রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ এক মিত্রের মেয়ে মস্কোর কাছে নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। নিজে গাড়ি চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন, পথে তার গাড়িটি বিস্ফোরিত হয় বলে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিবিসি। দুগিনা নয়, তার বাবা ‘পুতিনের মস্তিষ্ক’ খ্যাত আলেক্সান্দার দুগিনই এই গাড়ি বোমা হামলার লক্ষ্য ছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ইউক্রেনে রুশ সেনা পাঠানোর পক্ষে শক্তিশালী অবস্থান নেওয়া কট্টর জাতীয়তাবাদী দুগিন পুতিনের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হিসেবে দেশে-বিদেশে পরিচিত। খবর বিডিনিউজের। রুশ গণমাধ্যম ১১২-র তথ্য অনুযায়ী, বাবা-মেয়ে দুজনেরই শনিবার সন্ধ্যার এক অনুষ্ঠান শেষে একসঙ্গে এক গাড়িতে করেই বাড়ি ফেরার কথা ছিল, কিন্তু শেষ মুহূর্তে দুগিন আর ওই গাড়িতে ওঠেননি। টেলিগ্রামে পোস্ট হওয়া এক পোস্টে পুড়তে থাকা একটি গাড়ির কাছে জরুরি বিভাগের লোকজনের ছোটাছুটির মধ্যে দুগিনকে স্তম্ভিত অবস্থায় দেখা গেছে। ফুটেজটি আসল কিনা, তা যাচাই করে দেখতে পারেনি বিবিসি। রাশিয়ার আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো বার্তা সংস্থা তাসকে বলেছে, বোলশিয়ে ভিয়াজেমি গ্রামে একটি এসইউভি বিস্ফোরিত হওয়ার পর গাড়িটির নারী চালক মারা যান। এ বিষয়ে আর বিস্তারিত কিছু বলেনি তারা। এখন পর্যন্ত রুশ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকেও দুগিনের মেয়ে দারিয়ার মৃত্যুর খবর নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানানো হয়নি। সরকারি কোনো পদে না থাকলেও রাশিয়ার শাসকমহলে পুতিনের রাসপুতিন খ্যাত দুগিনের বেশ প্রভাব আছে বলেই মনে করা হয়। এ তাত্ত্বিকের মেয়ে, সুপরিচিত সাংবাদিক দুগিনাও ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের কট্টর সমর্থক ছিলেন। চলতি বছরের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ৩০ বছর বয়সী দুগিনার বিরুদ্ধে অনলাইনে রাশিয়ার পক্ষে ‘গুজব’ ছড়ানোর দায়ে নিষেধাজ্ঞাও দিয়েছিল।
মে মাসে এক সাক্ষাৎকারে দুগিনা ইউক্রেন যুদ্ধকে সভ্যতার সংঘাত হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছিলেন, বাবা-মেয়ে দুজনই পশ্চিমাদের কালো তালিকায় থাকায় তিনি যে গর্বিত, তাও বলেছিলেন তিনি। রাশিয়ার ক্রাইমিয়া দখলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র ২০১৫ সালে দুগিনকে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছিল। তার লেখালেখি পুতিনের বিশ্বভাবনায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলে বলেই মনে করা হয়, ক্রেমলিনের অনেকে যে কট্টর-জাতীয়তাবাদী মনস্তত্ত্ব ধারণ করে, সেই ধারণার প্রধান স্থপতিও তাকেই গণ্য করা হয়। বছরের পর বছর ধরে দুগিন মস্কোকে বিশ্বমঞ্চে আরও আগ্রসী রূপে হাজির হতে আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন। তারই ভিত্তিতে রাশিয়া ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযানে নামে বলেও অনেকের মূল্যায়ন।