চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার লিগের এখনো ১৭টি ম্যাচ বাকি। আর আবাহনীর বাকি এখনো দুটি ম্যাচ। ঠিক যখন লিগের শিরোপার উত্তেজনা শুরুর হওয়ার কথা তখনই সে শিরোপা লড়াইয়ের উত্তেজনায় জল ঢেলে দিল আবাহনী লিঃ। দুই ম্যাচ হাতে রেখে একেবারে নবম ম্যাচে অপরাজিত থেকে টানা দ্বিতীয়বারের মত লিগ শিরোপা জিতে নিল আবাহনী। এবারের লিগের শুরু থেকেই কোন প্রতিপক্ষকে পাত্তা দিচ্ছেনা আবাহনী। আর সেটা অব্যাহত রাখল শিরোপা নিশ্চিত করার ম্যাচেও। শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ব্রাদার্স ইউনিয়নকে একেবারে লজ্জায় ডুবিয়ে দুই ম্যাচ আগে শিরোপা উৎসব করল আবাহনী। গতকাল এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ১২০ রানের বিশাল ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়ে শিরোপা জিতে নেয় আবাহনী।
যদিও এই ম্যাচে জিততে পারলে ব্রাদার্সেরও একটা সুযোগ থাকতো। যদিও পরে আরো অনেক সমীকরণের দিকে তাকিয়ে থাকতে হতো। তবে সেরকম কোন সুযোগ দেয়নি আবাহনী। একেবারে প্রতিপক্ষকে উড়িয়ে দিয়ে শিরোপা জয়ের আনন্দে ভাসে আবাহনী। লিগের প্রায় এক তৃতীয়াংশ বাকি থাকতে শিরোপা জিতে নেওয়ার কৃতিত্ব আর নেই চট্টগ্রামের লিগে। ফলে লিগটি এখন রানার্স আপ ট্রফির লিগে পরিণত হলো। লিগের শুরু থেকেই যে ধারায় ছুটছিল আবাহনী, সে ধারা বজায় রাখল এই ম্যাচেও। সাফল্যের পারদটা কেবলই উপরের দিকে গেছে। কখনো নিচে নামেনি। আর তাতেই যেন বেশি তৃপ্তি আবাহনী শিবিরে।
একটি দল হিসেবে নিজেদের সর্বোচ্চ উজাড় করে দিয়ে শিরোপা উৎসব করল আবাহনী। দলটির শিরোপা জয়ের পথে ন্যূনতম বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারলনা আগেই শিরোপা রেস থেকে অনেকটাই ছিটকে যাওয়া ব্রাদার্স। তিন ম্যাচে হারা ব্রাদার্সকে এখন লড়াই করতে হবে রানার্স আপ ট্রফির জন্য। গতকাল সকালে টসে জিতে ব্যাট করতে নামে আবাহনী। দুই ওপেনার বিচ্ছিন্ন হন মাত্র ৭ রানে। দ্বিতীয় উইকেটে তাজুল এবং দিপু মিলে যোগ করেন ৯৪ রান। ৪৩ রান করা তাজুল ফিরলে ভাঙ্গে এজুটি। ৩ রান পর ফিরেন রবিউলও। এরপর জুটি গড়েন দিপু এবং শোয়েব। এজুটিতে আসে ১৫১ রান। আর তাতেই রানের পাহাড়ে চড়ার সব আয়োজন সম্পন্ন করে আবাহনী। নিজের সেঞ্চুরি পুরন করে দিপু যখন ফিরেন তখন তার দল পৌছে গেছে ২৫৫ রানে। ১১৫ বলে ১২টি চার এবং ২টি ছক্কার সাহায্যে ১২৯ রান করে ফিরেন দিপু। ষষ্ট উইকেটে শোয়েব এবং জিবন মিলে যোগ করেন ৪৯ রান। ৭০ বলে ৭৬ রান করা শোয়েব আহত হয়ে অবসরে যান। তবে ব্যাট হাতে ঝড় তোলেন জিবন। মাত্র ১৮ বলে ৩৯ রান করেন তিনি। আর তাতেই আবাহনী পৌছে যায় ৩৩১ রানের পাহাড়ে। যা এবারের লিগের সবচাইতে বড় দলীয় স্কোর। এর আগে ৩১৭ রান করেছিল আবাহনী। ব্রাদার্সের পক্ষে ৩টি উইকেট নিয়েছেন মেহরাব। ২টি উইকেট নিয়েছেন রহমতউল্লাহ।
৩৩২ রানের পাহাড় টপকে ম্যাচ জিততে যেভাবে শুরু করতে সেটা পারেনি ব্রাদার্স ইউনিয়ন। ১৩ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর ১৫ রানে ফিরে দুই ওপেনার। তৃতীয় উইকেটে নাবিল এবং মইনুল প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু এজুটি ৭৭ রান যোগ করে বিচ্ছন্ন হন। ফিরেন ৪১ রান করা মইনুল। এরপর একপ্রান্ত আগলে রেখে লড়াই করেছেন নাবিল। কিন্তু অপর প্রান্তে তাকে কেউ যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেনি। ফলে ধীরে ধীরে পরাজয়ের দিকে এগুতে থাকে ব্রাদার্স। এক পর্যায়ে ৭৫ বলে ৬৫ রান করে রণে ভঙ্গ দেন নাবিলও। আর তাতেই হার নিশ্চিত হয়ে যায় ব্রাদার্সের। তবে বাকিরা হারের ব্যবধানটা কমানোর চেষ্টা করেছেন মাত্র। শেষ পর্যন্ত ২১১ রানে অল আউট হয় ব্রাদার্স। আর তাতেই ১২০ রানের লজ্জার পরাজয় সঙ্গী হয় তাদের। দলের পক্ষে মেহরাব ২২, মিঠু ১৭, আশফাক ২২ এবং আলি আকবর করেন ১৩ রান। আবাহনীর পক্ষে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন জীবন, শোয়েব, তাজুল, রবিউল এবং হান্নান।