নাজিরহাট হানাদার মুক্ত দিবস আজ। ১৯৭১ সালের এ দিনে উত্তর চট্টগ্রামের অন্যতম রণাঙ্গন নাজিরহাট পাক হানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মুখ যুদ্ধ হয়। ঔ দিন ভোরে মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় টিকতে না পেরে পাক হানাদার বাহিনী পিছু হটে যায়। পাক বাহিনী চলে যাওয়ার পর শুরু হয় মুক্তিকামী ছাত্র জনতা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের আনন্দ উল্লাস। দিনভর ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে মুক্তিযোদ্ধা এবং ইস্টবেঙ্গল রেজিমেন্টের জওয়ানেরা চাঁদের গাড়িতে করে কামান এবং অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দেশের মানচিত্র অংকিত পতাকা নিয়ে আনন্দ উল্লাস করে নাজিরহাটে সমবেত হন। সেদিন চলছিল বিজয়ের উৎসব। গোপন সংবাদ পেয়ে পলাতক পাক হানাদার বাহিনী সন্ধ্যায় হাটহাজারীর অদুদিয়া মাদ্রাসার সামনে থেকে ৩/৪ টি বাসে করে নাজিরহাট আসে। তারা উল্লাসরত মুক্তিযোদ্ধা ও নিরীহ জনতার উপর অতর্কিত হামলা চালায়। শুরু হয় সম্মুখ যুদ্ধ। এ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা নায়েক তফাজ্জল হোসেন (বরিশাল), সিপাহী নুরুল হুদা (কুমিল্লা), সিপাহী অলি আহম্মদ(খুলনা), সিপাহী নুরুল ইসলাম (সন্দ্বীপ), সিপাহী মানিক মিয়া (চট্টগ্রাম), ফোরখ আহম্মদ (নাজিরহাট), হাসিনা খাতুন (নাজিরহাট), আবদুল মিয়া (নাজিরহাট), নুরুল আফছার (কুমিল্লা), মুক্তিযোদ্ধা মুজিবুল হক (ফরহাদাবাদ) ও অজ্ঞাত একজনসহ ১১ জন শহীদ হন। এরপর পাক হানাদার বাহিনী ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত নাজিরহাট, ফটিকছড়ি এবং হাটহাজারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অগ্নিসংযোগ, লুটতরাজ, নাজিরহাট হালদা সেতু ধ্বংস, হত্যাযজ্ঞসহ নারকীয় কর্মকান্ড চালায়। আজ নাজিরহাট হানাদার মুক্তি দিবস উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল সাড়ে ১০টায় নাজিরহাট বাসস্টেশন সংলগ্ন মুক্তিযোদ্ধাদের গণকবরে শ্রদ্ধা অর্পণ, মোনাজাত ও প্রার্থনা অনুষ্ঠান।