আমদানিকারকের দুঃখ চট্টগ্রাম কাস্টমস ল্যাব

নেই পূর্ণাঙ্গ রাসায়নিক পরীক্ষক, পরীক্ষণে সময়ক্ষেপণ ল্যাবে পণ্যের নমুনা জট

জাহেদুল কবির | বুধবার , ১৭ মে, ২০২৩ at ৬:০২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম কাস্টমসের রাসায়নিক পরীক্ষাগারটি (ল্যাব) বর্তমানে আমদানিকারকের দুঃখে পরিণত হয়েছে। ল্যাবে নেই কোনো পূর্ণাঙ্গ রাসায়নিক পরীক্ষক। বর্তমানে একজন সহকারী কেমিক্যাল এসিসট্যান্ট দিয়ে চলছে কার্যক্রম।

আমদানিরপ্তানি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বছরের পর বছর চট্টগ্রাম কাস্টমসের ল্যাবটি জোড়াতালি দিয়ে চলছে। কিন্তু এখানে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কোনো নজর নেই। অথচ এই চট্টগ্রাম কাস্টমস প্রতি বছর ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্বের যোগান দিচ্ছে। ল্যাবের রাসায়নিক পরীক্ষকের অভাবে যে পরীক্ষা একদিনের হওয়ার কথা, সেটি এক সপ্তাহের বেশি সময় লাগছে। ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় জটের কারণে বন্দর থেকে নির্দিষ্ট সময়ে পণ্য খালাস করতে পারছে না আমদানিকারকরা। এতে আমদানিকারকদের পোর্ট ডেমারেজ গুনতে হচ্ছে। রাসায়নিক ল্যাবের কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের ল্যাবে প্রতিদিন গড়ে বিভিন্ন পণ্যের শতাধিক নমুনা আসে। এই বিশাল পরিমাণ নমুনা পরীক্ষা করতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এছাড়া অনেক নমুনার পরীক্ষা আবার দ্রুত করে দিতে হয়। বর্তমানে যে অবস্থা এতে অন্তত ১০ জন রাসায়নিক পরীক্ষক দরকার।

চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্ট এসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম রাব্বানি রিগ্যান দৈনিক আজাদীকে বলেন, গত বছর কয়েক আগে চট্টগ্রাম কাস্টমসে একাধিক রাসায়নিক পরীক্ষক কাজ করতেন। দীর্ঘদিন ধরে তারা কাজ করায় কাজের গতিও ঠিক ছিল। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাসায়নিক পরীক্ষক আবদুল হান্নান অবসরে গেলে ল্যাবের কার্যক্রমে স্থবিরতা নেমে আসে। পরবর্তীতে মংলা কাস্টমস থেকে মো. হেলাল হাসান নামের একজন সহকারী কেমিক্যাল এসিসট্যান্ট পদে পদায়ন করা হয়। সমস্যা হচ্ছে, তিনি একার পক্ষে যথাসময়ে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। সেই সমস্যাটি এখনো রয়েছে। ল্যাবে নমুনা পাঠানোর এক সপ্তাহ পরে তিনি জানাচ্ছেন, এই পরীক্ষা ল্যাবে করা সম্ভব নয়। ঢাকা কিংবা অন্য কোনো বহির্ল্যাবে পাঠাতে হবে। ফলে পণ্যের পরীক্ষায় জন্য আমদানিকারকদের সীমাহীন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। আবার বহির্ল্যাবে নমুনা পাঠানো থেকে শুরু করে রিপোর্ট আসা পর্যন্ত প্রায় দুই সপ্তাহও লেগে যায়। আমরা তাই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাছে আবেদন জানাবো, যেন চট্টগ্রামের কাস্টমসের এই ল্যাবটি আধুনিকায়ন করে পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ দিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা হয়। এতে ব্যবসায়ীদের সময় ও অর্থ দুটোই বাঁচবে।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. ফাইজুর রহমান জানান, চট্টগ্রাম কাস্টমসে জনবল সংকটের বিষয়টি এনবিআরের উর্ধ্বতনদের জানানো হয়েছে। ব্যবসায়ীদের যেকোনো সমস্যা সমধানে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বদ্ধপরিকর রয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমেয়র পদে ৭ ও কাউন্সিলর পদে ৮১ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল
পরবর্তী নিবন্ধট্রাকের নিচে বাইক, প্রাণে বাঁচলেন দুই আরোহী