ধর্ষণ ও খুনের মতো ঘটনাগুলো বিরতি দিয়ে ঘটে চলেছে। পত্রিকার পাতা খুললেই এ সম্পর্কিত খবর চোখে পড়ে। বিভিন্ন সময় এ ধরনের ঘটনায় দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে সাধারণ মানুষের উদ্বেগ বাড়ে। অজানা আশংকায় গুমরে মরছে সচেতন সবাই।
মানুষের মাঝে বিদ্যমান মানবিক গুণাবলী লোপ পেয়ে হিংস্রতা যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। অপরাধীরা সর্বত্র বেপরোয়া। হেন অপরাধ নাই যা তারা করছে না। কখন কে এসব অপ্রীতিকর ঘটনার মুখোমুখি হয় বলা মুশকিল। অভিভাবকসহ সমাজ ও দেশের সাধারণ মানুষকে তটস্ত থাকতে হয় সর্বক্ষণ। নানা মহল থেকে প্রতিক্রিয়া হলেও পরিস্থিতির তেমন উন্নতি দেখা যায় না। বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতার কারণে ধর্ষণ ও খুনের সাথে জড়িত অপরাধীরা প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ায়। মূল্যবোধের বড়ই অভাব। মানুষের মাঝে নৈতিক চরিত্রের সংকট চলছে। সভ্য যুগে এমন নৃশংসতা কোনভাবেই মানানসই নয়। যে সব কারণে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটছে তার কারণ খুঁজে বের করতে হবে। অপরাধী যেমন অপরাধ করে পার পাওয়ার সুযোগ পাবে না তেমনি তার পাশাপাশি মানুষের নৈতিক চরিত্র গঠনের জন্যও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। পরিবার থেকেই মূল্যবোধের শিক্ষা শুরু করতে হবে। নৈতিক মনোবল বাড়ানোর পাশাপাশি অপরাধের কুফল সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। চরিত্রগঠন, মূল্যবোধের প্রচার, ধর্মীয় অনুশাসন অনুসরণ এবং সচেতনতা তৈরীর পাশাপাশি ধর্ষক ও খুনীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বিদ্যমান আইন ও বিধি বিধানকে সংস্কার করে ইতিমধ্যে ধর্ষণ ও খুনের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি ‘মৃত্যুদন্ড’ দেয়ার বিধান প্রণয়ন করা হয়েছে। আইনের বাস্তবায়নে দ্রুত শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। ন্যায় বিচার ও বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে পারলে ধর্ষক, খুনী,সন্ত্রাসী যেই হোক অপরাধ করার সাহস পাবে না। রাজনৈতিক দল এবং প্রভাবশালীদেরকে অপরাধে যুক্ত ব্যক্তিদের আশ্রয়, প্রশ্রয় দেয়া বন্ধ করতে হবে অপরাধীদের শেকড় উপড়ে ফেলতে পারলে সমাজে শান্তি ফিরে আসবে। সমাজে মানুষের বেঁচে থাকার প্রধানতম অবলম্বন তার নিরাপত্তা যার মাধ্যমে সে নিশ্চিন্তে বসবাস করতে পারবে। এখনই থামুক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনাগুলো। অপরাধীর কঠোর সাজা হোক। আমরা একটি সুখী, সুন্দর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ চাই। এজন্য অন্যসব অপরাধের পাশাপাশি ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার বিলুপ্তি ঘটাতে হবে। মানুষের শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। শাস্তি হোক সকল ধর্ষক ও খুনীর।