চকরিয়ায় খাদ্যগুদাম কর্মকর্তাসহ তিনজনকে প্রত্যাহার

খাদ্যবান্ধব চাল কেলেঙ্কারি

চকরিয়া প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ৭ এপ্রিল, ২০২২ at ৫:৫৮ পূর্বাহ্ণ

সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল নিয়ে কেলেঙ্কারির দায়ে কক্সবাজারের চকরিয়া থেকে প্রত্যাহার করে চট্টগ্রামে ন্যস্ত করা হয়েছে চিরিঙ্গা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-এলএসডি) আবদুর রহমান খানকে। একইসাথে প্রত্যাহার করে ওই গুদামের দুই কর্মচারী নৈশপ্রহরী টিকলু চৌধুরীকে উখিয়া এবং আলাউদ্দিনকে কুতুবদিয়ায় বদলি করা হয়। গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. জহিরুল ইসলাম তাদেরকে প্রত্যাহারের আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির অধীনে ডিলার নিয়োগ পান চকরিয়ার বিএমচর ইউনিয়নের চাল বিতানের মালিক জুবাইরুল ইসলাম। ওই ডিলার উপকারভোগীদের মাঝে বিতরণের জন্য গত ১৭ মার্চ চিরিঙ্গা খাদ্য গুদাম থেকে ৩৯১ বস্তা চাল উত্তোলন করে নিজের গুদামে মজুদ করেন। কিন্তু সেসব চালের মধ্যে ভিয়েতনামি চালের বদলে স্থানীয় চাল দেখতে পেয়ে তাৎক্ষণিক চিরিঙ্গা খাদ্য গুদামের কর্মকর্তাকে অবহিত করেন। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের ছাড়পত্রে উত্তোলিত চালগুলোর মধ্যে মাত্র ১১ বস্তা ভিয়েতনামি চাল দেখতে পান। এই বিষয় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে অবহিত করা হলে তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। এরপর কঙবাজার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রূপান্তর চাকমা এবং চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান ডিলারের গুদামে গিয়ে চালগুলো জব্দ করেন। এ ঘটনায় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তপন মল্লিক বাদী হয়ে ডিলার জুবাইরুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করেন এবং তার ডিলারশিপ বাতিলের আদেশ দেন।
এই অবস্থায় ডিলার জুবাইরুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে অন্যায়ভাবে মামলা রুজুসহ ডিলারশিপ বাতিল নিয়ে চ্যালেঞ্জ করেন। এর পর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের নেতৃত্বে গঠিত হয় তদন্ত কমিটি। চাল কেলেঙ্কারির বিষয়টি এক সপ্তাহ ধরে তদন্তের পর চিরিঙ্গা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তারও যোগসাজশ পায় কমিটি। গত মঙ্গলবার তদন্ত কমিটির সুপারিশে চিরিঙ্গা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করে ন্যস্ত করা হয়েছে চট্টগ্রামে। এছাড়াও বদলি করা হয় দুইজন নিরাপত্তা প্রহরীকে।
এ ব্যাপারে চকরিয়া উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তপন মল্লিক গতকাল দৈনিক আজাদীকে জানান, চাল কেলেঙ্কারির ঘটনায় চিরিঙ্গা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তার সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টিও গঠিত কমিটির তদন্তে বেরিয়ে আসে। এর আগে ডিলার জুবাইরুল ইসলামের গুদামে অতিরিক্ত এবং নিম্নমানের চাল পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা এবং ডিলারশিপ বাতিল করা হয়।
অভিযুক্ত ডিলার জুবাইরুল ইসলাম দাবি করেছেন, তিনি কোনো ধরনের চাল কেলেঙ্কারির সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। মূলত খাদ্য গুদাম থেকে তাকে যেসব চালের বস্তা দেওয়া হয়েছিল, তা উত্তোলন করে নিজের গুদামে মজুদ করেছিলেন। পরবর্তীতে চাল বিতরণের সময় যখন তিনি দেখতে পান, ভিয়েতনামি চালের বদলে স্থানীয় চাল তাকে দেওয়া হয়েছে। তাৎক্ষণিক সেই বিষয়টি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছিল। কিন্তু তার ওপর চাল কেলেঙ্কারির মিথ্যা দায়ভার চাপিয়ে মামলা রুজু এবং ডিলারশিপ বাতিলের আদেশ দেওয়া হয়। যা আমি যথাযথ ডকুমেন্ট সহকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চ্যালেঞ্জ করি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসন্দ্বীপে প্রতিপক্ষের হামলায় আ. লীগের ৩ কর্মী আহত আটক ১
পরবর্তী নিবন্ধদাঁড়িয়ে থাকা কাভার্ড ভ্যানকে অপর কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কা