রাউজান পৌর এলাকার জলিলনগর প্রাইম ব্যাংকের শাখা থেকে এক নারী গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে চার লাখ ৯০ হাজার টাকা অন্য দুটি ব্যাংকে সরিয়ে নিয়েছে একটি হ্যাকার চক্র। ওই নারী গ্রাহকের কাছ থেকে এমন অভিযোগ পেয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে মাত্র এক লাখ টাকা আটকাতে পেরেছেন। এই ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৮ জুলাই। অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা চলে যাওয়ার বিষয়টি ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক জানতে পারেন মোবাইলে ক্ষুদে বার্তা পেয়ে। তখন তিনি ব্যাংকে ছুটে এসে ব্যবস্থাপককে জানিয়ে একটি অভিযোগপত্র লিখে দেন।
খবর নিয়ে জানা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক সাজু আকতারকে একটি হ্যাকার চক্র টার্গেট করেছিল বেশ কিছু দিন ধরে। গ্রাহকের মোবাইলে যোগাযোগ করে হ্যাকার চক্রটি প্রতারণার চক কষে। চক্রটি ওই নারী গ্রাহককে জানায় তাদের প্রতিষ্ঠান প্রতি বছর শিক্ষার্থীদের মোটা অংকের উপবৃত্তির টাকা দিয়ে থাকে। বিভিন্ন তথ্যসূত্রের খবরে তথ্য যাছাই করে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে সাজু আকতারের পড়ুয়া ছেলেকে দীর্ঘ মেয়াদী উপবৃত্তির টাকা প্রদান করবে। সরল বিশ্বাসে এই নারী গ্রাহক হ্যাকারদের প্রলোভনে পা দেন। যোগাযোগের এক পর্যায়ে হ্যাকার চক্রটি উপবৃত্তির টাকা পাঠাতে গ্রাহকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বরের ওটিপি কোড জানতে চায়। এভাবে মোবাইলে কথাবার্তা আদান প্রদানের মধ্যে সাজু আকতার ওটিপি কোড ক্ষুদে বার্তায় হ্যাকারদের জানিয়ে দেন। এই কোড পেয়ে তারা সাথে সাথে ওই অ্যাকাউন্ট থেকে দুটি ব্যাংকে দুই দফায় সর্বমোট চার লাখ ৯০ হাজার টাকা স্থানান্তর করে নিয়ে যায় এবং গ্রাহককে জানায় দ্রুত তার অ্যাকাউন্টে উপবৃত্তির টাকা পৌঁছে যাবে। সেই সাথে মোবাইল থেকে সব ক্ষুদে বার্তা মুছে দিতে অনুরোধ করে। সরল বিশ্বাসে সাজু আকতার ক্ষুদে বার্তা মুছে দেয়ার পর পর মোবাইলে ব্যাংক সিস্টেম থেকে বার্তায় পান অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উঠানো হয়েছে। এই বার্তা পেয়েই তিনি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপকের কাছে ছুটে যান। ঘটনা শুনে ব্যবস্থাপক অভিযোগ পত্র দিতে বললে তিনি ঘটনা লিখে প্রতিকার চান।
এ ব্যাপারে ব্যবস্থাপক এস এম মাকসুদুল করিম বলেন, ঘটনা জানার সাথে সাথে ই–মেইলে আমাদের প্রধান অফিসের সাথে যোগাযোগ করে দেখা গেছে, টাকাগুলো নেয়া হয়েছে মার্কেন্টাইল ব্যাংক কঙবাজার শাখা ও ঢাকা ব্যাংক গাজীপুর চৌরাস্তা শাখায়। ব্যাংকের এই কর্মকর্তা বলেন, তড়িৎ গতিতে হ্যাকাররা ওই টাকা উত্তোলনও করে নেয়। এর মধ্যে একটি ব্যাংকে অবশিষ্ট থাকা মাত্র এক লাখ টাকা আটকাতে পেরেছেন। গ্রাহকের অ্যাকাউন্ট থেকে এভাবে টাকা চলে যাওয়ার দায় ব্যাংক এড়াতে পারে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই ধরনের ঘটনায় তাদের দায় নেই। তবু গ্রাহকদের ক্ষতির কথা বিবেচনায় নিয়ে তারা ব্যবস্থা নিয়েছেন।