।
চকরিয়ায় চিংড়িঘের দখলে নিতে গিয়ে ব্যাপক গুলিবর্ষণ করেছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। এ সময় বাঁধা দিতে গেলে অসংখ্য গুলিতে বিদ্ধ হয়ে ঘের সংলগ্ন বাড়ির সামনেই প্রাণ হারান রামপুর সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির এক সদস্য।
এদিকে খবর পেয়ে আজ দুপুর বারোটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে চকরিয়া থানার একদল পুলিশ। সর্বশেষ আজ বুধবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানিয়েছে- ঘটনাস্থল থেকে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহতের লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।
নিহত রামপুর সমিতির সদস্যের নাম মোহাম্মদ হোসেন (৫৬)। তিনি রামপুর সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির ৬৬৮ নম্বর সদস্য এবং আবুল খায়েরের পুত্র। তার পৈত্রিক বাড়ি কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের ছনখোলা পাড়ায়।
রামপুর সমবায় কৃষি ও উপনিবেশ সমিতির পরিচালক শহীদুল ইসলাম জানান- সমিতির মালিকানাধীন চিংড়িজোনের সাহারবিলের রামপুর মৌজায় ৫১১২ একরের বিশাল চিংড়িঘের রয়েছে। তন্মধ্যে বিশাল এলাকায় সমিতির নিয়ন্ত্রণও নেই। নিয়ন্ত্রণে থাকা চিংড়িঘের দখল করে নিতে গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে চিংড়ি জোনের একাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রায় অর্ধ শতাধিক সদস্য মহড়া দিতে থাকে।
এ সময় তারা সমিতির সদস্যদের বাড়িঘর ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য নির্দেশও দেয় এবং সেখানে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে কয়েকশত রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। কিন্তু তাদের কথামতো বাড়িঘর ছেড়ে চলে না যাওয়ায় আজ (বুধবার) ভোররাতে সমিতির সদস্য মোহাম্মদ হোসেনকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।
এ ব্যাপারে পুলিশের চকরিয়া সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারি পুলিশ সুপার মো. রকীব উর-রাজা বলেন, ‘আপাতত একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ার ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আমি এবং থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ সার্বিক বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি।’
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী জানান- খবর পেয়ে চিংড়িজোন রামপুরে গিয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। এই ঘটনায় লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তিসাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
