৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণের জন্য শিশুকে নির্দয়ভাবে খুন

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ৫ মে, ২০২৩ at ৬:১০ পূর্বাহ্ণ

নগরীর চান্দগাঁওয়ের পশ্চিম মোহরা এলাকায় মুক্তিপণের জন্য প্রতিবেশী যুবকের হাতে খুন হয়েছে মো. শফিউল ইসলাম রহিম (১১) নামে এক শিশু। হত্যাকাণ্ডের পাঁচ দিন পর গত বুধবার রাত ৩টার দিকে পার্শ্ববর্তী একটি নির্মাণাধীন বাড়ির রুমের মাটি খুঁড়ে তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রতিবেশী ওই যুবক ও তার বন্ধুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। খুনের শিকার শফিউল ইসলাম রহিম ওই এলাকার সেলিম উদ্দিনের ছেলে। সে পশ্চিম মোহরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন চান্দগাঁও থানার কাপ্তাই সড়কর চাঁন মিয়া ফকিরের বাড়ির মৃত আবুল কালামের ছেলে মো. আজম খান (৩২) ও পাঁচলাইশ থানার বিবিরহাট এলাকার মো. ইউসুফের ছেলে মুজিবুর দৌলা হৃদয় (২৮)। আজম খানকে নগরীর হালিশহর এলাকা থেকে এবং তার সহযোগী মুজিবুর দৌলা হৃদয়কে বলীরহাট থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চান্দগাঁও থানার ওসি খায়রুল ইসলাম আজাদীকে জানান, আজমের সঙ্গে সম্প্রতি তার স্ত্রীর বিচ্ছেদ হয়। এরপর আজম মারাত্মক আর্থিক সংকটে পড়ে। সেই সংকট কাটাতে বন্ধু হৃদয়কে নিয়ে সে শিশু রহিমকে অপহরণ করে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনা করে। কিন্তু মুক্তিপণ না পেয়ে রহিমকে নির্মাণাধীন ওই ভবনে নিয়ে কাঠের বাটাম দিয়ে মাথায় ও মুখে আঘাত করে হত্যা করে। এরপর লাশ গুম করার উদ্দেশে সেখানে একটি গর্ত করে মরদেহ ইট ও বালি চাপা দেয়।

ওসি খায়রুল বলেন, শিশুটি নিখোঁজ হওয়ার দিনই ইন্টারনেট ব্যবহার করে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি। রহিমের পিতা সেদিন থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, ২৯ এপ্রিল বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আজম শিশুটিকে ডেকে নিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ ৩ মে অভিযান চালিয়ে হালিশহর এলাকার পানির কল এলাকা থেকে আজম খানকে গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তার তথ্যের ভিত্তিতে রাত ৩টার দিকে নির্মাণাধীন ভবনে একটি গর্তের ভেতর থেকে শিশু রহিমের লাশ উদ্ধার করে। এরপর হালিশহরে হৃদয়ের অবস্থান শনাক্ত করে তাকেও গ্রেপ্তার করে চান্দগাঁও থানা পুলিশ।

ওসি বলেন, আজম খান আমাদের কাছে স্বীকার করেছে সে এক মাস আগে থেকে অপহরণের পরিকল্পনা করেছে। শুধু কী টাকার জন্য শিশুটিকে হত্যা করেছে নাকি অন্য কোনো মোটিভ আছে তা জানতে তদন্ত করা হচ্ছে। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি শিশু রহিমকে টাকার জন্য আজম খান অপহরণ করেছে। রহিমের শারীরিক গঠন ভাল ছিল। আজমকে শিশু রহিম চিনতে পেরেছে। আজম খানের সঙ্গে শিশুটির ধস্তাধস্তিও হয়। এক পর্যায়ে রহিমকে নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে গিয়ে গাছের টুকরো দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। গ্রেপ্তার দুজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ উন্মুক্ত করে দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা যুক্তরাষ্ট্রের
পরবর্তী নিবন্ধআজ চন্দ্রগ্রহণ, দেখা যাবে বাংলাদেশেও