বাংলাদেশে টানা ১৩ দিন ধরে দৈনিক শনাক্তের হার সরকারি হিসেবে ৫ শতাংশের নিচে; আর ছয় দিন ধরে এই হার ৪ শতাংশের নিচে রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধারা অব্যাহত থাকলে দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে বলে আশা করা যায়। তবে সংক্রমণ যেন আর বাড়তে না পারে, সেজন্য স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা। গতকাল রোববার পর্যন্ত দেশে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ১৩৯ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৮ হাজার ১২৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। খবর বিডিনিউজের।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সমন্বিত নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিলের পর গত ১৪ জানুয়ারি প্রথমবারের মত দৈনিক নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত রোগীর হার ৫ শতাংশের নিচে নামে। সেদিন সংক্রমণের হার ছিল ৪ দশমিক ৯০ শতাংশ। মাঝে কয়েক দিন শনাক্তের হার ছিল ৫ শতাংশের বেশি থাকলেও ১৯ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি-টানা ১৩ দিন শনাক্তের হার রয়েছে চার শতাংশের ঘরে। এর মধ্যে ২৬ জানুয়ারি শনাক্তের হার ৪ শতাংশের নিচে নেমে আসে এবং সেই ধারা অব্যাহত থাকে। শনি ও রবিবার নমুনা পরীক্ষায় ৩ শতাংশ করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়, যা ৪ এপ্রিলের পর সবচেয়ে কম।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী পরপর দুই সপ্তাহ শনাক্তের হার ৫ শতাংশের নিচে থাকতে হবে। এরপর বলা যাবে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে আছে। পরিস্থিতি অনেকদিন ধরেই আমাদের নিয়ন্ত্রণে। তবে এটা ধরে রাখতে হবে। একটা সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
ডা. ফ্লোরা বলেন, একদিকে সংক্রমণের হার কমছে, অন্যদিকে দেশে টিকাও চলে এসেছে। এ সময় মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা কমে যেতে পারে, কিন্তু তা হলে চলবে না। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে আরও বেশি। এখানে কোনো ঢিলেমি করা যাবে না। আমরা যদি কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং, আইসোলেশন, স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি মানাতে পারি, তাহলে এটা আমরা আরও কন্ট্রোলে নিয়ে আসতে পারব। ভ্যাকসিন দেওয়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মানা গুরুত্বপূর্ণ।
করোনাভাইরাস মহামারী নিয়ন্ত্রণে সরকারকে পরামর্শক দিয়ে আসা কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির পিএইচডি ডিগ্রিধারী বিশেষজ্ঞ ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘সংক্রমণের হার নিম্নগামী, এটা আরও অন্তত এক সপ্তাহ পর্যবেক্ষণ করতে হবে। সেই সাথে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে, কারণ সংক্রমণ যে কোনো মুহূর্তে বেড়ে যেতে পারে। এখন আমাদের করনীয় আমাদের যত রোগী শনাক্ত হচ্ছে, তাদের আইসোলেশন করা। যাদেরই করোনাভাইরাসের লক্ষণ আছে, পরীক্ষা করে তা নিশ্চিত করা।