দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ‘গায়েবি’ মামলা প্রত্যাহার না করলে থানা ঘেরাও কর্মসূচি করার ঘোষণা দিয়েছে দক্ষিণ জেলা বিএনপি। গতকাল চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেয়া হয়। এসময় দক্ষিণ চট্টগ্রামের পাঁচ থানা সহ বৃহত্তর চট্টগ্রামে দায়েরকৃত মামলায় গ্রেপ্তার বা হয়রানি না করে সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এসব মামলা প্রত্যাহার করার জোর দাবি জানান বিএনপি নেতারা।
এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান। তিনি বলেন, ‘অতীতের গায়েবি মামলার ধারাবাহিকতায় গত ১৬ দিনে লোহাগড়া, পটিয়া, বাঁশখালী, চন্দনাইশ এবং বোয়ালখালী থানায় বিএনপি নেতাকর্মীদের আসামি করে ৫টি গায়েবি মামলা দায়ের করেছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এসব মিথ্যা মামলা সুষ্ঠু তদন্ত করে অবিলম্বে প্রত্যাহার না করলে প্রয়োজনে থানা ঘেরাওয়ের মতো কঠিন কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।’
সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়, চন্দনাইশ থানায় দায়ের করা মামলায় যাদের আসামি করা হয় তাদের মধ্যে পবিত্র হজ পালনের জন্য দেড় মাস সৌদি আরবে ছিলেন চন্দনাইশ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মঞ্জুর মোর্শেদ চৌধুরী ও সাইফুল করিম। তাঁরা দেশে আসেন গত ৩০ জুলাই। অথচ ২৮ জুলাই চন্দনাইশ পৌরসভা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক শাহাদাত হোসেন বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। তার মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আগের দিন সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়ে হজে থাকা ওই দুজনসহ ১২০ জন মিলে তাঁকে মারধর করেছেন। ওই সময় তাঁদের হাতে ছিল লাঠিসোঁটা ও পেট্রলবোমা। বিশেষ ক্ষমতা ও বিস্ফোরক আইন এবং ভাঙচুর মারধরের অভিযোগে এই মামলা হয়। ঘটনার সময় উল্লেখ করা হয়েছে ২৭ জুলাই দুপুর সোয়া ১২টা। ঘটনাস্থল দেখানো হয়েছে পৌরসভার গাছবাড়িয়া এলাকা। অথচ সেদিন ওই এলাকায় এধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
আবু সুফিয়ান বলেন, ‘প্রতিটি মামলায় ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক আইনের ধারা উল্লেখ করেছে, যাতে করে মামলা কঠিন হয়। এটা শুধুমাত্র আগামী নির্বাচনে বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানি করার জন্য করা হয়েছে। ঘটনা বর্ণনায় যা বলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, কাল্পনিক, ভিত্তিহীন এবং বানোয়াট।’
আবু সুফিয়ান বলেন, দেশে বিদেশে মানুষের কাছে আস্থা হারিয়ে এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছে সরকার। মানুষ তাদের আর ক্ষমতায় চাইছে না সেটা দেখে তারা গদী রক্ষায় মরিয়া হয়ে ওঠেছে। তাই তারা তাদের পুরোনো কায়দায় নতুন করে সারা দেশে ‘মিথ্যা’ এবং ‘গায়েবি’ মামলা দিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের আন্দোলন থেকে দূরে সরানোর পাঁয়তারা করছে।
আবু সুফিয়ান পুলিশের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা প্রজাতন্ত্রের চাকরি করেন, কোনো দলের নয়। প্রতিটি মানুষের নিরাপত্তা প্রদান করা আপনাদের দায়িত্ব। আপনারা কোন দলের আজ্ঞাবহ না হয়ে জনগণের সেবক হয়ে থাকুন।
সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এনামুল হক এনাম। এসময় উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মোশাররফ হোসেন, কামরুল ইসলাম হোসাইনী, এস এম মামুন মিয়া, নাজমুল মোস্তফা আমিন, সিরাজুল ইসলাম সওদাগর, মোস্তাফিজুর রহমান, আবু মো. নিপার, মফজল আহমদ চৌধুরী, হাজী মো. রফিক, মো. ইসহাক চৌধুরী, হামিদুল হক মান্নান চেয়ারম্যান, নূরুল কবির, জসিম উদ্দিন, মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা, বাঁশখালী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক চৌধুরী, পটিয়া পৌরসভা বিএনপির সদস্য সচিব গাজী আবু তাহের, বিএনপি নেতা শফিকুল ইসলাম রাহী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মন্জুর আলম তালুকদার, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহসিন।