যুবলীগ নেতা মোনাফ সিকদারকে হত্যা প্রচেষ্টার ঘটনায় কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
আজ রবিবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে মামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে মেয়রের অনুসারী কর্মী সমর্থকরা শহরের রাস্তায় নেমে পড়ে।
সন্ধ্যা ৬টা থেকে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে টায়ার জ্বালিয়ে ও পৌরসভার গাড়ি দিয়ে সড়কে অবরোধ ও বিক্ষোভ করে মেয়রের সমর্থকরা।
সমাবেশে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিভিন্ন পদের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
তারা আজ রাত ১২টার মধ্যে মামলা প্রত্যাহারের জন্য প্রশাসনকে আল্টিমেটাম দেন। অন্যথায় পুরো কক্সবাজারকে অচল করে দেওয়ার হুমকি দেন তারা।
আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভের কারণে শহরের শপিংমল, দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। পুরো শহরে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক বিশেষ করে পর্যটকদের মাঝে।
এসময় শহর ছাড়াও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক, টেকনাফ-কক্সবাজার সড়ক ও মেরিন ড্রাইভ সড়কে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। সেই সাথে হাজার হাজার পর্যটকও আটকা পড়ে যান শহরের হোটেল-মোটেল জোন ও কলাতলী এলাকায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা শহরের প্রধান সড়ক, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, থানা ফটক, কলাতলী মোড় ও বাসটার্মিনালসহ অর্ধশতাধিক স্থানে খণ্ড খণ্ড মিছিল ও সমাবেশ করে।
পরে রাত সাড়ে ৯টায় শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েনের পর পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসে এবং যানবাহন চলাচলও স্বাভাবিক হয়।
কক্সবাজার সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মুনীর উল গীয়াস মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মোনাফ সিকদারকে গুলি করার ঘটনায় কক্সবাজার পৌর মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুজিবুর রহমান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার কাবেরী সহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
গুলিবিদ্ধ মোনাফ সিকদারের বড় ভাই মো. শাহজাহান বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র তার ফেসবুক পেজে দেয়া এক স্ট্যাটাসে বলেন, “আমার বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা রুজু হয়েছে। রাজনীতি করতে গেলে জীবনে এ ধরনের অনেক মামলা, জেল-জুলুম ও হুলিয়ার সম্মুখীন হতে হয় সেটা স্বাভাবিক কিন্তু আমি আপনাদের ভালবাসায় যেহেতু আজকের মুজিব হয়েছি সেহেতু এই মামলাতেও আমাকে ঠেকানো যাবে না, ইনশাআল্লাহ।”
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার (ভারপ্রাপ্ত) রফিকুল ইসলাম বলেন, “হত্যা চেষ্টা ধারায় মেয়র মুজিবকে প্রধান আসামী করে সদর থানায় একটি মামলা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
উল্লেখ্য, গত বুধবার (২৭ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে কক্সবাজার শহরের সুগন্ধা পয়েন্টে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি ও যুবলীগ নেতা মোনাফ সিকদারকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
আহত মোনাফ সিকদার শহরের পেশকারপাড়া এলাকার শাহাব উদ্দিন সিকদারের ছেলে এবং শহর যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী।